পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৩২

S.br রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী ছেলে এসেছিল তোরই এই কুয়োতলায় । মনে পড়ে তো ? প্রকৃতি । হা, মনে পড়ে। মা । কেন গেলি নে রাজার ঘরে । রূপ দেখে সে তো ভুলেছিল । প্রকৃতি । ভুলেছিল না তো কী । ভুলেই ছিল যে, আমি মানুষ । পশু মারতে বেরিয়েছিল ; চােখে ঠেকে পশুকেই, তাকেই চায় বাধতে সোনার শিকলে । মা । তবু তো শিকার বলেও ঐ মুখ লক্ষ্য করেছিল। সে । আর, ভিক্ষু, সে কি নারী বলে চিনেছে CONCS প্রকৃতি । বুঝবে না তুমি বুঝবে না। আমি বুঝেছি, এতদিন পরে সেই আমাকে প্রথম চিনেছে। সে বড়ো আশ্চর্য । 히F ওগো, তোমার চক্ষু দিয়ে মেলে সত্যদৃষ্টি আমার সত্যরূপ প্ৰথম করেছ সৃষ্টি । তোমায় প্ৰণাম, তোমায় প্ৰণাম, GNGAN SAN VK || আমি তরুণ অরুণলেখা, আমি বিমল জ্যোতির রেখা, আমি নবীন শ্যামল মেঘে। CNN প্ৰণাম শতবার । তাকে চাই, মা । নিতান্তই চাই। তার সামনে সাজিয়ে ধরতে চাই আমার এ জন্মের পূজার ডালি । অশুচি হবে না। তাতে র্তার চরণ । দেখুক সবাই আমার স্পর্ধা । গৌরব করে বলতে চাই, আমি তোমার সেবিকা, নইলে সংসারে সবারই পায়ের কাছে চিরদিন বাধা পড়ে থাকতে হবে দাসী হয়ে । মা । মিছে। রাগ করিস কেন, বাছা । দাসীজন্মই যে তোর । বিধাতার লিখন খণ্ডাবে কে । প্রকৃতি । ছিছি, মা, আবার তোকে বলছি, ভুলিস নে, মিথ্যে নিন্দে রটাস নে নিজের- পাপ সে পাপ ! রাজার বংশে। কত দাসী জন্মায় ঘরে ঘরে, আমি দাসী নই। ব্ৰাহ্মণের ঘরে কত চণ্ডাল জন্মায় দেশে দেশে, আমি নই। চণ্ডাল । মা ! তোর সঙ্গে কথা কইতে পারি। এমন কথা আমি জানি নে । তা ভালো, আমি নিজে যাব তার কাছে। পায়ে ধরে বলব, তুমি অন্ন নিয়ে থােক সব ঘর থেকেই, আমার ঘরে কেবল এক গণ্ডুষ জল নিতে এসো । প্রকৃতি । ናileና না না, ডাকব না, ডাকব না। অমন করে বাইরে থেকে । পারি। যদি অন্তরে তার ডাক পাঠাবা, আনিব ডেকে । দেবার ব্যথা বাজে আমার বুকের তলে, নেবার মানুষ জানি নে তো কোথায় চলে, এই দেওয়া-নেওয়ার মিলন আমার ঘটাবে কে । মিলবে না কি মোর বেদনা তার বেদনাতে গঙ্গাধারা মিশবে না কি কালো যমুনাতে । আপনি কী সুর উঠল। বেজে আপনা হতে এসেছে যে, গেল। যখন আশার বচন গেছে রেখে ॥