পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

GPS SG বিশ্বব্যাপী দুরন্ত যৌবনতরঙ্গরাশির মতো আলোতে ছায়াতে ভঙ্গিতে ভাষাতে আপনার অগাধ আকুলতা ব্যক্তি कठि (5ों कठि जालि। G এই কি সেই টেক্কা, সেই সাহেব, সেই গোলাম। কোথায় গেল সেই পরিতুষ্ট পরিপুষ্ট সুগোল মুখচ্ছবি। কেহ বা আকাশের দিকে চায়, কেহ বা সমুদ্রের ধারে বসিয়া থাকে, কাহারও বা রাত্রে নিদ্রা হয় না, কাহারও বা, আহারে মন নাই। মুখে কাহারও ঈর্ষা, কাহারও অনুরাগ, কাহারও ব্যাকুলতা, কাহারও সংশয়। কোথাও হাসি, কোথাও রোিদন, কোথাও সংগীত। সকলেরই নিজের নিজের প্রতি এবং অন্যের প্রতি দৃষ্টি পড়িয়ছে। সকলেই আপনার সহিত অন্যের তুলনা করিতেছে। টেক্কা ভাবিতেছে, সাহেব ছোকরাটাকে দেখিতে নেহাত মন্দ না হউক। কিন্তু উহার শ্ৰী নাই- আমার চালচলনের মধ্যে এমন একটা মহাত্ম্য আছে যে, কোনাে কোনাে ব্যক্তিবিশেষের দৃষ্টি আমার দিকে আকৃষ্ট না হইয়া থাকিতে পারে না। সাহেব ভাবিতেছে, টেক্কা সর্বদা ভারিটকটক করিয়া ঘাড় বীকাইয়া বেড়াইতেছে, মনে করিতেছে, উহাকে দেখিয়া বিবিগুলা বুক ফাটিয়া মারা গেল।— বলিয়া ঈষৎ বক্র হাসিয়া দর্পণে মুখ দেখিতেছে। দেশে যতগুলি বিবি ছিলেন সকলেই প্ৰাণপণে সাজসজা করেন আর পরস্পরকে লক্ষ্য করিয়া বলেন, আ মরিয়া যাই। গর্বিণীর এত সাজের ধুম কিসের জন্য গো বাপু । উহার রকমসকম দেখিয়া লজ্জা করে ! বলিয়া দ্বিগুণ প্রযত্নে হাবভাব বিস্তার করিতে থাকেন। 4 আবার কোথাও দুই সখায় কোথাও দুই সখীতে। গলা ধরিয়া নিভৃতে বসিয়া গোপন কথাবার্তা হইতে থাকে। কখনো হাসে, কখনো কাব্দে, কখনো রাগ করে, কখনো মান-অভিমান চলে, কখনো সাধাসাধি হয়। যুবকগুলা পথের ধারে বনের ছায়ায় তরুমূলে পৃষ্ঠ রাখিয়া শুষ্কপত্ররাশির উপর পা ছাড়াইয়া অলসভাবে বসিয়া থাকে। বালা সুনীল বসন পরিয়া সেই ছায়াপথ দিয়া আপনমনে চলিতে চলিতে সেইখানে আসিয়া মুখনিত করিয়া চোখ ফিরাইয়ালয়, যেন কাহাঁকৈও দেখিতে পায় নাই, যেন কাহাকেও দেখা দিতে আসে নাই এমনি ভাব করিয়া চলিয়া যায় । তাই দেখিয়া কোনো কোনো খেপা যুবক দুঃসাহসে ভর করিয়া তাড়াতাড়ি কাছে অগ্রসর হয়, কিন্তু মনের মতো একটাও কথা জোগায় না, অপ্রতিভ হইয়া দাড়াইয়া পড়ে, অনুকুল অবসর চলিয়া যায় এবং রমণীও অতীত মুহুর্তের মতো ক্ৰমে ক্ৰমে দূরে বিলীন হইয়া যায়। 甲 মাথার উপরে পাখি ডাকিতে থাকে, বাতাস অঞ্চল ও অলক উড়াইয়া দুহু করিয়া বহিয়া যায়, তরুপল্লব মুক্ত সুড়ঙ্কর এবং প্রস্থল অবশ্নর উত্পািদত মেন হলে অথন্ত বাস্তবরে দ্বিগুণ লগলািন Si Ang একটা বসন্তে তিনটে বিদেশী যুবক আসিয়া মরা গাঙে এমনি একটা ভরা তুফান তুলিয়া দিল। রাজপুত্ৰ দেখিলেন, জোয়ারভাটার মাঝখানে সমস্ত দেশটা থমথম করিতেছে- কথা নাই, কেবল । মুখ চাওয়াচাওয়ি ; কেবল এক পা এগােনো, দুই পা পিছনাে ; কেবল আপনার মনের বাসনা ভূপকার করিয়া বালির ঘর গড়া এবং বালির ঘর ভাঙা । সকলেই যেন ঘরের কোণে বসিয়া আপনার অগ্নিতে আপনাকে আহুতি দিতেছে, এবং প্রতিদিন কৃশ ও বাক্যহীন হইয়া যাইতেছে। কেবল চোখ-দুটা জ্বলিতেছে, এবং অন্তনিহিত বাণীর আন্দোলনে ওষ্ঠাধর বায়ুকম্পিত পল্পবের মতো স্পাদিত হইতেছে। রাজপুত্র সকলকে ডাকিয়া বলিলেন, বাঁশি আনো, তুরীভেরী বাজাও, সকলে আনন্দধ্বনি করে, হরতনের বিবি স্বয়ম্বারা হইবেন।