পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্যের পথে 8 SAVO একান্ত উপলব্ধির দ্বারা । মন যাকে বলে “এই তো নিশ্চিত দেখলুম, অত্যন্ত বোধ করলুম), জগতের হাজার অচিহ্নিতের মধ্যে যার উপর সে আপনি স্বাক্ষরের সীলমোহর দিয়ে দেয়, যাকে আপনি চিরস্বীকৃত সংসারের মধ্যে ভুক্ত করে নেয়- সে অসুন্দর হলেও মনোরম ; সে রসস্বরূপের সনন্দ নিয়ে এসেছে । সৌন্দৰ্য্যপ্রকাশই সাহিত্যের বা আর্টের মুখ্য লক্ষ্য নয়। এ সম্বন্ধে আমাদের দেশে অলংকারশাস্ত্রে চরম কথা বলা হয়েছে ; বাক্যং রসাত্মকং কাব্যম। মানুষ নানারকম আস্বাদনেই আপনাকে উপলব্ধি করতে চেয়েছে বাধাহীন লীলার ক্ষেত্রে । সেই বৃহৎ বিচিত্ৰ লীলাজগতের সৃষ্টি সাহিত্য । কিন্তু, এর মধ্যে মূল্যভেদের কথা আছে, কেননা এ তো বিজ্ঞান নয় । সকল উপলব্ধিরই নির্বিচারে এক মূল্য নয়। আনন্দ সম্ভোগে মানুষের নির্বাচনের কর্তব্য তো আছে । মনস্তত্ত্বের কৌতুহল চরিতার্থ করা বৈজ্ঞানিক বুদ্ধির কাজ । সেই বুদ্ধিতে মাতলামির অসংলগ্ন এলোমেলো অসংযম এবং অপ্ৰমত্ত আনন্দের গভীরতা প্ৰায় সমান আসন পায় । কিন্তু, আনন্দ-সম্ভোগে স্বভাবতই মানুষের বাছবিচার আছে। কখনো কখনো অতিতৃপ্তির অস্বাস্থ্য ঘটলে মানুষ এই সহজ কথাটা ভুলব-ভুলব করে । তখন সে বিরক্ত হয়ে স্পর্ধার সঙ্গে কুপথ্য দিয়ে মুখ বদলাতে চায়। কুপথ্যের ঝাজ বেশি, তাই মুখ যখন মরে তখন তাকেই মনে হয় ভোজের চরম আয়োজন । কিন্তু, মন একদা সুস্থ হয়, মানুষের চিরকালের স্বভাব ফিরে আসে, আবার আসে। সহজ সম্ভোগের দিন, তখনকার সাহিত্য ক্ষণিক আধুনিকতার ভঙ্গিমা ত্যাগ করে চিরকালীন সাহিত্যের সঙ্গে সরলভাবে भि6ा शाश । শান্তিনিকেতন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ৮ আশ্বিন ১৩৪৩