পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কর্তার ইচ্ছায় কর্ম একটু বাদলার হাওয়া দিয়াছে কি, অমনি আমাদের গলি ছাপাইয়া সদর রাস্তা পর্যন্ত বন্যা বহিয়া যায়, পথিকের জুতাজোড়াটা ছাতার মতোই শিরোধাৰ্য হইয়া ওঠে, এবং অন্তত এই গলি-চর জীবের উভচর জীবের চেয়ে জীবনযাত্রায় যোগ্যতর নয় শিশুকাল হইতে আমাদের বারান্দা হইতে এইটে বছর বছর লক্ষ্য করিতে করিতে আমার চুল পাকিয়া গেল। ইহার মধ্যে প্রায় ষাট বছর পার হইল। তখন বাষ্প ছিল কলীয় যুগের প্রধানবাহন, এখন বিদ্যুৎ তাহাকে কটাক্ষ করিয়া হাসিতে শুরু করিয়াছে ; তখন পরমাণুতত্ত্ব পীেছিয়াছিল অদৃশ্যে, এখন তাহা অভাব্য হইয়া উঠিল; ও দিকে মরিবার কালের পিঁপড়ার মতো মানুষ আকাশে পাখা মেলিয়াছে, একদিন এই আকাশেরও ভাগবখরা লইয়া শরিকদের মধ্যে মামলা চলিবে, অ্যাটর্নি তার দিন গনিতেছেন ; চীনের মানুষ একরাত্রে তাদের সনাতন টিকি কাটিয়া সাফ করিল, এবং জাপান কালাসাগরে এমন এক বিপর্যয় লাফ মারিল যে পঞ্চাশ বছরে পাঁচশো বছর পার হইয়া গেল। কিন্তু বর্ষার জলধারা সম্বন্ধে আমাদের রাস্তার আতিথেয়তা যেমন ছিল তেমনিই আছে। যখন কনগ্রেসের ক অক্ষরেরও পত্তন হয় নাই তখনাে এই পথের পথিকবধূদের বর্ষার গান ছিল কতকাল পরে পদচারি করে দুখসাগর সীতরি পার হবে ? আর আজ যখন হােমরুলের পকা ফলটা প্রায় আমাদের গােঁফের কাছে বুলিয়া পড়িল আজও সেই একই গান- মেঘমাল্লার-রাগেন, যতিতালাভ্যাং । ছেলেবেলা হইতেই কাণ্ডটা দেখিয়া আসিতেছি সুতরাং ব্যাপারটা আমাদের কাছে অভাবনীয় নয়। যা অভাবনীয় নয় তা লইয়া কেহ ভাবনাই করে না। আমরাও ভাবনা করি নাই, সহাই করিয়াছি। কিন্তু চিঠিতে যে-কথাটা অমনিতে চোখ এড়াইয়া যায় সেটার নীচে লাইন কাটা দেখিলে যেমন বিশেষ করিয়া মনে লাগে, আমাদের রাস্তার জলাশয়তার নীচে তেমনি জোড়া লাইন কাটা দেখিয়া, শুধুমনটার মধ্যে নয়। আমাদের গাড়ির চাকাতেও ক্ষণে ক্ষণে চমক লাগিল ; বর্ষাও নামিয়াছে ট্র্যামলাইনের মেরামতও শুরু । যার আরম্ভ । আছে তার শেষও আছে ন্যায়শাস্ত্রে এই কথা বলে, কিন্তু ট্র্যামওয়ালাদের অন্যায় শাস্ত্ৰে মেরামতের আর শেষ দেখি না। তাই এবার লাইন কাটার সহযোগে যখন চিৎপুর রোডে জলস্রোতের সঙ্গে জনম্রোতের দ্বন্ধ দেখিয়া দেহ,মন আর্দ্র হইতে লাগিল তখন অনেকদিন পরে গভীরভাবে ভাবিতে লাগিলাম, সহ্য করি কেন ? সহ্য না করিলে যে চলে এবং না করিলেই যে ভালো চলে চৌরঙ্গি অঞ্চলে একবার পা বাড়াইলেই তা বোঝা যায়। একই শহর, একই মুনিসিপালিটি, কেবল তফাতটা এই--আমাদের সয় ওদের সয় না। যদি চীেরঙ্গি রাস্তার পনেরো-আনার হিসসা ট্রামেরই থাকিিত, এবং রাস্ত উৎখাত করিয়া লাইন মেরামত এমন সুমধুর গজগমনে চলিত আজ তবে ট্রাম কোম্পানির দিনে আহার রাত্রে নিদ্রা থাকিিত না। : আমাদের নিরীহ ভালোমানুষটি বলেন, “সে কী কথা! আমাদের একটু অসুবিধা হইবে বলিয়াই কি ট্র্যামের রাস্তা মেরামত হইবে না ? হইবে বৈকি! কিন্তু এমন আশ্চর্য সুস্থ মেজাজে এবং দীর্ঘ মেয়াদে নয়।” नििझैश् उIजाभानूरैि बालन, '6न कि नज्द ? যা হইতেছে তার চেয়ে আরো ভালো হইতে পারে এই ভরসা ভালোমানুষদের নাই বলিয়াই অহরহ