পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

औदनटि 8ry ਵਿ ਸਚ ব্রাইটনে থাকিতে সেখানকার সংগীতশালায় একবার একজন বিখ্যাত গায়িকার গান শুনিতে গিয়েছিলাম । তাহার নামটা ভুলিতেছি - ম্যাডাম নীলসন’ অথবা মাডাম আলবানী হইবেন । কণ্ঠস্বরের এমন আশ্চর্য শক্তি পূর্বে কখনো দেখি নাই। আমাদের দেশে বড়ো বড়ো ওস্তাদ গায়কেরাও গান গাঁহিবার প্রয়াসটাকে ঢাকিতে পারেন না- যে-সকল খাদ্যসুর বা চড়াসুর সহজে তাহদের গলায় আসে না, যেমন- তেমন করিয়া সেটাকে প্রকাশ করিতে ঠহাদের কোনো লজা নাই। কারণ, আমাদের দেশে শ্রোতাদের মধ্যে র্যাহারা রসজ্ঞ তাহারা নিজের মনের মধ্যে নিজের বোধশক্তির জোরেই গানটাকে খাড়া করিয়া তুলিয়া খুশি হইয়া থাকেন ; এই কারণে র্তাহারা সুকণ্ঠ গায়কের সুললিত গানের ভঙ্গিকে অবজ্ঞা করিয়া থাকেন ; বাহিরের কর্কশতা এবং কিয়ৎ পরিমাণে অসম্পূর্ণতাতেই আসল জিনিসটার যথার্থস্বরূপটা যেন বিনা আবরণে প্রকাশ পায়। এ যেন BB BD DDBu0 BDS DBDD DB DiD BO DDB DB BBS DB gDD একেবারেই নাই। সেখানে বহিরের আয়োজন একেবারে নিখুঁত হওয়াচাই- সেখানে অনুষ্ঠানে ত্রুটি হইলে মানুষের কাছে মুখ দেখাইবার জো থাকে না। আমরা আসরে বসিয়া আধঘণ্টা ধরিয়া তানপুরার কান মলিতে ও তবলটাকে ঠকাঠক শব্দে হাতুড়িপেটা করিতে কিছুই মনে করি না। কিন্তু য়ুরোপে এইসকল উদযোগকে । নেপথ্যে লুকাইয়া রাখা হয়- সেখানে বাহিরে যাহা কিছু প্রকাশিত হয় তাহা একেবারেই সম্পূর্ণ। এইজন্য সেখানে গায়কের কণ্ঠস্বরে কোথাও লেশমাত্র দুর্বলতা থাকিলে চলে না। আমাদের দেশে গান সাধাটাই মুখ্য, সেই গানেই আমাদের যতকিছু দুরূহতা ; যুরোপে গলা সাধাটাই মুখ্য, সেই গলার স্বরে তাহারা অসাধ্য সাধন করে। আমাদের দেশে যাহারা প্রকৃত শ্রোতা তাহারা গানটাকে শুনিলেই সন্তুষ্ট থাকে, য়ুরোপে শ্রোতারা গান গাওয়াটাকে শোনে। সেদিন ব্রাইটনে তাই দেখিলাম— সেই গায়িকীটির গান গাওয়া অদ্ভুত, আশ্চর্য। আমার মনে হইল যেন কণ্ঠস্বরে সার্কাসের ঘোড়া ইকাইতেছে। কণ্ঠনালীর মধ্যে সুরের লীলা কোথাও কিছুমাত্র বাধা পাইতেছে না। মনে যতই বিস্ময় অনুভব করি না কেন সেদিন গানটা আমার একেবারেই ভালো লাগিল না । বিশেষত, তাহার মধ্যে স্থানে স্থানে পাখির ডাকের নকল ছিল, সে আমার কাছে অত্যন্ত হাস্যজনক মনে হইয়াছিল। মোটের উপর আমার কেবলই মনে হইতে লাগিল মনুষ্যকণ্ঠের প্রকৃতিকে যেন অতিক্রম করা হইতেছে। তাহার পরে পুরুষ গায়কদের গান শুনিয়া আমার আরাম বোধ হইতে লাগিলবিশেষত ‘টেনর গলা যাহাকে বলে সেটা নিতান্ত একটা পথহারা ঝোড়ো হাওয়ার অশরীরী বিলাপের মতো নয়- তাহার মধ্যে নরকঠের রক্তমাংসের পরিচয় পাওয়া যায়। ইহার পরে গান শুনিতে শুনিতে ও শিখিতে শিখিতে য়ুরোপীয় সংগীতের রস পাইতে লাগিলাম। কিন্তু আজ পর্যন্ত আমার এই কথা মনে হয় যে, যুরোপের গান এবং আমাদের গানের মহল যেন ভিন্ন- ঠিক এক দরজা দিয়া হৃদয়ের একই মহলে যেন তাহারা প্রবেশ করে না। যুরোপের সংগীত যেন মানুষের বাস্তবজীবনের সঙ্গে বিচিত্ৰভাবে জড়িত। তাই । দেখিতে পাই, সকল রকমেরই ঘটনা ও বর্ণনা আশ্রয় করিয়া যুরোপে গানের সুর খাটানো চলে- আমাদের দিশি সুরে যদি সেরাপ করিতে যাই তবে অদ্ভুত হইয়া পড়ে, তাহাতে রস থাকে না। আমাদের গান যেন জীবনের প্রতিদিনের বেষ্টন অতিক্রম করিয়া যায়, এইজন্য তাহার মধ্যে এত করুশ এবং বৈরাগ্য- সে যেন বিশ্বপ্রকৃতি ও মানবহৃদয়ের একটি অন্তরতর ও অনির্বাচনীয় রহস্যের রূপটিকে দেখাইয়া দিবার জন্য নিযুক্ত ; সেই রহস্যলোক বড়ো নিভৃত নির্জন গভীর- সেখানে ভোগীর আরামকুঞ্জ ও ভক্তের তপোবন রচিত আছে, কিন্তু সেখানে কর্মনিরত সংসারীর জন্য কোনোপ্রকার সুব্যবস্থা নাই। যুরোপীয় সংগীতের মর্মস্থানে আমি প্রবেশ করিতে পারিয়াছি, এ কথা বলা আমাকে সাজে না। কিন্তু বাহির হইতে যতটুকু আমার অধিকার হইয়ছিল তাহাতে য়ুরোপের গান আমার হৃদয়কে একদিক দিয়া খুবই আকর্ষণ করিত। আমার মনে হইত, এ সংগীত রোমাণ্টিক। রোমান্টিক বলিলে যে ঠিকটি কী বুঝায় তাহা è Christine Nilsson (1843-1922), Swedish prima donna & Dane Albani (1852-1930), Candadian prima donna