পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষ সপ্তক এর আলো-ছায়ার উপর দিয়ে ভাসতে ভাসতে চলে যাক আমার চেতনা চিন্তাহীন তর্কহীন শাস্ত্ৰহীন মৃত্যু-মহাসাগরসংগমে । sits বর্ষা নেমেছে প্ৰান্তরে অনিমন্ত্রণে ; ঘনিয়েছে। সার-বাধা তালের চুড়ায়, রোমাঞ্চ দিয়েছে বাধের কালো জলে । বর্ষা নামে হৃদয়ের দিগন্তে যখন পারি তাকে আহবান করতে । কিছুকাল ছিলেম বিদেশে । সেখানকার শ্রাবণের ভাষা আমার প্রাণের ভাষার সঙ্গে মেলে নি । তার অভিষেক হল না। আমার অন্তরপ্রাঙ্গণে । সজল মেঘ-শ্যামলের সঞ্চারণ থেকে বঞ্চিত জীবনে কিছু শীর্ণত রয়ে গেল । বনস্পতির অঙ্গের আয়তি ওই তো দেয় বাড়িয়ে বছরে বছরে ; তার কাষ্ঠফলকে চক্ৰচিহ্নে স্বাক্ষর যায় রেখে । তেমনি করে প্রতি বছরে বর্ষার আনন্দ আমার মজার মধ্যে রাসসম্পদ কিছু যোগ করে । প্ৰতিবার রঙের প্রলেপ লাগে জীবনের পটভূমিকায় নিবিড়তর করে ; বছরে বছরে শিল্পকারের অঙ্গুরি-মুদ্রার গুপ্ত সংকেত অঙ্কিত হয়। অন্তরফলকে । নিরালায় জানলার কাছে বসেছি। যখন নিষ্কর্মপ্রহরগুলো নিঃশব্দ চরণে কিছু দান রেখে গেছে আমার দেহলিতে ; জীবনের গুপ্ত ধনের ভাণ্ডারে পূজিত হয়েছে বিস্মৃত মুহুর্তের সঞ্চয় । SV