পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(γ ( , রবীন্দ্র-রচনাবলী চন্দ্র। না পূৰ্ণবাবু, আজ আর কিছুতেই না, আমার অত্যন্ত জরুরি কােজ আছে। পূৰ্ণবাবু, আমাৰ কথাগুলো ভালো করে চিন্তা করে দেখো। আপাতত মনে হতে পারে অসাধ্য- কিন্তু তা নয়। দুঃসাধ্য বটে, তা ভালো কাজ মাত্রই দুঃসাধ্য। আমরা যদি পাচটি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ লোক পাই তা হলে আমরা যা কাজ করব তা চিরকালের জন্যে ভারতবর্ষকে আচ্ছন্ন করে দেবে। শ্ৰীশ। কিন্তু আপনি যে বলছিলেন গোরুর গাড়ির চাকা প্রভৃতি ছোটাে ছোটাে জিনিস– চন্দ্র। ঠিক কথা, আমি তাকেও ছোটাে মনে করে উপেক্ষা করি নে, এবং বড়ো কাজকেও অসাধ৷ জ্ঞান করে ভয় করি নে পূর্ণ। কিন্তু সভার অধিবেশন সম্বন্ধেও— চন্দ্ৰ। সে-সব কথা কাল হবে পূৰ্ণবাবু! আজি তবে চললুম। 7 ،مس-۔،، ۔۔--سہ ---- দ্রুতবেগে প্ৰস্থান বিপিন। ভাই শ্ৰীশ, চুপচাপ যে! এক মাতালের মাৎলামি দেখে অন্য মাতালের নেশা ছুটে যায়। চন্দ্রবাবুর উৎসাহে তোমাকে সুদ্ধ দমিয়ে দিয়েছে। শ্ৰীশ । না হে, অনেক ভাববার কথা আছে। উৎসাহ কি সব সময়ে কেবল বকবকি কবে ? কখনো-বা একেবারে নিস্তব্ধ হয়ে থাকে, সেইটেই হল সাংঘাতিক অবস্থা । বিপিন। পূৰ্ণবাবু, হঠাৎ পালােচ্ছ যে ? পূর্ণ। সভাপতিমশায়কে রাস্তায় ধরতে যাচ্ছি—পথে যেতে যেতে যদি দৈবাৎ আমার দুটাে-একটা কথায় কৰ্ণপাত করেন। বিপিন । ঠিক উলটো হবে। তার যে কটা কথা বাকি আছে সেইগুলো তোমাকে শোনাতে শোনাতে কোথায় যাবার আছে সে কথা ভুলেই যাবেন। বনমালীর প্রবেশ বনমালী। ভালো আছেন শ্ৰীশবাবু ? বিপিনবাবু ভালো তো ? এই—যে পূৰ্ণবাবুও আছেন দেখছি! তা, বেশ হয়েছে। আমি অনেক বলে কয়ে সেই কুমারটুলির পাত্রীদুটিকে ঠেকিয়ে রেখেছি। শ্ৰীশ। কিন্তু আমাদের আর ঠেকিয়ে রাখতে পারবেন না। আমরা একটা গুরুতর কিছু করে ফেলব । পূর্ণ। আপনারা বসুন শ্ৰীশবাবু! আমার একটা কাজ আছে। বিপিন। তার চেয়ে আপনি বসূন পূৰ্ণবাবু! আপনার কাজটা আমরা দুজনে মিলে সেরে দিয়ে আসছি ; পূর্ণ। তার চেয়ে তিনজনে মিলে সারাই তো ভালো । বনমালী { আপনারা ব্যস্ত হচ্ছেন দেখছি। আচ্ছা, তা, আর-এক সময় আসব। সপ্তম পরিচ্ছেদ চন্দ্ৰীমাধববাবু যখন ডাকিলেন– “নির্মল”, তখন একটা উত্তর পাইলেন -1তে, “কী মামা”, কিন্তু সুরাটা ঠিক বাজিল না। চন্দ্ৰবাবু ছাড়া আর যে-কেহ হইলে বুঝিতে পারিত সে অঞ্চলে অল্প একটুখানি গোল আছে । “নির্মল, আমার গলার বোতামটা খুঁজে পাচ্ছি নে ৷” “বোধ হয় ঐখানেই কোথাও আছে।” এরূপ অনাবশ্যক এবং অনির্দিষ্ট সংবাদে কাহারও কোনো উপকার নাই, বিশেষত যাহার দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ । ফলত এই সংবাদে অদৃশ্য বােতাম সম্বন্ধে কোনো নূতন জ্ঞানলাভের সহায়তা না করিলেও নির্মলার মানসিক অবস্থা সম্বন্ধে অনেকটা আলোক বর্ষণ করিল । কিন্তু অধ্যাপক