পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচয় \gbrዓ জীবনস্মৃতি জীবনস্মৃতি ১৩১৯ (জুলাই ১৯১২) সালে গ্রন্থকারে প্রকাশিত হয়। গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর -কর্তৃক অঙ্কিত চব্বিশটি চিত্রে শোভিত হইয়া এই প্রথম সংস্করণ বাহির হয়। তৎপূর্বে জীবনস্মৃতি প্রবাসী মাসিকপত্রে (ভাদ্র ১৩১৮ - শ্রাবণ ১৩১৯) ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত। প্রবাসীতে রচনাটি সমর্পণ করিবার পূর্বে পত্রিকার সহকারী সম্পাদক চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহিত রবীন্দ্রনাথের যে-পত্ৰালাপ হয় ১৩৪৮ কার্তিকের প্রবাসী হইতে তাহার প্রাসঙ্গিক অংশগুলি উদধূত হইল। পত্রগুলি শিলাইদহ হইতে লিখিত ||- S বাঃ তুমি তো বেশ লোক ! একেবারে আমার জীবনে হস্তক্ষেপ করতে চাও ! এতদিন আমার কাব্য নিয়ে অনেক টানাটানি গিয়েছে- এখন বুঝি, জীবন নিয়ে ছেড়াছেড়ি করতে হবে ? সম্পাদক হলে মানুষের দয়ামায়া একেবারে অন্তহিঁত হয়, তুমি তারই জাজ্বল্যমান দৃষ্টান্ত হয়ে উঠছ। যতদিন বেঁচে আছি ততদিন জীবনটা থাক... । আমার জীবনের প্রতি দাবি করে তুমি যে-যুক্তি প্রয়োগ করেছ সেটা সন্তোষজনক নয় । তুমি লিখেছ, “আপনার জীবনটা চাই।” এর পিছনে যদি কামান বন্দুক বা Haliday সাহেবের নামস্বাক্ষর থাকত তা হলে তোমার যুক্তির প্রবলতা সম্বন্ধে কারও কোনো সন্দেহ থাকত না । তদভাবে আপাতত আমার জীবন নিরাপদে আমারই অধীনে থাকবে, এইটেই সংগত । আসল কথা হচ্ছে এই যে, তুমি ইহকাল পরকাল সকল দিক সম্পূর্ণ বিবেচনা করে এই প্রস্তাবটি করেছ না। সম্পাদকীয় দুৰ্জয় লোভে সম্পূর্ণ অন্ধ হয়ে এই দুঃসাহসিকতায় প্রবৃত্ত হচ্ছে, তা আমি নিশ্চয় বুঝতে পারছি নে বলে কিছু স্থির করতে পারছি নে । তোমার বয়স অল্প, হঠকারিতাই তোমার পক্ষে স্বাভাবিক ও শোভন, অতএব এ সম্বন্ধে রামানন্দবাবুর মত কী তা না জেনে তোমাদের মাসিকপত্রের black and white-এ আমার জীবনটার এক গালে চুন ও এক গালে কালি লেপন করতে পারব না । পঞ্চাশ পেরলে লোকে প্ৰগলভ হবার অধিকার লাভ করে, কিন্তু তবুও সাদা চুল ও শ্বেত শ্মশ্রতেও অহমিকাকে একেবারে সম্পূর্ণ শুভ্র করে তুলতে পারে না । [৬ জ্যৈষ্ঠ ১৩১৮] w তোমার হাতেই জীবন সমর্পণ করা গেল। রামানন্দবাবুকে লিখেছি। কিন্তু অজিতের প্রবন্ধ** শেষ হয়ে গেলে এটা আরম্ভ হলেই ভালো হয় । লোকের তখন জীবন সম্বন্ধে ঔৎসুক্য একটু বাড়তে পারে । [১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৩১৮] ১৭ ‘রবীন্দ্রনাথ, অজিতকুমার চক্রবর্তী, প্রবাসী, আষাঢ়-শ্রাবণ ১৩১৮