পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবযানী । কালীগ্রাম ২৬। শ্রাবণ [ ১৩০০] কচ । বিদায়-অভিশাপ সৰ্বকাৰ্য-মাঝে- তবু চলে যেতে হবে সুখশূন্য সেই স্বৰ্গধামে। দেব-সবে এই সঞ্জীবনী বিদ্যা করিয়া প্ৰদান নূতন দেবত্ব দিয়া তবে মোর প্রাণ সার্থক হইবে ; তার পূর্বে নাহি মানি আপনার সুখ। ক্ষামো মোরে, দেবযানী, ক্ষমে। অপরাধ । ক্ষমা কোথা মনে মোর | করেছি এ নারীচিত্ত কুলিশকঠোর হে ব্ৰাহ্মণ। তুমি চলে যাবে স্বৰ্গলোকে সগৌরবে, আপনার কর্তব্যপুলকে সর্ব দুঃখশোক করি দূরপরাহত ; আমার কী আছে কাজ, কী আমার ব্ৰত । আমার এ প্ৰতিহত নিস্ফল জীবনে কী রহিল, কিসের গৌরব ? এই বনে বসে রব নতশিরে নিঃসঙ্গ একাকী লক্ষ্যহীনা। যে দিকেই ফিরাইব আঁখি বারম্বার করিবে দংশন। ধিক ধিক , কোথা হতে এলে তুমি, নির্মম পথিক, দণ্ড দুই অবসর কাটাবার ছলে জীবনের সুখগুলি ফুলের মতন একখানি সূত্র দিয়ে। যাবার বেলায় সে মালা নিলে না। গলে, পরম হেলায় সেই সূক্ষ্ম সূত্রখানি দুই ভাগ করে ছিড়ে দিয়ে গেলে। লুটাইল ধূলি-’পরে এ প্ৰাণের সমস্ত মহিমা । তোমা-’পরে এই মোর অভিশাপ- যে বিদ্যার তরে মোরে কর অবহেলা, সে বিদ্যা তোমার সম্পূর্ণ হবে না বশ—তুমি শুধু তার ভারবাহী হয়ে রবে, করিবে না ভোগ ; শিখাইবে, পরিবে না করিতে প্রয়োগ । আমি বর দিনু, দেবী, তুমি সুখী হবে। ভুলে যাবে সর্বগ্নানি বিপুল গৌরবে। \D OS)