পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Σ88 রবীন্দ্র-রচনাবলী শশধর। তুমি তো আচ্ছা লোক। ঘড়ি তো নিয়ে গেলুম ; তার পর থেকে আমার সময়টা কাটবে কী রকম ? ঘরের লোকের কাছে জবাবদিহি করতে গিয়ে আমাকে যে ঘরছাড়া হতে হবে । BBD S DDD DLLDS S DS BD LDD DBBB S শশধর । ভালোবাস না, কিন্তু সহও করতে হয়। সংসারের এই নিয়ম | মন্মথ । নিজের সম্বন্ধে হলে নিঃশব্দে সহ্য করতেম। ছেলেকে মাটি করতে পারি না । শশধর। সে তাে ভালো কথা। কিন্তু স্ত্রীলোকের ইচ্ছার একেবারে খাড়া উলটােমুখে চলতে গেলে বিপদে পড়বে। তার চেয়ে পাশ কাটিয়ে ঘুরে গেলে ফল পাওয়া যায়। বাতাস যখন উলটাে বয়, জাহাজের পাল তখন আড় করে রাখতে হয়, নইলে চলা অসম্ভব। মন্মথ। তাই বুঝি তুমি গৃহিণীর সকল কথাতেই সায় দিয়ে যাও। ভীরু ! শশধর । তোমার মতো অসমসাহস আমার নেই। যার ঘরকন্নার অধীনে চব্বিশ ঘণ্টা বাস করতে হয়, তঁাকে ভয় না করব তো কাকে করব। নিজের স্ত্রীর সঙ্গে বীরত্ব করে লাভ কী { আঘাত করলেও কষ্ট, আঘাত পেলেও কষ্ট। তার চেয়ে তর্কের বেলায় গৃহিণীর যুক্তিকে অকাট্য বলে কাজের বেলায় নিজের যুক্তিতে চলাই সৎপরামর্শ- গোয়ার্তমি করতে গেলেই মুশকিল বাধে। আমি চললেম, যা ভালো বােঝ করে । [শশধরের প্রস্থান বিধুমুখীর প্রবেশ মন্মথ । তোমার ছেলেটিকে যে বিলাতি পোশাক পরাতে আরম্ভ করেছ, সে আমার পছন্দ নয়। ইন্দ্র। প্ৰাণ বুৰ একা তােমাই আহে। আজকাল স্কে স্বল্প ফেললে ইংরেজি কাপড় মন্মথ । (হাসিয়া) সকলের মতেই যদি চলবে, তবে সকলকে ছেড়ে একটিমাত্র আমাকেই বিয়ে করলে कe । বিধুমুখী। তুমি যদি একমাত্র নিজের মতেই চলবে, তবে একা না থেকে আমাকেই বা তোমার বিয়ে করবার কী দরকার ছিল । মন্মথ । নিজের মত চালাবার জন্যও যে অন্য লোকের দরকার হয় । বিধুমুখী। নিজের বােঝা বহাবার জন্য ধোবার দরকার হয় গাধাকে- কিন্তু আমি তো আরমন্মথ। (জিব কাটিয়া) আরে রাম রাম, তুমি আবার সংসারমরুভূমির আরব ঘোড়া। কিন্তু সে প্রাণীবৃত্তান্তের তর্ক এখন থাক। তোমার ছেলেটিকে সাহেব করে তুলো না। বিধুমুখী। কেন করব না। তাকে কি চাষ করব। মন্মথ। লোহার সিন্দুকের চাবিটা বিধবা জায়ের প্রবেশ জা। ভাই, তােমরা এখানে ভালো হয়ে বসেই কথা কও-না। দাঁড়িয়ে কেন। আমি পাশের ঘরে আছি বলে বুঝি আলাপ জমছে না ? ভয় নেই ভাই, আমি নীচের ঘরে যাচ্ছি। [প্ৰস্থান সতীশের প্রবেশ ও ব্যাপকে দেখিয়াই পলায়ন মন্মথ । ও কী ও, তোমার ছেলেটিকে কী মাখিয়েছ। বিধুমুখী। মূৰ্ছা যেয়াে না, ভয়ানক কিছু নয়, একটুখানি এসেল মাত্র। তাও বিলাতি নয়— তোমাদের সাধের দিশি।