পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8እb” রবীন্দ্র-রচনাবলী ছেলেবেলার দিকে যখন তাকানো যায় তখন সব চেয়ে এই কথাটা মনে পড়ে যে, তখন জগৎটা এবং জীবনটা রহস্যে পরিপূর্ণ। সর্বত্রই যে একটি অভাবনীয় আছে এবং কখন যে তাহার দেখা পাওয়া যাইবে BB uDBDD DDSBB BBB BDDD BOBDDB S DBD BDB BD D DD DB DDBB করিত, কী আছে বলে দেখি। কোনটা থাকা যে অসম্ভব, তাহা নিশ্চয় করিয়া বলিতে পারিতাম না। বেশ মনে পড়ে, দক্ষিণের বারান্দার এক কোণে আতার বিচি পুতিয়া রোজ জল দিতাম।” - সেই বিচি হইতে যে গাছ হইতেও পারে এ-কথা মনে করিয়া ভারি বিস্ময় এবং ঔৎসুক্য জন্মিত। আতার বীজ হইতে আজও অন্ধুর বাহির হয়, কিন্তু মনের মধ্যে তাহার সঙ্গে সঙ্গে আজ আর বিস্ময় অঙ্কুরিত হইয়া উঠে না। সেটা আতার বীজের দোষ নয়, সেটা মনেরই দোষ। গুণদাদার বাগানের ক্ৰীড়াশৈল হইতে পাথর চুরি করিয়া আনিয়া আমাদের পড়বার ঘরের এক কোণে আমরা নকল পাহাড় তৈরি করিতে প্ৰবৃত্ত হইয়াছিলাম- তাহারই মাঝে মাঝে ফুলগাছের চারা পুঁতিয়া সেবার আতিশয্যে তাঁহাদের প্রতি এত উপদ্ৰব করিতাম যে, নিতান্তই গাছ বলিয়া তাহারা চুপ করিয়া থাকিত এবং মরিতে বিলম্ব করিত না। এই পাহাড়টার প্রতি আমাদের কী আনন্দ এবং কী বিস্ময় ছিল, তাহা বলিয়া শেষ করা যায় না। মনে বিশ্বাস ছিল, আমাদের এই সৃষ্টি গুরুজনের পক্ষেও নিশ্চয় আশ্চর্যের সামগ্ৰী হইবে ; সেই বিশ্বাসের যেদিন পরীক্ষা করিতে গেলাম সেইদিনই আমাদের গৃহকোণের পাহাড় তাহার গাছপালা-সমেত কোথায় অন্তর্ধন করিল। ইস্কুলঘরের কোণে যে পাহাড় সৃষ্টির উপযুক্ত ভিত্তি নহে, এমন অকস্মাৎ এমন রূঢ়ভাবে সে শিক্ষালাভ করিয়া বড়োই দুঃখ বােধ করিয়াছিলাম। আমাদের লীলার সঙ্গে বড়োদের ইচ্ছার যে এত প্রভেদ তাহা স্মরণ করিয়া, গৃহভিত্তির অপসারিত প্রস্তরভার আমাদের মনের মধ্যে আসিয়া চাপিয়া বসিল। তখনকার দিনে এই পৃথিবী বস্তুটার রস কী নিবিড় ছিল, সেই কথাই মনে পড়ে। কী মাটি, কী জল, কী গাছপালা, কী আকাশ, সমস্তই তখন কথা কহিত- মনকে কোনোমতেই উদাসীন থাকিতে দেয় নাই। পৃথিবীকে কেবলমাত্র উপরের তলতেই দেখিতেছি, তাহার ভিতরের তলাটা দেখিতে পাইতেছি না,ইহাতে কতদিন যে মনকে ধাক্কা দিয়াছে তাহা বলিতে পারি না। কী করিলে পৃথিবীর উপরকার এই মেটে রঙের মলটটাকে খুলিয়া ফেলা যাইতে পারে, তাহার কতই প্ল্যান ঠাওরাইয়াছি। মনে ভাবিতম, একটার পর আর-একটা বঁাশ যদি ঠুকিয়া ঠুকিয়া পেঁপাতা যায়, এমনি করিয়া অনেক বঁাশ পেঁপাত হইয়া গেলে পৃথিবীর খুব গভীরতম তলাটাকে হয়তো একরকম করিয়া নাগাল পাওয়া যাইতে পারে । মাঘোৎসব উপলক্ষে আমাদের উঠানের চারি ধারে সারি সারি করিয়া কাঠের থাম পুঁতিয়া তাহাতে ঝাড় টাঙানো হইত। পয়লা মাঘ হইতেই এজন্য উঠানে মাটি-কাটা আরম্ভ হইত। সর্বত্রই উৎসবের উদ্যোগের আরম্ভটা ছেলেদের কাছে অত্যন্ত ঔৎসুক্যজনক। কিন্তু আমার কাছে বিশেষভাবে এই মাটি-কাটা ব্যাপারের একটা টান ছিল। যদিচ প্রত্যেক বৎসরই মাটি কাটিতে দেখিয়ছি- দেখিয়ছি, গর্ত বড়ো হইতে হইতে একটু একটু করিয়া সমস্ত মানুষটাই গহবরের নীচে তলাইয়া গিয়াছে, অথচ তাহার মধ্যে কোনোবারই এমন কিছু দেখা দেয় নাই যাহা কোনাে রাজপুত্র বা পাত্রের পুত্রের পাতালপুর-যাত্রা সফল করিতে পারে, তবুও প্রত্যেক বারেই আমার মনে হইত, একটা রহস্যসিন্ধুকের ডালা খোলা হইতেছে। মনে হইত, যেন আর-একটু খুঁড়িলেই হয়- কিন্তু বৎসরের পর বৎসর গেল, সেই আর-একটুকু কোনোবারেই খোড়া হইল না। পর্দায় একটুখানি টান দেওয়াই হইল কিন্তু তোলা হইল না। মনে হইত, বড়োর তো ইচ্ছা করিলেই সব করাইতে পারেন, তবে তাহারা কেন এমন অগভীরের মধ্যে থামিয়া বসিয়া আছেন— আমাদের মতো শিশুর আজ্ঞা যদি খাটিত, তাহা হইলে পৃথিবীর গৃঢ়তম সংবাদটি এমন উদাসীনভাবে মাটিচাপা পড়িয়া থাকিিত না। আর, যেখানে আকাশের নীলিমা তাহারই পশ্চাতে আকাশের সমস্ত রহস্য, সে চিন্তাও মনকে ঠেলা দিত। যেদিন বোধোদয়” পড়াইবার উপলক্ষে পণ্ডিতমহাশয় বলিলেন, আকাশের ঐ নীল গোলকটি কোনো একটা বাধামাত্ৰই নহে, তখন সেটা S द्ध 'आठान्न िि छप्लान्न शीद ২ গুণেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৪৭-৮১), দেবেন্দ্রনাথের ভ্রাতা গিরীন্দ্রনাথের কনিষ্ঠ পুত্ৰ ৩ ঈশ্বরচন্দ্ৰ বিদ্যাসাগর -প্ৰণীত