পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচয় 、> এই কারণেই সম্পাদকমহাশয় যখন এই লেখাটিকে বাহির করিবার জন্য ঔৎসুক্য প্রকাশ করিলেন তখন এই কথা মনে করিয়াই সংকোচ পরিহার করিলাম যে, আমারই জীবন বলিয়া ইহার গৌরব নহে, কোনো মানবজীবনের ছবি বলিয়া সাহিত্যে ইহা স্থান দাবি করিতে পারেসে দাবি অসংগত হইলে ডিসমিস হইতে বিলম্ব হইবে না। ইহার মধ্যে একটা আশ্বাসের কথা এই যে, যেটুকু লিখিয়াছি তাহা বেশি নহে, তাহা জীবনের আরম্ভ-অংশটুকু মাত্র । , --দ্বিতীয় পাণ্ডুলিপি রবীন্দ্রনাথের ইংরেজি জন্ম-তারিখ লইয়া মতবিরোধ হওয়ায় কিশোরীমোহন সঁাতরা মহাশয় রবীন্দ্রনাথকে সে সম্বন্ধে প্রশ্ন করেন । তাহার উত্তরে কালিম্পং হইতে রবীন্দ্রনাথ যে-পত্ৰ লেখেন তাহা নিম্নে সংকলিত হইল : ‘রোসো, আগে তোমার সঙ্গে জন্ম-তারিখের হিসেব-নিকেশ করা যাক । তুমি হলে হিসেবী মানুষ । যে-বছরের ২৫শে বৈশাখে আমার জন্ম সে-বছরে ইংরেজি পাজি মেলাতে গেলে চোখে ঠেকবে ৬ই মে | কিন্তু ইংরেজের অদ্ভুত রীতি অনুসারে রাত দুপুরের পরে ওদের তারিখ বদল হয়, অতএব সেই গণনায় আমার জন্ম ৭ই - তর্কের শেষ এখানেই নয়, গ্রহনক্ষত্রের চক্রান্তে বাংলা পাজির দিন ইংরেজি পাজির সঙ্গে তাল রেখে চলবে না- ওরা প্রাগ্রসর জাত, পঁচিশে বৈশাখকে ডিঙিয়ে যাচ্ছে- কয়েক বছর ধরে হল ৭ই, তার পরে দাড়িয়েছে ৮ই । তোমরা ওই তিন দিনই যদি আমাকে অর্ঘ্য নিবেদন কর, ফিরিয়ে দেব না, কোনোটাই বে-আইনী হবে না । এ কথাটা মনে রেখো । ইতি ২৬ বৈশাখ ১৩৪৫ ৷” -প্রবাসী, জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৬, পৃ. ১৯৬ অতঃপর জীবনস্মৃতির বিভিন্ন অধ্যায় বা পরিচ্ছেদ -সংক্রান্ত উল্লেখযোগ্য নূতন তথ্য বা বর্ণনা গ্রন্থপরিচয়ে একে একে সন্নিবেশিত হইল । “শিক্ষারম্ভের পূর্ববর্তী একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনার বর্ণনা সৌদামিনী দেবীর ‘পিতৃস্মৃতি” প্রবন্ধ হইতে নিম্নে সংকলিত হইল : অপৌত্তলিক প্রণালীতে সম্পন্ন হইয়াছে। পূর্বে যে-সকল ভট্টাচার্যেরা পৌরোহিত্য প্রভৃতি কার্যে নিযুক্ত ছিল রবির জাতকর্ম উপলক্ষ্যে তাঁহাদের সহিত পিতার অনেক তর্কবিতর্ক হইয়াছিল, আমার অল্প অল্প মনে পড়ে । রবির অন্নপ্রাশনের যে পিড়ার উপরে আলপনার সঙ্গে তাহার নাম লেখা হইয়াছিল, সেই পিড়ির চারি ধারে পিতার আদেশে ছোটে ছোটাে গর্ত করানো হয় । সেই গর্তের মধ্যে সারি সারি মোমবাতি বসাইয়া তিনি আমাদের তাহা জ্বালিয়া দিতে বলিলেন । নামকরণের দিন তাহার নামের চারি দিকে বাতি জ্বলিতে লাগিল— রবির নামের উপরে সেই মহাত্মার আশীর্বাদ এইরূপেই ব্যক্ত হইয়াছিল |’ - -अदायीं, याभून S७४४, ° 8१२ অপিচ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ, ১৩৭৫, পৃ. ১৫২ “ঘর ও বাহির' পরিচ্ছেদের অনুবৃত্তিস্বরূপ একটি বাল্যস্মৃতি পথে ও পথের প্রান্তে গ্ৰন্থ হইতে উদধূত হইল : “সেদিন হঠাৎ এক সময়ে জানি নে কেন ছেলেবেলাকার একটা ছবি খুব স্পষ্ট করে আমার মনে জেগে উঠল। শীতকালের সকাল বোধ হয় সাড়ে-পাচটা । অল্প অল্প অন্ধকার আছে। চির-অভ্যাস-মত ভোরে উঠে বাইরে এসেছি। গায়ে খুব অল্প কাপড়, কেবল একখানা সুতোর জামা এবং ইজের। এইরকম খুব গরিবের মতােই আমাদের বাল্যকাল কেটেছে। ভিতরে