পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্ৰজাপতির নির্বন্ধ (?S (? শৈলের প্রবেশ অক্ষয় । এসো এসো— উত্তমাধ্যমমধ্যমা এই তিন শ্যালী না হলে আমার— । নীরবালা | উত্তমমধ্যম হয় না। শৈল। ( নৃপ ও নীরর প্রতি ) তোরা ভাই, একটু যা তো, আমাদের কথা আছে। অক্ষয়। কথাটা কী বুঝতে পারছিস তো নীরু ? হরিনামকথা নয়। নীরবালা । আচ্ছা, তোমার আর বকতে হবে না। [নুপ ও নীরর প্রস্থান শৈল। দিদি, নৃপ-নীরর জন্যে মা দুটি পাত্র তা হলে স্থির করেছেন ? পুরবালা। হা, কথা একরকম ঠিক হয়ে গেছে। শুনেছি ছেলে দুটি মন্দ নয়— তারা মেয়ে দেখে পছন্দ করলেই পাকাপাকি হয়ে যাবে। শৈল । যদি পছন্দ না করে ? পুরবালা। তা হলে তাদের অদৃষ্ট মন্দ। অক্ষয়। এবং আমার শ্যালী দুটির অদৃষ্ট ভালো। শৈলী। নৃপ-নীরু। যদি পছন্দ না করে ? অক্ষয় | তা হলে ওদের রুচির প্রশংসা করব । oት পুরবালা। পছন্দ আবার না করবে। কী ? তোদের সব বাড়াবাড়ি। স্বয়ম্বরার দিন গেছে, মেয়েদের পছন্দ করবার দরকার হয় না- স্বামী হলেই তাকে ভালোবাসতে পারে। অক্ষয়। নইলে তোমার বর্তমান ভগ্নীপতির কী দুৰ্দশাই হত শৈল! জগত্তারিণীর প্রবেশ জগত্তারিণী। বাবা অক্ষয়, ছেলে দুটিকে তা হলে তো খবর দিতে হয়। তারা তো আমাদের বাডির ঠিকানা জানে না। অক্ষয় । বেশ তো মা, রসিকদাদাকে পাঠিয়ে দেওয়া যাক । জগত্তারিণী। পোড়া কপাল! তোমার রসিকদাদার যেরকম বুদ্ধি ! তিনি কাকে আনতে কাকে আনবেন ঠিক নেই। পুরবালা । তা মা, তুমি কিছু ভেবো না । ছেলে দুটিকে আনবার ব্যবস্থা করে দেব। জগত্তারিণী। মা পুরি, তুই একটু মনোযোগ না করলে হবে না। আজকালকার ছেলে, তাদের অক্ষয় । ( জনান্তিকে ) পুরির হাতিযশা আছে। পুরি তার মার জন্যে যে জামাইটি জুটিয়েছেন, পসার খুব বেড়ে গেছে! আজিকালিকার ছেলে কী করে বশ করতে হয় সে বিদ্যে পুরবালা । ( জনাস্তিকে ) মশায় বুঝি আজকালকার ছেলে ? জগত্তারিণী। মা, তোমরা পরামর্শ করো, কায়েত-দিদি এসে বসে আছেন, আমি তাকে বিদায় করে আসি । - শৈলী। মা, তুমি একটু বিবেচনা করে দেখো— ছেলে দুটিকে এখনো তোমরা কেউ দেখ নি, হঠাৎ— জগত্তারিণী । বিবেচনা করতে করতে আমার জন্ম শেষ হয়ে এল— আর বিবেচনা করতে পারি CN অক্ষয়। বিবেচনা সময়মত এর পর করলেই হবে, এখন কাজটা আগে হয়ে যাক । জগত্তারিণী। বলে তো বাবা, শৈলকে বুঝিয়ে বলে তো ! { প্ৰস্থান পুরবালা । মিথ্যে তুই ভাবছিস শৈল, মা যখন মানস্থির করেছেন ওঁকে আর কেউ টলাতে পারবে