পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S bo রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী স্বাগ হইতে বিদায় স্নান হয়ে এল কণ্ঠে মন্দারামালিকা, হে মহেন্দ্ৰ, নির্বাপিত জ্যোতির্ময় টিকা মলিন ললাটে । পুণ্যবল হল ক্ষীণ, আজি মোর স্বৰ্গ হতে বিদায়ের দিন, হে দেব, হে দেবীগণ । বর্ষ লক্ষশত যাপন করেছি হর্ষে দেবতার মতো দেবালোকে । আজি শেষ বিচ্ছেদের ক্ষণে লেশমাত্ৰ অশ্রণরেখা স্বগের নয়নে দেখে যাব এই আশা ছিল । শোকইন হৃদিহীন সুখস্বৰ্গভূমি, উদাসীন চেয়ে আছে । লক্ষ লক্ষ বর্ষ তার চক্ষের পলক নহে ; অশ্বখশাখার প্ৰান্ত হতে খসি গেলে জীণতম পাতা যতটুকু বাজে তার, ততটুকু ব্যথা স্বগে নাহি লাগে, যাবে মোরা শত শত ধরিত্রীর অন্তহীন জন্মমৃত্যুম্রোতে । সে বেদনা বাজিত যদ্যপি, বিরহের ছায়ারেখা দিত দেখা, তবে স্বরাগের চিরাজ্যোতি স্নান হত মর্তের মতন কোমল শিশিরবাম্পে— নন্দনকানন কৃলে কুলে গেয়ে যেত করুণ কলকণ্ঠে, সন্ধ্যা আসি দিবা-অবসানে নির্জন প্ৰান্তর-পারে দিগন্তের পানে চলে যেত উদাসিনী, নিস্তব্ধ নিশীথ বিল্লিমস্ত্ৰে শুনাইত বৈরাগ্যসংগীত নক্ষত্রসভায় । মাঝে মাঝে সুরপুরে তালভঙ্গ হত । হেলি উর্বশীর স্তনে স্বৰ্ণবীণা থেকে থেকে যেন অন্যমনে অকস্মাৎ ঝংকারিত কঠিন পীড়নে নিদারুণ করুণ মূৰ্ছনা। দিত দেখা দেবতার অশ্রুহীন চোখে জলরেখা নিষ্কারণে। পতিপাশে বসি একাসনে যেন খুঁজি পিপাসার বারি। ধরা হতে মাঝে মাঝে উচ্ছসি আসিত বায়ুস্রোতে


سي