পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্যের পথে GYCA Where Beauty cannot keep her lustrous eyes, Or new Love pine at them beyond to-morrow. একে ইনটেন্সিটি বলা চলে না, এ রুগণ চিত্তের অত্যুক্তি, এতে অস্বাস্থ্যের দুর্বলতাই প্ৰকাশ পাচ্ছেতৎসত্ত্বেও মোটের উপর সমস্তটা নিয়ে এই কবিতাটি রূপবান কবিতা । যে ভাবটিকে দিয়ে কবি কাব্য সৃষ্টি করলেন সেটি কবিতাকে আকার দেবার একটা উপাদান । দেবালয় থেকে বাহির হয়ে গোধূলির অন্ধকারের ভিতর দিয়ে সুন্দরী চলে গেল, এই একটি তথ্যকে কবি ছন্দে বাধলেন যব গোধুলিসময় বেলি ধনী মন্দিরবাহির ভেলি, নবজলধরে বিজুরিদ্রোহা দ্বন্দ্ব পসারি গেলি । তিন লাইনে আমরা একটি সম্পূর্ণ রূপ দেখলুম— সামান্য একটি ঘটনা কাব্যে অসামানা হয়ে রয়ে গেল। আর-একজন কবি দারিদ্র্যদুঃখ বৰ্ণনা করছেন । বিষয়হিসাবে স্বভাবতই মনের উপর তার প্রভাব আছে । দরিদ্র ঘরের মেয়ে, অন্নের অভাবে আমনি খেয়ে তাকে পেট ভরাতে হয়- তাও যে পাত্রে করে খাবে এমন সম্বল নেই, মেজেতে গর্ত করে আমানি ঢেলে খায়- দরিদ্র-নারায়ণকে আর্তস্বরে দোহাই পড়বার মতো ব্যাপার । কবি লিখলেন দুঃখ করো অবধান, দুঃখ করো অবধান, আমানি খাবার গর্ত দেখো বিদ্যমান । কথাটা রিপোর্ট করা হল মাত্র, তা রূপ ধরল না । কিন্তু, সাহিত্যে ধনী বা দরিদ্রকে বিষয় করা দ্বারায় তার উৎকর্ষ ঘটে না ; ভাব-ভাষা ভঙ্গি সমস্তটা জড়িয়ে একটি মূর্তি সৃষ্টি হল কি না। এইটেই লক্ষ্য করবার যোগ্য । ‘তুমি খাও ভীড়ে জল, আমি খাই ঘাট’- দারিদ্র্যদুঃখের বিষয়-হিসাবে এর শোচনীয়তা অতি নিবিড়, কিন্তু তবু কাব্য-হিসাবে এতে অনেকখানি বাকি রইল । বঙ্কিমের উপন্যাসে চন্দ্ৰশেখরের অসামান্য পাণ্ডিত্য ; সেইটি অপৰ্যাপ্তভাবে প্ৰমাণ করবার জন্যে বঙ্কিম তার মুখে ষড়দর্শনের আস্ত আস্ত তর্ক বসিয়ে দিতে পারতেন । কিন্তু, পাঠক বলত, আমি পাণ্ডিত্যের নিশ্চিত প্ৰমাণ চাই নে, আমি চন্দ্ৰশেখরের সমগ্ৰ ব্যক্তিরূপটি স্পষ্ট করে দেখতে চাই । সেই রূপটি প্রকাশ পেয়ে ওঠে ভাষায় ভঙ্গিতে আভাসে, ঘটনাবলীর নিপুণ নির্বাচনে, বলা এবং না-বলার অপরাপ ছন্দে । সেইখানেই বঙ্কিম হলেন কারিগর, সেইখানে চন্দ্ৰশেখর-চরিত্রের বিষয়গত উপাদান নিয়ে রূপহস্ৰষ্টার ইন্দ্ৰজাল আপনি সৃষ্টির কাজ করে । আনন্দমঠে সত্যানন্দ ভবানন্দ প্রভৃতি সন্ন্যাসীরা সাহিত্যে দেশাত্মবোধের নবযুগ অবতারণ করেছেন কি না তা নিয়ে সাহিত্যের তরফে আমরা প্রশ্ন করব না ; আমাদের প্রশ্ন এই যে, তাদের নিয়ে সাহিত্যে নিঃসংশয় সুপ্ৰত্যক্ষ কোনো একটি চারিত্ররাপ জাগ্রত করা হল কি না । পুর্বযুগের সাহিত্যেই হােক, নবযুগের সাহিত্যেই হােক, চিরকালের প্রশ্নটি হচ্ছে এই যে : হে গুণী, কোন অপূর্ব রূপটি তুমি সকল কালের জন্যে সৃষ্টি করলে । RMN voet