পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শান্তিনিকে ৩ন ১৮. জ্যৈষ্ঠ ১২৯৯ “সাধু সাধু সাধু। রবে কাপে চারি ধার, সবে বলে- “পরিষ্কার অতি পরিষ্কার । দুর্বোধি যা-কিছু ছিল হয়ে গেল জল, শূন্য আকাশের মতো অত্যন্ত নির্মল।” হাপ ছাড়ি উঠিলেন হবুচন্দ্ররাজ, আপনার মাথা হতে খুলি লয়ে তাজ পরাইয়া দিল শ্মীণ বাঙালির শিরে, ভারে তার মাথাটুকু পড়ে বুঝি ছিড়ে । বহুদিন পরে আজ চিন্তা গেল ছুটে, ছেলেরা ধরিল খেলা, বৃদ্ধেরা তামুক, এক দণ্ডে খুলে গেল। রমণীর মুখ । দেশজোড়া মাথা ধরা ছেড়ে গেল চট্ট, সবাই বুঝিয়া গেল— ‘হিং টিং ছটু’ । স্বপ্নমঙ্গলের কথা অমৃতসমান, গৌড়ানন্দ কবি। ভনে, শুনে পুণাবান । যে শুনিবে এই স্বপ্নমঙ্গলের কথা, সৰ্ব্বভ্ৰম ঘুচে যাবে, নাহিবে অন্যথা । বিশ্বে কীভূ বিশ্ব ভেবে হবে না ঠকিতে, সত্যেরে সে মিথ্যা বলি বুঝিবে চিকিতে । যা আছে তা নাই। আর নাই যাহা আছে, এ কথা জাজ্বল্যমান হবে তার কাছে । সবাই সরলভাবে দেখিবে যা কিছু, সে আপনি লেজুড় জুড়িবে তার পিছু । এসো ভাই, তোলো হাই, শুয়ে পডো চিত, অনিশ্চিত এ সংসারে এ কথা নিশ্চিত— জগতে সকলি মিথ্যা সব মায়াময়, স্বপ্ন শুধু সত্য আর সত্য কিছু নয় । স্বপ্নমঙ্গলের কথা অমৃতসমান, গৌড়ানন্দ কবি। ভনে, শুনে পুণ্যবান । পরশপাথর খ্যাপা খুজে খুঁজে ফিরে পরশপাথর । থায় বৃহৎ জটা ধুলায় কাদায় কটা, মলিন ছায়ার মতো ক্ষীণ কলেবর । ওষ্ঠে অধরোতে চাপি অন্তরের দ্বার বাপি রাত্ৰিদিন তীব্ৰ জ্বালা জেলে রাখে চোখে ।