পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আকাশপ্ৰদীপ৷ কিন্তু, ভুকুটিতে বুঝতে দেরি হয় না, আমি ছেলেমানুষ, আমি মেয়ে নই, আমি অন্য জাতের । তার বয়স আমার চেয়ে দুই-এক মাসের বড়োই হবে বা ছোটোই হবে । তা হােক, কিন্তু এ কথা মানি, আমরা ভিন্ন মসলায় তৈরি । মন-একান্তই চাইত, ওকে কিছু একটা দিয়ে সঁকো বানিয়ে নিতে । একদিন এই হতভাগা কোথা থেকে পেল কতকগুলো রঙিন পুঁথি ; ভাবিলে, চমক লাগিয়ে দেবে । হেসে উঠল। সে ; বলল, “এগুলো নিয়ে করব কী ।” ইতিহাসের উপেক্ষিত এই-সব ট্র্যাজেডি কোথাও দরদ পায় না, লজার ভারে বালকের সমস্ত দিনরাত্রির দেয় মাথা হেঁট ক’রে । কোন বিচারক বিচার করবে যে, মূল্য আছে সেই পুঁথিগুলোর । তবু এরই মধ্যে দেখা গেল, শস্ত খাজনা চলে এমন দাবিও আছে। ওই উচ্চাসনারসেখানে ওর পিড়ে পাতা মাটির কাছে । ও ভালোবাসে বঁকাচা আমি খেতে শুল্পেনা শাক আর লঙ্কা দিয়ে মিশিয়ে । প্ৰসাদ লাভের একটি ছোট্ট দরজা খোলা আছে আমার মতো ছেলে আর ছেলেমানুষের জন্যেও । গাছে চড়তে ছিল কড়া নিষেধ হাওয়া দিলেই ছুটে যৌতুম বাগানে, দৈবে যদি পাওয়া যেত একটিমাত্র ফল একটুখানি দুর্লভতর আড়াল থেকে, দেখতুম, সে কী শ্যামল, কী নিটােল, কী সুন্দর, প্ৰকৃতির সে কী আশ্চর্য দান । যে লোভী চিরে চিরে ওকে খায় । সে দেখতে পায় নি। ওর অপরাপ রাপ । একদিন শিলাবৃষ্টির মধ্যে আম কুড়িয়ে এনেছিলুম ; ও বলল, “কে বলেছে তোমাকে আনতে ।” আমি বললুম, “কেউ না ।” কুড়িসুদ্ধ মাটিতে ফেলে চলে গেলুম। ܣܛܪ