পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VeV রবীন্দ্র-রচনাবলী কোন রঙে ছাপা হয়ে গেছে। প্রথমত, সেই বালকবয়সে এখানকার প্রকৃতির কাছ থেকে যে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেম- এখানকার অনবরুদ্ধ আকাশ ও মাঠ, দূর হতে প্রতিভাত নীলাভ শাল ও তাল -শ্রেণীর সমুচ্চ শাখাপুঞ্জের শ্যামলা শান্তি, স্মৃতির সম্পদ রূপে চিরকাল আমার স্বভাবের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে। তার পরে এই আকাশে এই আলোকে দেখেছি। সকালে বিকালে পিতৃদেবের পূজার নিঃশব্দ নিবেদন, তার গভীর গভীর্য। তখন এখানে আর-কিছুই ছিল না, না ছিল এত গাছপালা, না ছিল মানুষের এবং কাজের এত ভিড়, কেবল দূরব্যাপী নিস্তব্ধতার মধ্যে ছিল একটি নির্মল মহিমা ।” —আশ্রমের রূপ ও বিকাশ (১৩৫৮), পৃ. ৪৮-৫৬ প্রথম হিমালয়দর্শনের নিম্নোদধূত স্মৃতিটুকু এই প্রসঙ্গে প্রণিধানযোগ্য : “তুমি বােধ হয় এই প্রথম হিমালয় যােচ্ছ। আমিও প্রায় তোমার বয়সে আমার পিতৃদেবের সঙ্গে হিমালয়ে গিয়েছিলুম। তার আগে ভূগোলে পড়েছিলুম, পৃথিবীতে হিমালয়ের চেয়ে উচু জিনিস আর কিছু নেই, তাই হিমালয় সম্বন্ধে মনে মনে কত কী যে কল্পনা করেছিলুম তার ঠিক নেই। বাড়ি থেকে বেরবার সময় মনটা একেবারে তোলপাড় করেছিল। অমৃতসর হয়ে ডাকের |াড়ি চড়ে প্রথমে পাঠানকোটে গিয়ে পড়লুম। সেখানে পাহাড়ের বর্ণপরিচয় প্রথমভাগ । তুমি কাঠগোদাম দিয়ে উপরে উঠেছ- পাঠানকোট সেইরকম কাঠগোদামের মতো । সেখানকার ছোটাে ছোটাে পাহাড়গুলো “কর খল, “জল পড়ে, ‘পাতা নড়ে - এর বেশি আর নয় । তার পরে ক্ৰমে ক্রমে যখন উপরে উঠতে লাগলুম তখন কেবল এই কথাই মনে হতে লাগল, হিমালয় যত বড়োই হােক-না, আমার কল্পনা তার চেয়ে তাকে অনেক দূর ছাড়িয়ে গিয়েছে ; মানুষের প্ৰত্যাশার কাছে হিমালয় পাহাড়ই বা লাগে কোথায় ।” শান্তিনিকেতন, ১ ভাদ্র ১৩২৫ —ভানুসিংহের পত্রাবলী, পত্রসংখ্যা ১২ মহর্ষি দেবেন্দ্ৰনাথ রবীন্দ্রনাথের সংগীত কিরূপ ভালোবাসিতেন তাহা এই পরিচ্ছেদের ৪৪৪ পৃষ্ঠায় বর্ণিত । এ বিষয়ে সৌদামিনী দেবী ‘পিতৃস্মৃতি” প্রবন্ধে বলেন : 'সংগীত বিশেষরূপ ভালো না হইলে তিনি [ দেবেন্দ্রনাথ] শুনিতে ভালোবাসিতেন না । প্ৰতিভার** পিয়ানো বাজানো এবং রবির গান শুনিতে তিনি ভালোবাসিতেন । বলিতেন। রবি আমাদের বাংলা দেশের বুলবুল ।” —প্রবাসী, ফাল্পন ১৩১৮, পৃ. ৪৭৪ অপিচ, রবীন্দ্রনাথ, মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ, পৃ. ১৫৬ “ঘরের পড়া’ পরিচ্ছেদে উল্লিখিত ‘কুমারসম্ভব এর অনুবাদপ্রসঙ্গে ইহা উল্লেখযোগ্য যে, উক্ত অনুবাদের পাঠবিশেষ ‘মদন ভস্ম’ নামে "ভারতী’র প্রথম বর্ষে (১২৮৪) মাঘ সংখ্যায় সম্পাদকের বৈঠক বিভাগে (পৃ. ৩২৯-৩১) প্রথম প্রকাশিত হইয়াছিল ; অনুবাদকের নাম ছিল ना ।' 특 * এই পরিচ্ছেদে বর্ণিত রামসর্বস্ব পণ্ডিতমহাশয়ের নিকট সংস্কৃত পড়িবার কালে নিম্নলিখি ব্যাপারটি ঘটিয়াছিল ; জীবনস্মৃতিতে ইহার উল্লেখ নাই। — ‘রবীন্দ্রনাথ তখন (১৮৭৫] বাড়িতে রামসর্বস্ব পণ্ডিতের নিকট সংস্কৃত পড়িতেন। আমি [জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ও রামসর্বস্ব দুইজনে রবির পড়ার ঘরে বসিয়াই “সরোজিনী'র প্রফ সংশোধন করিতাম । রামসর্বস্ব খুব জোরে জোরে পড়িতেন । পাশের ঘর হইতে রবি শুনিতেন, ও মাঝে মাঝে পণ্ডিতমহাশয়কে উদ্দেশ্য করিয়া কোন স্থানে কী করিলে ভালো হয় সেই মতামত প্রকাশ ২৩ হেমেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কন্যা । ‘বাল্মীকিপ্রতিভা" পরিচ্ছেদ (পৃ ৪৮৩) দ্রষ্টব্য । ২৪ পৃ. ৪৫১, পাদটীকা ১ দ্রষ্টব্য। উত্তরসূরী পত্রের রবীন্দ্র-জন্ম-শতবার্ষিকী সংখ্যায় (১৩৬৮) মুদ্রিত পূর্বতন পাঠ দ্রষ্টব্য, পৃ. ১৬১-৬৫ ৷৷