পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

se 8の> এবারেও শান্তি শুরু হল। অমিয়া আমার পায়ের কাছে বসল। হরিমতি তাকে কুষ্ঠিত মৃদুকণ্ঠে কী একটা বললে, সে ঈষৎ মুখ বাকিয়ে জবাবই করলে না । হরিমতি আস্তে আস্তে উঠে চলে গেল। তখন অমিয়া পড়ল আমার পা নিয়ে। বিপদ ঘটলে আমার । কেমন করে বলি দরকার নেই, আমার ভালোই। লাগে না”। এতদিন পর্যন্ত নিজের পায়ের সম্বন্ধে যে স্বায়ত্তশাসন সম্পূর্ণ বজায় রেখেছিলেম, সে আর dौक ना बृदि ! ধড়ফড় করে উঠে বসে বললেম, “অমিয়া, দে তোর লেখাটা, ওটা তৰ্জমা করে ফেলি।” “এখন থাক-না, দাদা । তোমার পা কামড়াচ্ছে, একটু টিপে দিই না ?” “না, পা কেন কামড়াবে । হা হা, একটু কামড়াচ্ছে বটে। তা, দেখ আমি, তোর এই ভাইফোটার আইডিয়াটা ভারি চমৎকার। কী করে তোর মাথায় এল, তাই ভাবি । ঐ যে লিখেছিস বর্তমান যুগে ভাইয়ের ললাট অতি বিরাট, সমস্ত বাংলাদেশে বিস্তৃত, কোনো একটিমাত্র ঘরে তার স্থান হয় নাab 3K-gkb. 309 Set I C”, valf felCrt Grifei : With the advent of the presentage, Brother's brow, waiting for its auspicious anointment from the sisters of Bengal, has grown immensely beyond the narrowness of domestic privacy, beyond the boundaries of the individual home i gKG VAŘÍDIT NOOIT VOIRÍTETT পেলে কলম পাগল হয়ে ছোটে ।” অমিয়ার পা-টেপার ঝোক একেবারে থেমে গেল। মাথাটা ধরে ছিল, লিখতে একটুও গা লাগছিল না- তবু অ্যাম্পিরিনের বড়ি গিলে বসে গেলেম । পরদিন দুপুরবেলায় আমার জলধর যখন দিবানিদ্রায় রত, দেউড়িতে দরোয়ানজি তুলসীদাসের রামায়ণ পড়ছে, গলির মোড় থেকে ভালুকনাচওয়ালার ডুগডুগি শোনা যাচ্ছে, বিশ্রামহারা অমিয়া যখন যুগলক্ষ্মীর কর্তব্যপালনে বেরিয়েছে, এমন সময় দরজার বাইরে নির্জন বারান্দায় একটি ভীরু ছায়া দেখা দিলে । শেষকালে দ্বিধা করতে করতে কখন হঠাৎ এক সময়ে সেই মেয়েটি একটা হাতপাখা নিয়ে আমার মাথার কাছে বসে বাতাস করতে লাগল। বোঝা গেল, কাল অমিয়ার মুখের ভাবখানা দেখে পায়ে হাত দিতে আজ আর সাহস হল না । এতক্ষণে নববঙ্গের ভাইফোটা-প্রচারের মীটিং বসেছে । অমিয়া ব্যস্ত থাকবে । তাই ভাবছিলুম ভরসা করে বলে ফেলি, পায়ে বড়ো ব্যথা করছে। ভাগ্যে বলি নি - মিথ্যে কথাটা মনের মধ্যে যখন ইতস্তত করছে ঠিক সেই সময়ে, অনাথাসদনের ত্রৈমাসিক রিপোর্ট হাতে, অমিয়ার প্রবেশ । হরিমতির পাখা-দোলনের মধ্যে হঠাৎ চমক লাগল ; তার হৃৎপিণ্ডের চাঞ্চল্য ও মুখশ্ৰীর বিবর্ণিতা আন্দাজ করা শক্ত হল না। অনাথাসদনের এই সেক্রেটারির ভয়ে তার পাখার গতি খুব মৃদু হয়ে এল । অমিয়া বিছানার এক ধারে বসে খুব শক্ত সুরে বললে, “দেখো দাদা, আমাদের দেশে ঘরে ঘরে কত আশ্রয়হারা মেয়ে বড়ো বড়ো পরিবারে প্রতিপালিত হয়ে দিন কাটাচ্ছে, অথচ সে-সব ধনী ঘরে তাদের প্রয়োজন একটুও জরুরি নয় । গরিব মেয়ে, যারা খেটে খেতে বাধ্য, এরা তাদেরই অন্ন-অর্জনে বাধা দেয় মাত্র । এরা যদি সাধারণের কাজে লাগে। যেমন আমাদের অন্যথাসদনের কাজ- তা হলে--” বুঝলেম, আমাকে উপলক্ষ করে হরিমতির উপরে বক্তৃতার এই শিলাবৃষ্টি । আমি বললেম, “অর্থাৎ, তুমি চলবে নিজের শখ-অনুসারে, আর আশ্রয়হীনারা চলবে তোমার হুকুম-অনুসারে । তুমি হবে অনাথাসদনের সেক্রেটারি, আর ওরা হবে অন্যথাসদনের সেবাকারিণী । তার চেয়ে নিজেই লাগো সেবার কাজে ; বুঝতে পারবে, সে কাজ তোমার অসাধ্য। অনাথাদের অতিষ্ঠ করা সহজ, সেবা করা সহজ নয় । দাবি নিজের উপরে করো, অন্যের উপরে কোরো না ।” আমার ক্ষত্রস্বভাব, মাঝে মাঝে ভুলে যাই ‘অক্রোধেন জয়েৎ ক্ৰোধম । ফল হল এই যে অমিয়া পিসিমারই সদস্যদের মধ্য থেকে আর-একটি মেয়েকে এনে হাজির করলে- তার নাম প্ৰসন্ন । তাকে আমার পায়ের কাছে বসিয়ে দিয়ে বললে, “দাদার পায়ে ব্যথা করে, তুমি পা টিপে দাও।” সে যথোচিত অধ্যবসায়ের সঙ্গে আমার পা টিপতে লাগল। এই হতভাগ্য দাদা এখন কোন মুখে বলে যে,