পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচয় Գ Տ Գ রচনাবলী পৃ. ৪৩৪, শেষ অনুচ্ছেদের শেষাংশ আপনাদের মধ্যে কোনো কোনো পরিহাসরসিকোব মুখে ঈষৎ হাসিব চিহ্ন দেখছি।-- তবু উপনিষদের বাণী আমি এড়াতে পারলেম না । উপায় যে নেই । বহু শতাব্দীর এই-সব মহামন্ত্র, ভারতবর্ষের সমস্ত ভাব ও সাধনার বীজমন্ত্র, আজও যে এরা আমার প্রাণের আশ্রয় ; সেই উপনিষদ ব্ৰহ্মের আর-একটি স্বরূপের উল্লেখ করে বলেছেন- অনন্তম | এইখানেই আছে প্ৰকাশিতত্ত্ব । —বঙ্গবাণী, বৈশাখ ১৩৩১, পৃ. ৩০৭ রচনাবলী পৃ. ৪৩৫, দ্বিতীয় অনুচ্ছেদেব শেষাংশ এই জগতে আওরঙজেব একদা সুদীর্ঘকাল প্রবল প্ৰতাপে রাজত্ব ক'রে ভারতকে কম্পান্বিত ক’রে দিয়ে গেছে ; কিন্তু তাকে কি কেউ গ্রহণ করেছে । তা হলে পুঁথির কালো অক্ষরের কীট-দংষ্ট্রর নিত্যদংশনের মধ্যে ছাড়া আর কোথায় সে আছে ? কিন্তু তার যে ভাই দারাকে অকালে বধ করে নিজের সিংহাসনের সোপানকে সে রক্তকলঙ্কিত করেছে তাকে যে আমরা আমার বলে আমাদের অশ্রুসিক্ত হৃদয়ের মধ্যে গ্ৰহণ করেছি । সেই দারার জীবনটিই কি কাব্য নয়, সংগীত নয় । কেন তাকে কাব্যের সঙ্গে, সংগীতের সঙ্গে তুলনা করছি। কেননা, তার আসন যে নিখিলের করুণার মধ্যে । --বঙ্গবাণী, বৈশাখ ১৩৩১, পৃ. ৩০৮ রচনাবলী পৃ. ৪৩৮, দ্বিতীয় অনুচ্ছেদের শেষে যদি হয় তো হোক সেটা অবাস্তর কথা । তাতে যদি লজা পাবার কোনো কারণ থাকে। তবে সে লজ্জা কবির নয়, রূপদক্ষের নয়, সে লজা তারই যিনি অনন্তং, আনন্দরূপমমৃতং যদবিভতি— সেই লজ্জা পরমসুন্দরের— সেই লজ্জায় বিশ্বের প্রকাশ ! --বঙ্গবাণী, বৈশাখ ১৩৩১, পৃ. ৩১২ বর্তমান গ্রন্থে ৪৩৭ পৃষ্ঠার দ্বিতীয় অনুচ্ছেদটি (অমৃতের দুটি অর্থ ইত্যাদি) “বঙ্গবাণীর । প্রথম সংস্করণে উক্ত অনুচ্ছেদের পরিবর্তে নিম্নোদধূত অনুচ্ছেদটি সংযোজিত হইয়াছিল— এই ঝড়ের মূর্তি তো মিলিয়ে গেল। একদা আমার স্মৃতিও লুপ্ত হয়ে যেতে পারে ; কিন্তু, সেদিন বিরাট আকাশপটে যে-প্ৰমত্ততার প্রলয়চিত্র রচিত হয়েছিল, সে বাহ্যত যত স্বল্পস্থায়ী হােক, সেই ক্ষণকালের মধ্যেই ছিল অমৃতের প্রকাশ । চটকলের পাশে যে নোংরা বসতি আছে সময়ের পরিমাপে সে বড়ো হলেও সে মরেই আছে । --সাহিত্যের পথে, প্ৰথম সংস্করণ, পৃ. ৯ ৪৩৭ পৃষ্ঠার ১ম অনুচ্ছেদে রবীন্দ্রনাথ জাপানযাত্রার পথে যে ‘দারুণ ঝড়ে'র উল্লেখ করিয়াছেন তাহার সমসাময়িক বিবরণ রবীন্দ্ৰ-রচনাবলীর উনবিংশ খণ্ডে (সুলভ দশম) ৩২৯ পৃষ্ঠায় (জাপানযাত্রী । ৯ই জ্যৈষ্ঠ) পাওয়া যাইবে । চীনসমুদ্রে উক্ত ঝড়ের প্রেরণাতেই তিনি “তোমার ভুবন-জোড়া আসনখানি গানটি রচনা করিয়াছিলেন । এই প্রসঙ্গে তোসামারু জাহাজ হইতে ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৩২৩ তারিখে দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুরকে লিখিত রবীন্দ্রনাথের একটি পত্রের কিয়দংশ উদধূত হইল কাল রাত্রে ঘোরতর বৃষ্টিবাদল শুরু হল- ডেকে কোথাও শোবার জো রইল না । অল্প একটুখানি শুকনো জায়গা বেছে নিয়ে দাঁড়িয়ে দাড়িয়ে গান গেয়ে অর্ধেক রাত্রি কেটে গেল । প্ৰথমে ধরলাম, ‘শ্রাবণের ধারার মতো পড়ুক ঝরে, পড়ুক ঝরে, তার পরে ‘বীণা বাজাও, তার পরে ‘পূর্ণ আনন্দ।"- কিন্তু বৃষ্টি আমার সঙ্গে সমান টক্কর দিয়ে চলল, তখন একটা নতুন গান