পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S 88 রামপুর বোয়ালয়া ২৩ ফান্ধয়ন ১৩০০ মরণে কৃতাৰ্থ করি প্রাণ। শুনিয়াছি তারি লাগি রাজপুত্র পরিয়াছে ছিন্ন কস্থা, বিষয়ে বিরাগী পথের ভিক্ষুক । মহাপ্ৰাণ সহিয়াছে পালে পলে সংসারের ক্ষুদ্র উৎপীড়ন, বিধিয়াছে পদতলে প্ৰত্যহের কুশাকুর, করিয়াছে তারে অবিশ্বাস মূঢ় বিজ্ঞজনে, প্ৰিয়জন করিয়াছে পরিহাস অতিপরিচিত অবজ্ঞায়, গেছে সে করিয়া ক্ষমা রাবে করুণানেত্ৰে- অস্তরে বহিয়া নিরুপমা সৌন্দর্য প্ৰতিমা । তারি পদে মানী সঁপিয়াছে মান, ধনী সঁপিয়াছে ধন, বীর সঁপিয়াছে আত্মপ্ৰাণ ; তাহারি উদেশে কবি বিরচিয়া লক্ষ লক্ষ গান ছড়াইছে দেশে দেশে। শুধু জানি তাহারি মহান গভীর মঙ্গলধ্বনি শুনা যায় সমুদ্রে সমীরে, তমহারি অঞ্চল প্ৰান্ত লুটাইছে নীলাম্বর ঘিরে, তারি বিশ্ববিজয়িনী পরিপূর্ণা প্ৰেমমূর্তিখানি বিকাশে পরমক্ষণে প্ৰিয়জনমুখে । শুধু জানি সে বিশ্বপ্রিয়ার প্ৰেমে ক্ষুদ্রতারে দিয়া বলিদান সম্মুখে দাড়াতে হবে উন্নত মস্তক উচ্চে তুলি যে মস্তকে ভয় লেখে নাই লেখা, দাসত্বের ধূলি আঁউসাকে নাই কলঙ্কতিলক । তাহারে অস্তরে রাখি জীবনকািন্টকপথে যেতে হবে নীরবে একাকী, সুখে দুঃখে ধৈর্য ধরি, বিরলে মুছিয়া অশ্রু-আঁখি, সুখী করি সর্বজনে । তার পরে দীর্ঘপথশেষে জীবযাত্ৰা-অবসানে ব্লকান্তপদে রক্তসিক্ত বেশে উত্তরিব একদিন শ্রান্তিহরা শান্তির উদ্দেশে দুঃখহীন নিকেতনে | প্ৰসন্নবদনে মন্দ হোসে পর্যাবে মহিমালক্ষ্মী ভক্তকণ্ঠে বরমাল্যখানি, করপদ্মাপরাশনে শাস্ত হবে সর্ব দুঃখগ্রানি সৰ্ব্ব অমঙ্গল । লুটাইয়া রক্তিম চরণতলে ধৌত করি দিব পদ আজন্মের রুদ্ধ অশ্রািজলে । সুচিরসঞ্চিত আশা সম্মুখে করিয়া উদঘাটন মাগিব অনন্ত ক্ষমা । হয়তো ঘুচিবে দুঃখনিশা, তৃপ্ত হবে এক প্রেমে জীবনের সর্বপ্ৰেমাতৃষা ।