পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

838 রবীন্দ্র-রচনাবলী দিবার উৎপাত একেবারেই ছিল না। আসলে, আদর করা ব্যাপারটা অভিভাবকদেরই বিনােদনের জন্য ছেলেদের পক্ষে এমন বালাই আর নাই। . আমরা ছিলাম চাকরদেরই শাসনের অধীনে। নিজেদের কর্তব্যকে সরল করিয়া লইবার জন্য তাহারা আমাদের নড়াচড়া একপ্রকার বন্ধ করিয়া দিয়ছিল। সেদিকে বন্ধন যতই কঠিন থাক, অনাদর একটা মস্ত স্বাধীনতা- সেই স্বাধীনতায় আমাদের মন মুক্ত ছিল। খাওয়ানো-পরানো সাজানো-গেজানোর দ্বার আমাদের চিত্তকে চারি দিক হইতে একেবারে ঠাসিয়া ধরা হয় নাই। আহারে আমাদের শৌখিনতার গন্ধও ছিল না। কাপড়চোপড় এতই যৎসামান্য ছিল যে এখনকার ছেলের চক্ষে তাহার তালিকা ধরিলে সম্মানহানির আশঙ্কা আছে। বয়স দশের কোঠা পার হইবার পূর্বে কোনােদি কোনো কারণেই মোজা পারি নাই। শীতের দিনে একটা সাদা জামার উপরে আর-একটা সাদা জামাই যথেষ্ট ছিল। ইহাতে কোনোদিন অদৃষ্টকে দোষ দিই নাই। কেবল, আমাদের বাড়ির দরজি নেয়ামত খলিফ অবহেলা করিয়া আমাদের জামায় পকেট-যোজনা অনাবশ্যক মনে করিলে দুঃখ বোধ করিতাম— কারণ এমন বালক কোনো অকিঞ্চনের ঘরেও জন্মগ্রহণ করে নাই, পকেটে রাখিবার মতো স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্ত্বি যাহার কিছুমাত্র নাই; বিধাতার কৃপায় শিশুর ঐশ্বৰ্যসম্বন্ধে ধনী ও নির্ধনের ঘরে বেশি কিছু তারতম্য দেখ যায় না। আমাদের চটজুতা একজোড়া থাকিত, কিন্তু পা দুটা যেখানে থাকিত সেখানে নহে প্রতিপদক্ষেপে তাহাদিগকে আগে আগে নিক্ষেপ করিয়া চলিত।াম- তাহাতে যাতায়াতের সময় পদচালন অপেক্ষা জুতাঁচালনা এত বাহুল্য পরিমাণে হইত। যে পাদুকাসৃষ্টির উদ্দেশ্য পদে পদে ব্যর্থ হইয়া যাইত। আলাপ-আলোচনা, সমস্তই আমাদের কােছ হইতে বহুদূরে ছিল। তাহার আভাস পাইতাম কিন্তু নাগাদ পাইতাম না। এখনকার কালে ছেলেরা গুরুজনদিগকে লঘু করিয়া লইয়াছে; কোথাও তাঁহাদের কোনে বাধা নাই এবং না। চাহিতেই তাহারা সমস্ত পায়। আমরা এত সহজে কিছুই পাই নাই। কত তুচ্ছ সামগ্ৰী আমাদের পক্ষে দুর্লভ ছিল ; বড়ো হইলে কোনাে এক সময়ে পাওয়া যাইবে, এই আশায় তাহাদিগকে দূ ভবিষ্যতের জিম্ময় সমর্পণ করিয়া বসিয়া ছিলাম। তাহার ফল হইয়াছিল এই যে, তখন সামান্য যাহা-কি! পাইতাম তাহার সমস্ত রসাটুকু পুরা আদায় করিয়া লইতাম, তাহার খোসা হইতে আঁঠি পর্যন্ত কিছুই ফেল যাইত না । এখনকার সম্পন্ন ঘরের ছেলেদের দেখি, তাহারা সহজেই সব জিনিস পায় বলিয়া তাহা বারো-আনকেই আধখানা কামড় দিয়া বিসর্জন করে- তাহাদের পৃথিবীর অধিকাংশই তাঁহাদের কা অপব্যয়েই নষ্ট হয় । বাহিরবাড়িতে দোতলায় দক্ষিণপূর্ব কোণের ঘরে চাকরদের মহলে আমাদের দিন কাটিত। আমাদের এক চাকর ছিল, তাহার নাম শ্যাম। শ্যামবর্ণ দোহারা বালক, মাথায় লম্বা চুল, খুলনা জেলা তাহার বাড়ি। সে আমাকে ঘরের একটি নির্দিষ্ট স্থানে বসাইয়া আমার চারি দিকে খড়ি দিয়া গণ্ডি কাটি DD SDBB B BBD BDD DDDD DDD DDBDS yB BBDB BDBBD BDBD DDB S BBB আধিভৌতিক কি আধিদৈবিক তাহা স্পষ্ট করিয়া বুঝিতাম না, কিন্তু মনে বড়ো একটা আশঙ্কা হইত। গাঁ পার হইয়া সীতার কী সর্বনাশ হইয়াছিল তাহারামায়ণে পড়িয়ছিলাম, এইজন্য গণ্ডিটাকে নিতান্ত অবিশ্বাসী মতো উড়াইয়া দিতে পারিতাম না। জানালার নীচেই একটি ঘাটবাঁধানো পুকুর ছিল। তাহার পূর্বধারের প্রাচীরের গায়ে প্রকাণ্ড একটা চী বট- দক্ষিণধারে নরিকেলশ্রেণী। গণ্ডিবন্ধনের বন্দী আমি জানলার খড়খড়ি খুলিয়া প্রায় সমস্তদিন সে BuuBB BB DD DBB BB DDD DD DB DDBDSS BDBD DB DDBS প্রতিবেশীরা একে একে স্নান করিতে আসিতেছে। তাহদের কে কখন আসিবে আমার জানা ছিল প্রত্যেকের স্নানের বিশেষত্বটুকুও আমার পরিচিত। কেহ বা দুই কানে আঙুল চাপিয়া ঝুপ ঝুপ করি দ্রুতবেগে কতকগুলা ডুব পাড়িয়া চলিয়া যাইত; কেহ বা ডুব না দিয়া গামছায় জল তুলিয়া ঘন ঘন মাথ ঢালিতে থাকিিত ; কেহ বা জলের উপরিভাগের মলিনতা এড়াইবার জন্য বারবার দুই হাতে জল কটাই