পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্ৰহাসিনী কী নাম দেব তার, একরকমের সেও অভিসার । কিন্তু সেটা কাব্যকলায় হয় নি। বরণীয়, সেই কারণেই কণ্ঠে আমার সমাদরণীয় ।” নাতনি হেসে বলে, “কাব্যকথার ছলে পকেট থেকে বেরোয় তোমার ভালো কথার থলি, ওটাই আমি অভ্যাসদোষ বলি ।” আমি বললেম, “যদি কোনোক্রমে জন্মগ্রহের ভ্ৰমে ভালো যেটা সেটাই আমার ভালো লাগে দৈবে, হয়তো সেটা একালেরও সরস্বতীর সইবে ।” আজকে-দিনের এই ব্যাপারটা কবিতায় লিখবে কি ৷” আমি বললেম, “নিশ্চয় লিখবই, আরম্ভ তার হয়েই গেছে সত্য করেই কই । বাকিয়ো না গো পুষ্পধনুক-ভুরু, শোনো তবে, এইমত তার শুরু ||- ‘শুক্ল একাদশীর রাতে কলিকাতার ছাতে জ্যোৎস্না যেন পারিজাতের পাপড়ি দিয়ে ছোওয়া, গলায় আমার কুন্দমালা গোলাপজলে ধোওয়া”— এইটুকু যেই লিখেছি সেই হঠাৎ মনে প’ল, এটা নেহাত অসাময়িক হল । হাল ফ্যাশানের বাণীর সঙ্গে নতুন হল রাফা, একাদশীর চন্দ্র দেবেন কর্মেতে ইস্তফা । শূন্যসভায় যত খুশি করুন বাবুয়ানা, সত্য হতে চান। যদি তো বাহার-দেওয়া মানা । তা ছাড়া ওই পারিজাতের ন্যাকামিও ত্যাজ্য, মধুর করে বানিয়ে বলা নয়। কিছুতেই ন্যায্য । বদল করে হল শেষে নিম্নরকম ভাষা ‘আকাশ সেদিন ধুলোয় ধোয়ায় নিরেট করে ঠাসা, রাতটা যেন কুলিমাগি কয়লাখনি থেকে এল কালো রঙের উপর কালির প্রলেপ মেখে ।” তার পরোকার বর্ণনা এই- ‘তামাক-সাজার ধান্দে জগার। থ্যাবড়া আঙুলগুলো দোক্তাপাতার গন্ধে দিনরাত্রি ল্যাপা । তাই সে জগা খ্যাপা যে মালাটাই গাথে তাতে ছাপিয়ে ফুলের বাস তামাকেরই গন্ধের হয় উৎকট প্ৰকাশ ।” D8