পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

as हीवनी BrB DBDuD BDBDBiuB BB BMuDDDBD DDD S মৃত্যুকালে কে মনে করিতে পারিত। ن তাহার পরে আমি যখন ডাক্তার স্কটের বাড়িতে থাকিয়া লন্ডন য়ুনিভার্সিটিতে পড়া আরম্ভ করিলাম তখন কিছুদিন সেই মহিলাটির সঙ্গে আমার দেখাসাক্ষাৎ বন্ধ ছিল। লন্ডনের বাহিরে কিছুদূত্রেষ্ঠ হার বাড়ি ছিল। সেই বাড়িতে যাইবার জন্য তিনি প্ৰায় আমাকে অনুরোধ করিয়া চিঠি লিখিতেন। আমি শোকগাথার ভয়ে কোনোমতেই রাজি হাইতাম না। অবশেষে একদিন তঁহার সানুনয় একটি টেলিগ্রাম পাইলাম। টেলিগ্রাম যখন পাইলাম তখন কলেজে যাইতেছি । এদিকে তখন কলিকাতায় ফিরিবার সময়ও আসল্প হইয়াছে। মনে করিলাম, এখান হইতে চলিয়া যাইবার পূর্বে বিধবার অনুরোধটা পালন করিয়া যাইব । কলেজ হইতে বাড়ি না গিয়া একেবারে স্টেশনে গেলাম। সেদিন বড়ো দুৰ্যোগ। খুব শীত, বরফ পড়িতেছে, কুয়াশায় আকাশ আচ্ছন্ন। যেখানে যাইতে হইবে সেই স্টেশনেই এ-লাইনের শেষ গমস্থানতাই নিশ্চিন্ত হইয়া বসিলাম । কখন গাড়ি হইতে নামিতে হইবে তাহা সন্ধান লাইবার প্রয়োজন বোধ করিলাম না | দেখিলাম, স্টেশনগুলি সব ডান দিকে আসিতেছে। তাই ডান দিকের জানােলা ঘেষিয়া বসিয়া গাড়ির দীপালোকে একটা বই পড়িতে লাগিলাম। সকাল-সকল সন্ধ্যা হইয়া অন্ধকার হইয়া আসিয়াছে’- বাহিরে কিছুই দেখা যায় না। লন্ডন হইতে যে কয়জন যাত্ৰী আসিয়াছিল তারা নিজ নিজ গম্যস্থানে একে একে নামিয়া গেল । গন্তব্য স্টেশনের পূর্ব স্টেশন ছাড়িয়া গাড়ি চলিল। এক জায়গায় একবার গাড়ি থামিল। জানালা হইতে মুখ বাড়াইয়া দেখিলাম, সমন্ত অন্ধকার। লোকজন নাই, আলো নাই, প্লাটফর্ম নাই, কিছুই নাই। ভিতরে যাহারা থাকে তাহারাই প্রকৃত তত্ত্ব জানা হইতে বঞ্চিত- রেলগাড়ি কেন যে অস্থানে অসময়ে থামিয়া বসিয়া থাকে রেলের আরোহীদের তাহা বুঝিবার উপায় নাই, অতএব পুনরায় পড়ায় মন দিলাম। কিছুক্ষণ বাদে গাড়ি পিছু হটতে লাগিল- মনে ঠিক করিলাম রেলগাড়ির চরিত্র বুঝিবার চেষ্টা করা মিথ্যা। কিন্তু যখন দেখিলাম যে স্টেশনটি ছাড়িয়া গিয়াছিলাম সেই স্টেশনে আসিয়া গাড়ি থামিল, তখন উদাসীন থাকা আমার পক্ষে কঠিন হইল। স্টেশনের লোককে জিজ্ঞাসা করিলাম, অমুক স্টেশন কখন পাওয়া যাইবে। সে কহিল, সেইখান হইতেই তো এ গাড়ি এইমাত্র আসিয়াছে। ব্যাকুল হইয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, কোথায় যাইতেছে। সে কহিল, লন্ডনে। বুঝিলাম এ গাড়ি খেয়াগড়ি, পারাপার করে। ব্যতিব্যন্ত হইয়া হঠাৎ সেইখানে নামিয়া পড়িলাম। জিজ্ঞাসা করিলাম, উত্তরের গাড়ি কখন পাওয়া যাইবে । সে কহিল, আজ রাত্রে নয়। জিজ্ঞাসা করিলাম, কাছাকাছির মধ্যে সরাই কোথাও আছে ? সে বলিল, পাঁচ মাইলের মধ্যে না । প্রাতে দশটার সময় আহার করিয়া বাহির হইয়াছি, ইতিমধ্যে জলস্পর্শ করি নাই। কিন্তু বৈরাগ্য ছাড়া যখন দ্বিতীয় কোনো পথ খোলা না থাকে তখন নিবৃত্তিই সব চেয়ে সোজা। মোটা ওভয়কোটয় বোতাম গলা পর্যন্ত আঁটিয়া স্টেশনের দীপস্তম্ভের নীচে বেকের উপর বসিয়া বই পড়িতে লাগিলাম। বইটা ছিল স্পেন্সরের lData of Ethics’, সেটি তখন সবেমাত্র প্রকাশিত হইয়াছে। গত্যন্তর যখন নাই। তখন, এইজাতীয় বই মনোযোগ দিয়া পড়বার এমন পরিপূর্ণ অবকাশ আর জুটিবে না, এই বলিয়া মনকে প্ৰবোধ দিলাম । কিছুকাল পরে পোর্টার আসিয়া কহিল, আজ একটি স্পেশাল আছে- আধঘণ্টার মধ্যে আসিয়া পীে ছিবে। শুনিয়া মনে এত স্মৃর্তির সঞ্চার হইল যে তাহার পর হইতে Data of Ethics-এ মনোযোগ করা আমার পক্ষে অসাধ্য হইয়া উঠিল। r সাতটার সময় যেখানে পীেড়িবার কথা সেখানে সেহিতে সাড়ে নয়টা হইল। গৃহকর্মী কহিলেন, “এ কী রুবি, ব্যাপারখানা কী!” আমি আমার আশ্চর্য ভ্রমণবৃত্তান্তটি খুৰা-যে সাগর্বে বসিলাম তাহা নয় । তখন সেখানকার নিমন্বিতগণ ডিনার শেষ করিয়াছেন। আমার মনে ধারণা ছিল যে, আমার অপরাধ The Data of Ethics by Herbert Spencer (June, 1879)