পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Գ Օ8 রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী ‘বাসবদল কবিতার একটি পূর্ববতী পাঠে পাণ্ডুলিপিতে সূচনাংশ নিম্ন মুদ্রিত আকারে পাওয়া REN— এল এবার জিনিস প্যাকের দিন । বালিগঞ্জে বাসা ছেডে যাব ব্যারাকপুরে । অবিনাশের আনুকূল্য এই দশাতেই জোটে চাইতে না চাইতেই, কাজ পেলে সে ভাগ্য বলেই মানে, খাটে মুটের মতো । আর সবারে বোঝা তো নয়। সহজ ব্যাপার, কেবল জানি এই অবিনাশ নিতান্ত নিশ্চিত সময় অসময়ে } বিমুখী বান্ধবা যান্তি শুনি নাকি ধর্ম কেবল থাকে আর এই অবিনাশ ! লাগল ক’ষে আস্তিন গুটিয়ে । ওডিকলন মুড়ে নিল পুরোনো এক আনন্দবাজারে ইত্যাদি । তৎপূর্বের অন্য একটি পাণ্ডুলিপিতে ‘বাসবদল’ (প ১৭৩) ও পরিচয় (পৃ ১৮০) এই উভয় কবিতার গদ্যছন্দো-লিখিত একটি অবিচ্ছিন্ন আদিপাঠ পাওয়া গিয়াছে ; অপ্রকাশিতপূর্ব এই রচনাটির নাটকীয় সুসম্পূর্ণত কবিতা দুইটির রসগ্রহণে পাঠকদের সবিশেষ সাহায্য করিবে: বলিয়া মনে হয়-- নমস্কার কবি । চিনতুম না তোমাকে, চেয়েছিলুম চিনতে, চেনা হয়ে গেছে, আর বেশি সইত না, দাড়ি পড়েছে ঠিক জায়গায় { বাঙালীর মেয়ে, অত্যন্ত করে জানি ঘরের লোকদের । লোভ ছিল অজানা জগতের পরিচয়ে । বয়স ছিল কাচা, সদ্য বেরিয়েছি। কলেজের মধ্যপথ থেকে ; আমার বিশ্ববৃত্তান্তে সব চেয়ে অজানা রহস্য কবি ! তখনো চোখে দেখি নি, আনিলবাবু, তোমাকে ; পড়েছি তোমার লেখা, ছবি এসেছে মনে, স্বপ্নের ঘোড়ায় চড়ে তুমি খুঁজতে বেরিয়েছ তোমার মানসীকে ; রূপকথার রাজপুত্ত্বর তুমিজগতে একটিমাত্র আছে রাজকন্যা, বিদেশী সমুদ্রের ওপারে, সে আছে তোমারই জন্যে } তখন আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুল বাধতে বাধতে এমন কথা যদি মনে করে থাকি যেন আমিই সেই রাজকন্যা। তবে হেসে না । দেখা হবার আগেই ছুইয়েছিলে রুপোর কাঠি, জাগিয়েছিলে সুপ্ত প্ৰাণকে ঐ বয়সে অনেক মেয়ে মনে করেছিল। ঐ একই কথা । তারা চিঠি লিখেছিল, ঠিকানা দেয় নি । খেয়াল, মাঝ বসন্তের খেয়াল : ওরই আড়ালে কতদিন আবছা হয়ে গেছে। দুপুরবেলাকার পরীক্ষার পড়া, বুকের মধ্যে হঠাৎ উছলে উঠেছে একটা যৌবনের ঢেউ । একেই বলে রোম্যানস, নবীন বয়সে আপনা-ভোলানোর শিল্পকলা । মনের দেহলিতে একেছি আলপনা, কার পা ফেলবার পথে ; আরো কিছুদিন যেত, বয়েস পেরিয়ে যেত বিশের কোঠা, গোটকতক মর্ডান নভেল পড়া হত শেষ, চোখের ঘোর যেতে কেটে, হাসতুমি নিজের কচিমেয়েপনায় । তার দৃষ্টান্ত দেখেছি কত ।