পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সোনার তরী মুখে হাত দিয়ে, মাতৃহীন বালকের মতো বহুক্ষণ কাদি স্নেহ-আলোকের তরে- ইচ্ছা করি, নিশার তীমাধারস্রোতে মুছে ফেলে দিয়ে যায় সৃষ্টিপট হতে এই ক্ষীণ অর্থহীন অস্তিত্বের রেখা, তখন করুণাময়ী দাও তুমি দেখা তারকা-আলোক-জ্বালা স্তব্ধ। রজনীর অঞ্চলে মুছায়ে দাও ; চাও মুখপানে স্নেহময় প্রশ্নভর করুণ নয়নে ; নয়ন চুম্বন করা ; স্নিগ্ধ হস্তখানি ললাটে বুলায়ে দাও ; না কহিয়া বাণী, সান্তনা ভরিয়া প্ৰাণে, কবিরে তোমার ঘুম পাড়াইয়া দিয়া কখন আবার চলে যাও নিঃশব্দ চরণে । সেই তুমি মূর্তিতে দিবে কি ধরা ? এই মর্তভূমি পরশা করিবে রাঙা চরণের তলে ? অস্তরে বাহিরে বিশ্বে শূন্যে। জলে স্থলে সর্ব ঠাই হতে সর্বময়ী আপনারে করিয়া হরণ, ধরণীর একাধারে ধরিবে কি একখানি মধুর মুরাতি ? নদী হতে লতা হতে আনি তব গতি অঙ্গে অঙ্গে নানা ভঙ্গে দিবে হিল্লোলিয়া ভাবের বিকাশভরে ? কী নীল বসন পরিবে সুন্দরী তুমি ? কেমন কঙ্কণ ধরিবে দুখানি হাতে ? কবরী কেমনে বাধিবে, নিপুণ বেণী বিনায়ে যতনে ? কচি কেশগুলি পড়ি শুভ্ৰ শ্ৰীবা-’পরে কাপিবে কেমন ? শ্রাবণে দিগন্তপারে যে গভীর স্নিগ্ধদৃষ্টি ঘন মেঘভারে দেখা দেয় নব নীল অতি সুকুমার, সে দৃষ্টি না জানি ধরে কেমন আকার নারীচক্ষে ! কী সঘন পল্লবের ছায়, কী সুদীর্ঘ কী নিবিড় তিমির-আভায় মুগ্ধ অস্তরের মাঝে ঘনাইয়া আনে সুখবিভােবরী ! অধর কী সুধাদানে 6. A