পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈকুণ্ঠের খাতা KAD Gł d করতলে তুলে নেবেন, কী বলে, যদি স্বয়ং না নেন তো অন্য লোক আছে। অবিনাশ। আচ্ছা, পূজোপহার না লিখে যদি প্ৰণয়োপহার লেখা যায়। কেদার। সেটা যদি খুব চট করে লেখা যায় তো সেইটেই ভালো। অবিনাশ। কিন্তু রোসো, একটু ভেবে দেখি। ঈশানের প্রবেশ ঈশান। খাবার ঠাণ্ডা হয়ে এল যে। অবিনাশ। আচ্ছা, সে হবে এখন, তুই যা। ঈশান। দিদিঠাকরুন বসে আছে— অবিনাশ। আচ্ছা আচ্ছা, তুই এখন পালা ঈশান। ( কেদারের প্রতি ) বড়োবাবুর তো আহারনিদ্রা বন্ধ, আবার ছোটােবাবুকেও খেপিয়ে তুলেছ ? কেদার। ভাই ঈশেন, যদিচ আমার নিমক খাও না, তবু, ওর নাম কী, আমার কথাটাও একবার ভেবে দেখো। তোমার বড়োবাবু খুব বিস্তারিত করে লিখে থাকেন আর তোমার ছােটােবাবু, কী বলে, অত্যন্ত সংক্ষেপেই লেখেন, কিন্তু আমার কপালক্রমে দুইই সমান হয়ে ওঠে। — অবিনাশ, তোমার খাবার এসেছে, ওর নাম কী, আমি উঠি । অবিনাশ। বিলক্ষণ! তুমিও খেয়ে যাও-না। ঈশেন, বাবুর জন্যে খাবার ঠিক করা। ঈশান। সময়মত বল না, এখন আমি খাবার ঠিক করি কোথেকে ? অবিনাশ। তোর মাথা থেকে ! বেটা ভূত ! ঈশান। এও যে ঠিক বড়োবাবুর মতো হয়ে এল, আমাকে আর টিকতে দিলে না। [প্ৰস্থান অবিনাশ। এখানে ‘প্ৰণয়োপহার” লিখলে “দেবী।” কথাটা বদলাতে হয়। দেবীর সঙ্গে প্ৰণয় হবে কী করে। কেদার। কেন হবে না! তা হলে দেবতাগুলো, ওর নাম কী, বঁাচে কী করে ? ভাই অবিনাশ, স্ত্রীজাতি স্বৰ্গে মর্তে পাতালে যেখানেই থাকুক, ওর নাম কী, তাদের সঙ্গে প্ৰণয় হতে পারে, কী বলে ভালো, হয়েও থাকে। তুমি অত ভেবো না ! (স্বগত) এখন ছাড়লে বাচি । তিনকড়ি। ও দাদা ! তোমার বদল ভেঙে নাও ! তুমি সেখানে যাও, আমি বরঞ্চ এখানে একবার চেষ্টা দেখি । কেদার। কেন রে, কী হয়েছে ? তিনকড়ি। ওরে বাস রে! সে কী খাতা ! আমি তার মধ্যে সেঁধোলে আমাকে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না ! সেইটে পড়তে দিয়ে বুড়ো কোথায় উঠে গেল, আমি তো এক দৌড়ে পালিয়ে এসেছি। বৈকুণ্ঠের প্রবেশ বৈকুণ্ঠ। কী তিনকড়ি, পালিয়ে এলে যে! তিনকড়ি। আপনি অতবড়ো একখানা বই লিখলেন আর এইটুকু বুঝলেন না! বৈকুণ্ঠ। কেদারবাবু, আপনি যদি একবার আসেন তা হলে— কেদার। চলুন। (স্বগত) রামে মারলেও মরব রাবণে মারলেও মরব, কিন্তু অবিনাশের ঐ একটি লাইন নিয়ে তো আর পারি। নে ! অবিনাশ। কেদার, তুমি যাও কোথায়! দাদা, আমার সেই কাজটা— বৈকুণ্ঠ। (রাগিয়া উঠিয়া) দিনরাত্তির তোমার কাজ ! কেদারবাবু ভদ্রলোক, ওঁকে একটু বিশ্রাম