পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SV রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী আমাদের পিতামহেরা আমাদের সমস্ত সম্বন্ধকেই একটি চিরন্তন সত্যের সঙ্গে সম্বন্ধযুক্ত করে দেখতে চেষ্টা করেছেন । এই অনুশীলনায় তাদের সাহসের অন্ত ছিল না ; যে-কোনো অভিব্যক্তি কলায় সংগীতে সাহিত্যে উদঘাটিত হয়েছে তাকে অনন্ততত্ত্বের পটভূমিকার উপর রেখে দেখতে পারলেই সত্যকে পাওয়া যায়- এই কথাটি গ্রহণ করা আমাদের পক্ষে কঠিন নয় । মানবীয় সত্যকে তিনভাগে ভাগ করে দেখা যেতে পারে সেই তিন বিভাগের শাশ্বত ভিত্তি সন্ধান করতে গেলেই উপনিষদের বাণীকে আশ্রয় করা ছাড়া আমাদের পক্ষে আর কোনো উপায় নেই । --বঙ্গবাণী, বৈশাখ ১৩৩১, পৃ. ৩০৩-০৫ রচনাবলী পৃ. ৪৩৪, প্ৰথম অনুচ্ছেদের শেষাংশ এই শেষোক্ত কথাটি আজ বিশেষভাবে আলোচ্য ! যিনি বলেন, আটের পরিচয় মানবের সংসারযাত্রার সঙ্গে একান্তভাবে সংগীত, অর্থাৎ “আমি আছি। এই ভাবের সূত্রটিই তার প্রধান অবলম্বন- তার এ কথাটি কি গ্রহণ করা চলে ; প্রাত্যহিক প্ৰাণধারণ-ব্যাপারের সঙ্গে সংগত করে দেখলেই কি তাকে সত্যরূপে দেখা হয় । —বঙ্গবাণী, বৈশাখ ১৩৩১, পৃ. ৩০৫ রচনাবলী পৃ. ৪৩৪, দ্বিতীয় অনুচ্ছেদের সূচনাংশ প্রাত্যহিক প্ৰাণধারণের নানা ব্যাপারের সঙ্গে যে আট মেলে না- এ কথা বলা চলে না ; পূর্বেই বলেছি, সত্যের তিন ভাগের মধ্যে আদান-প্রদানের ঐক্যপথ আছে , অর্থাৎ, তাদের মিলের মধ্যে সত্য আছে ; তেমনি আবার তাদের বিভাগের মধ্যেও সত্য আছে ; আমাদের জ্ঞান এক দিকে আমাদের প্রাণধারণ-ক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত । টিকে থাকবার জন্যই আমাদের অনেক কিছু জানা চাই । কিন্তু, তাই বলে এ কথা বলতে পারি। নে যে, যে-সকল জানা আমাদের টিকে থাকার পক্ষে একান্ত উপযোগী নয়। সেই সকল জানা নিকৃষ্ট । বস্তুত -বঙ্গবাণী, বৈশাখ ১৩৩১, °j- \9o q-oV» রচনাবলী পৃ. ৪৩৪, দ্বিতীয় অনুচ্ছেদের পরে স্বতন্ত্র অনুচ্ছেদ ব্ৰহ্মকে যে অনন্তস্বরূপ বলা হয়েছে মানুষের মধ্যে তারও পরিচয় আছে । এই পরিচয়ের দ্বারা মানুষ আপনার প্রয়োজনের গণ্ডি উত্তীর্ণ হয় } —বঙ্গবাণী, বৈশাখ ১৩৩১, পৃ. ৩০৬ রচনাবলী পৃ. ৪৩৪, তৃতীয় অনুচ্ছেদে দ্বিতীয় বাক্যের পর এমন-কি, যেমন করে হােক আমি নিজে টিকিব’, ‘অন্যের যা হয় হােক'- এ ইচ্ছাটা থাকে or { -বঙ্গবাণী, বৈশাখ ১৩৩১, পৃ. ৩০৬ রচনাবলী পৃ ৪৩৪, তৃতীয় অনুচ্ছেদের শেষাংশ পৃথিবীতে যে-মানুষ বলেছে ‘আপনি বঁাচলে বাপের নাম, সেই কৃপণ দীর্ঘজীবী হতে পারে, ধনী হতে পারে, কৃচ্ছসাধনে আশ্চর্য শক্তি দেখাতে পারে- কিন্তু সে কিছুই সৃষ্টি করতে পারে না ! ভূমা আমাদের ঐক্যবোধের দ্বারা, প্রেমের দ্বারা, যে-সত্যের সমৃদ্ধিকে প্রভূত ও সমুজ্বল করে তোলে সেই সত্যু-ক্ষেত্রেই আটের ফসল ফলে —বঙ্গবাণী, বৈশাখ ১৩৩১ পর ৩০৬