পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৮৮

প্ৰজাপতির নির্বন্ধ ( と S বিপিন কহিল, “নীরবালা ! এ নামটি কাব্যগ্রন্থে চলে। কিন্তু কুমারসভায়—” শ্ৰীশ। কুমারসভাতেও এই নামধারিণীরা যদি চলে আসেন তা হলে দ্বাররোধ করতে পারি। এত বড়ো বলবান তো আমাদের মধ্যে কাউকে দেখি নে । বিপিন। পূৰ্ণ তো একটি আঘাতেই আহত হয়ে পড়ল— রক্ষা পায় কি না সন্দেহ। šas fKSK ? বিপিন। লক্ষ্য করে দেখ নি বুঝি ? প্ৰশান্তস্বভাব বিপিনকে দেখিলে মনে হয় না যে, সে কিছু দেখে ; কিন্তু তাহার চোখে কিছুই এড়ায় না। পরম দুর্বল অবস্থায় পূর্ণকে সে দেখিয়া লইয়াছে। শ্ৰীশ । না না, ও তোমার অনুমান । বিপিন । হৃদয়টা তো অনুমানেরই জিনিস— না যায় দেখা, না যায় ধরা। শ্ৰীশ থমকিয়া দাড়াইয়া ভাবিতে লাগিল ; কহিল, “পূর্ণর অসুখটাও তা হলে বৈদ্যশাস্ত্রের অন্তৰ্গত নয় ?” বিপিন। না, এ-সকল ব্যাধি সম্বন্ধে মেডিকাল কলেজে কোনো লেকচার চলে না। শ্ৰীশ উচ্চস্বরে হাসিতে লাগিল, গম্ভীর বিপিন স্মিতমুখে চুপ করিয়া রহিল। চন্দ্ৰবাবু প্ৰবেশ করিয়া কহিলেন, “আজকের তর্কবিতর্কের উত্তেজনায় পর্ণবাবুর হঠাৎ শরীর খারাপ হল দেখে আমি তাকে তার বাড়ি পৌছে দেওয়া উচিত বোধ করলুম।” শ্ৰীশ বিপিনের মুখের দিকে চাহিয়া ঈষৎ একটু হাসিল; বিপিন গম্ভীরমুখে কহিল, “পূৰ্ণবাবুর যেরকম দুর্বল অবস্থা দেখছি পূর্ব হতেই তার বিশেষ সাবধান হওয়া উচিত ছিল।” চন্দ্ৰীমাধব সরলভাবে উত্তর করিলেন, “পূৰ্ণবাবুকে তো বিশেষ অসাবধান বলে বোধ হয় না।” প্ৰবেশ করিলেন । কহিলেন, “মাপ করবেন, এই নবীন সভ্যাটিকে আপনাদের হাতে সমপণ করে দিয়েই রসিক হাসিয়া কহিলেন, “আমার নবীনতা বাইরে থেকে বিশেষ প্ৰত্যক্ষ গোচর নয়—” অক্ষয়। অত্যন্ত বিনয়বশত সেটা বাহ্য প্রাচীনতা দিয়ে ঢেকে রেখেছেন, ক্রমশ পরিচয় পাবেন। ইনি হচ্ছেন। সার্থকনামা শ্ৰীীরসিক চক্রবর্তী । শুনিয়া শ্ৰীশ ও বিপিন সহাস্যে রসিকের মুখের দিকে চাহিল ; রসিকদাদা কহিলেন, “পিতা আমার রসবোধ সম্বন্ধে পরিচয় পাবার পূর্বেই রসিক নাম রেখেছিলেন, এখন পিতৃসত্য পালনের জন্য আমাকে রসিকতার চেষ্টা করতে হয়, তার পরে যত্নে কৃতে যদি না সিধতি কোহিত্র দোষঃ ।” অক্ষয় প্ৰস্থান করিলেন। ঘরে দুটি কেরোসিনের দীপ জ্বলিতেছে ; সেই দুটিকে বেষ্টন করিয়া ফিরোজ রঙের রেশমের অবগুণ্ঠন। সেই আবরণ ভেদ করিয়া ঘরের আলোটি মৃদু এবং রঙিন হইয়া ७छैिशाgछ । পুরুষবেশী শৈল আসিয়া সকলকে নমস্কার করিল। ক্ষীণদৃষ্টি চন্দ্ৰমাধববাবু ঝাপসাভাবে তাহাকে দেখিলেন— বিপিন ও শ্ৰীশ তাহার দিকে চাহিয়া রহিল। শৈলের পশ্চাতে দুইজন ভূত্য কয়েকটি ভোজনপাত্ৰ হাতে করিয়া উপস্থিত হইল। শৈল ছোটো ছোটো রুপার থালাগুলি লইয়া সাদা পাথরের টেবিলের উপর সাজাইতে লাগিল। প্ৰথম পরিচয়ের দুনিবার লজ্জাটুকু সে এইরূপ আতিথ্যব্যাপারের মধ্যে ঢাকিয়া লইবার চেষ্টা করিল। রসিক কহিলেন, “ইনি আপনাদের সভার আর-একটি নবীন সভ্য। এর নবীনতা সম্বন্ধে কোনো তর্ক নেই। ঠিক আমার বিপরীত। ইনি বুদ্ধির প্রবীণতা বাহ্য নবীনতা দিয়ে গোপন করে রেখেছেন। আপনারা কিছু বিস্মিত হয়েছেন দেখছি— হবার কথা। একে দেখে মনে হয়। বালক, কিন্তু আমি আপনাদের কাছে জামিন রইলুম— ইনি বালক নন।” চন্দ্র। এর নাম ? يا (S\| | ډ