পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

औदनभूठि 88) এই অধ্যবসায়কে তুচ্ছ বলিয়া একদিনও উপেক্ষা করেন নাই। তিনি উৎসাহ প্ৰকাশ করিয়া বলিতেন, “কী চমৎকার। এ-সমস্ত তুমি কোথায় পাইলে ।” আমি বলিতাম, “এমন আরো কত আছে! কত হাজার হাজার। আমি রোজ আনিয়া দিতে পারি।” তিনি বলিতেন, “সে হইলে তো বেশ হয়। ঐ পাথর দিয়া उाभांद्र ७३ श्रीशी झुोि नाखाँश्य़ा प्रा8 |” একটা পুকুর খুঁড়িবার চেষ্টা করিয়া অত্যন্ত কঠিন মাটি বলিয়া ছাড়িয়া দেওয়া হয়। সেই অসমাপ্ত গর্তের মাটি তুলিয়া দক্ষিণ ধারে পাহাড়ের অনুকরণে একটি উচ্চ ভূপ তৈরি হইয়াছিল। সেখানে প্ৰভাতে আমার পিতা চৌকি লইয়া উপাসনায় বসিতেন। তাহার সম্মুখে পূর্বদিকের প্রান্তরসীমায় সূর্যোদয় হইত। এই পাহাড়টাই পাথর দিয়া খচিত করিবার জন্য তিনি আমাকে উৎসাহ দিলেন। বোলপুর ছাড়িয়া আসিবার সময়। এই রাশীকৃত পাথরের সঞ্চয় সঙ্গে করিয়া আনিতে পারি নাই বলিয়া, মনে বড়োই দুঃখ অনুভব করিয়াছিলাম। বোঝামাত্রেরই যে বহনের দায় ও মাসুল আছে সে কথা তখন বুঝিতাম না ; এবং সঞ্চয় করিয়াছি বলিয়াই যে তাহার সঙ্গে সম্বন্ধরক্ষা করিতে পারিব এমন কোনাে দাবি নাই, সে কথা আজও বুঝিতে ঠেকে। আমার সেদিনকার একান্তমনের প্রার্থনায় বিধাতা যদি বর দিতেন যে ‘এই পাথরের বোঝা তুমি চিরদিন বহন করিবে, তাহা হইলে এ কথাটা লইয়া আজ এমন করিয়া হাসিতে পারিতাম না । খোয়াইয়ের মধ্যে একজায়গায় মাটি চুইয়া একটা গভীর গর্তের মধ্যে জল জমা হইত। এই জলসিঞ্চয় আপন বেষ্টন ছাপাইয়া বিরবির করিয়া বালির মধ্য দিয়া প্রবাহিত হইত। অতি ছোটাে ছোটাে মাছ সেই জলকুণ্ডের মুখের কাছে স্রোতের উজানে সন্তরণের স্পর্ধ প্রকাশ করিত। আমি পিতাকে গিয়া বলিলাম, “ভারি সুন্দর জলের ধারা দেখিয়া আসিয়াছি, সেখান হইতে আমাদের স্নানের ও পানের জল আনিলে বেশ হয় ।” তিনি আমার উৎসাহে যোগ দিয়া বলিলেন “তই তো, সে তো বেশি হইৰো” এবং আবিষ্কারকর্তাকে পুরস্কৃত করিবার জন্য সেইখন হইতেই জল আনাইবার ব্যবস্থা করিয়া দিলেন। । আমি যখন-তখন সেই খোয়াইয়ের উপত্যকা-অধিত্যকার মধ্যে অভূতপূর্ব কোনো একটা কিছুর সন্ধানে ঘুরিয়া বেড়াইতাম। এই ক্ষুদ্র অজ্ঞাত রাজ্যের আমি ছিলাম লিভিংস্টোন । এটা যেন একটা দূরবীনের উলটা দিকের দেশ। নদীপাহাড়গুলোও যেমন ছোটাে ছােটাে, মাঝে মাঝে ইতস্তত বুনো-জাম বুনাে-খেজুরগুলোও তেমনি বেঁটেখাটাে। আমার আবিষ্কৃত ছােটাে নদীটির মাছগুলিও তেমনি, আর আবিষ্কারকর্তটির তো কথাই নাই । পিতা বােধ করি আমার সাবধানতাবৃত্তির উন্নতিসাধনের জন্য আমার কাছে দুই-চারি আনা পয়সা রাখিয়া বলিতেন, হিসাব রাখিতে হইবে, এবং আমার প্রতি তাহার দামি সোনার ঘড়িটি দম দিবার ভার দিলেন । ইহাতে যে ক্ষতির সম্ভাবনা ছিল সে চিন্তা তিনি করিলেন না, আমাকে দায়িত্বে দীক্ষিত করাই তাহার অভিপ্রায় ছিল। সকালে যখন বেড়াইতে বাহির হইতেন, আমাকে সঙ্গে লইতেন। পথের মধ্যে ভিক্ষুক দেখিলে, ভিক্ষা দিতে আমাকে আদেশ করতেন। অবশেষে তাহার কাছে জমাখরচ মেলাইবার সময় কিছুতেই মিলিত না। একদিন তো তহবিল বাড়িয়া গেল। তিনি বলিলেন, “তোমাকেই দেখিতেছি আমার ক্যাশিয়ার রাখিতে হইবে, তোমার হাতে আমার টাকা বাড়িয়া উঠে।” তাহার ঘড়িতে যত্ন করিয়ানিয়মিত দম बापू काहे का, बाळ आणि व्हे प्रकाळ कान कािठा হইল । বড়ো বয়সে কাজের ভার পাইয়া যখন তাহার কাছে হিসাব দিতে হইল সেইদিনের কথা এইখানে আমার মনে পড়িতেছে। তখন তিনি পার্ক স্ট্রীটে থাকিতেন।” প্রতি মাসের দোসরা ও তেসরা আমাকে হিসাব । পড়িয়া শুনাইতে হইত। তিনি তখন নিজে পড়তে পারিতেন না। গত মাসের ও গত বৎসরের সঙ্গে তুলনা করিয়া সমস্ত আয়ব্যয়ের বিবরণ র্তাহার সম্মুখে ধরতে হইত। প্রথমত মোটা অঙ্কগুলা তিনি শুনিয়া লইতেন ও মনে মনে তাহার যোগবিয়ােগ করিয়া লইতেন। মনের মধ্যে যদি কোনােদিন অসংগতি অনুভব ১ ৫২ নং বাড়ি । রবীন্দ্রনাথ আদি ব্ৰাহ্ম সমাজের সেক্রেটারি ছিলেন । ২ আদি ব্ৰাহ্ম সমাজের আয়ব্যয়ের বিবরণ।