পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মালিনী । মালিনী ডুবিতে হইবে তারে। বন্ধু চিরন্তন, তোমারে ডুবাব আমি, ছিল এ লিখন । ডুবায়েছ তারে ? জীবনের সব কথা বলেছি তোমারে, শুধু, সেই কথা আছে বাকি । যেই দিন তোমারে ঘেরিয়া চারি দিকে, একাকিনী দাড়াইয়া পূৰ্ণ মহিমায়, কী রাগিণী বাজাইলে ! বংশীরবে যেন মন্ত্রাহিত বিদ্রোহ করিল আসি ফণা অবনত তব পদতলে । শুধু বিপ্ৰ ক্ষেমংকর রহিল পাষাণচিত্ত, অটল—অন্তর । একদা ধরিয়া করে কহিল সে মোরে“বন্ধু, আমি চলিলাম দূর দেশান্তরে । নবধর্ম উৎপাটন করিব সমূলে পুণ্য কাশী হতে ।” চলি গেল রিক্ত হাতে অজ্ঞাত ভুবনে । শুধু লয়ে গেল সাথে আমার হৃদয়, আর, প্ৰতিজ্ঞা কঠোর । তার পরে জান তুমি কী ঘটিল মোর । লভিলাম যেন আমি নবজন্মভূমি যেদিন এ শুষ্ক চিত্তে বরাষিলে তুমি সুধাবৃষ্টি । “সর্ব জীবে দয়া” জানে সবে— অতি পুরাতন কথা— তবু এই ভাবে এই কথা বসি আছে লক্ষবর্ষ ধরি সংসারের পর তীরে । তারে পার করি সবার ঘরের দ্বারে । হৃদয়-অমৃতে স্তন্যদান করিয়াছ সে দেবশিশুরে, লয়েছে সে নবজন্ম মানবের পুরে তোমারে মা ব’লে । স্বৰ্গ আছে কোন দূরে, কোথায় দেবতা- কে বা সেন সংবাদ জানে শুধু জানি বলি দিয়া আত্ম-অভিমানে আপন করিতে হবে- যে-কিছু বাসনা শুধু আপনার তরে তাই দুঃখময় । যজ্ঞে যাগে তপস্যায়। কিন্তু মুক্তি নয়, মুক্তি শুধু বিশ্বকাজে । ফিরে গিয়ে ঘরে সে নিশীথে বঁকাদিয়া কহিনু উচ্চস্বরে,