পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী 92ܢ ܓ সদাগর । কেন, মাঝে মাঝে যখন শিকারে যাও তখন বুনোজন্তু ছাড়া আর-কোনো উৎপাত তো থাকে না । "রাজপুত্র। বুনোজন্তু বলে কাকে । আমার তো সন্দেহ হয়, রাজশিকারী বাঘগুলোকে আফিম খাইয়ে রাখে । ওরা যেন অহিংস্রনীতির দীক্ষা নিয়েছে। এ পর্যন্ত একটাকেও তো ভদ্ররকম লাফ মারতে দেখলুম না । সদাগর । যাই বল, বাঘের এই আচরণকে আমি তো অসৌজন্য বলে মনে করি নে। শিকারে যাবার ধুমধামটা সম্পূর্ণই থাকে, কেবল বুক দূরদুর করে না । রাজপুত্র। সেদিন ভালুকটাকে বহুদূর থেকে তীর বিধেছিলুম, তা নিয়ে চার দিক থেকে ধন্য-ধন্য পড়ে গেল ; বললে, রাজপুত্রের লক্ষ্যভেদের কী নৈপুণ্য ! তার পরে কানাকানিতে শুনলুম, একটা মরা ভালুকের চামড়ার মধ্যে খড়বিচিলি ভরে দিয়ে সাজিয়ে রেখেছিল। এত বড়ো পরিহাস সহ্য করতে পারি নি । শিকারীকে কারাদণ্ডের আদেশ করে দিয়েছি । সদাগর। তার উপকার করেছ। তার সে কারাগারটা রানীমার অন্দরমহলের সংলগ্ন, সে দিব্যি সুখে আছে । এই তো সেদিন, তার জন্য তিন মণ ঘি আর তেত্ৰিশটা পাঠা পাঠিয়ে দিয়েছি আমাদের গদি থেকে । রাজপুত্র। এর অর্থ কী । সদাগর। সে ভালুকটার সৃষ্টি যে রানীমারই আদেশে । রাজপুত্র। ঐ তো । আমরা পড়েছি অসত্যের বেড়াজালে । নিরাপদের খাচায় থেকে থেকে আমাদের ডানা আড়ষ্ট হয়ে গেল । আগাগোড়া সবই অভিনয় । আমাকে যুবরাজী সঙ বানিয়েছে। আমার এই রাজসাজ ছিড়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে। ঐ-যে ফসলখেতে ওদের চাষ করতে দেখি, আর ভাবি, পূর্বপুরুষের পুণ্যে ওরা জন্মেছে চাষী হয়ে । সদাগর। আর, ওরা তোমার কথা কী ভাবে সে ওদের জিজ্ঞাসা করে দেখো দেখি । রাজপুত্র, তুমি কী সব বাজে কথা বলছি- মনের আসল কথাটা লুকিয়েছ। ওগো পত্ৰলেখা, আমাদের রাজপুত্রের গোপন কথাটি হয়তো তুমিই আন্দাজ করতে পারবে, একবার সুধিয়ে দেখো-না । পত্ৰলেখার প্রবেশ 5R পত্ৰলেখা । গোপন কথাটি রবে না গোপনে, উঠিল ফুটিয়া নীরব নয়নেরাজপুত্ৰ । না না না, রবে না গোপনে । পত্ৰলেখা । বিভল হাসিতে বাজিল বঁাশিতে, স্মৃফুরিল অধরে নিভৃত স্বপনে— রাজপুত্ৰ । না না না, রবে না গোপনে । পত্ৰলেখা । মধুপ গুঞ্জরিল, মধুর বেদনায় আলোক-পিয়াসি অশোক মুঞ্জরিল । হৃদয় শতদল করিছে টলমল অরুণ প্ৰভাতে করুণ তপ্যনেরাজপুত্ৰ । नों कां नीं, व नी (ों°न् ।