পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Vrb রবীন্দ্র-রচনাবলী রাজগণ ঐ রীতি রক্ষা করিয়া আসিতেছেন এবং আলজিরিয়ার কোনো কোনো অংশে এখনো সিংহদিগকে অন্ধ করিয়া ও পোষ মানাইয়া ভূতছাড়ানোর কাজে লাগানো হইয়া থাকে। মধ্যযুগের শেষ-অংশে মিলানে ও ইটালির অন্যান্য নগরে সিংহ এবং চিতাবাঘকে অপরাধী ব্যক্তির প্রাণসংহারের কার্যে ব্যবহার করা হইত। S SR একজন ফরাসী সৈনিক, এমব্রোজ পেরিশ, আপন জীবন-রক্ষার জন্য একটি ঘোড়ার কাছে ঋণী। তাহার দুই পা জৰ্মান কামানের দ্বারা চূৰ্ণ হইয়া গিয়াছিল। যখন রাত হইল, তখন সে তার কাছে একটা বড়ো সাদা ঘোড়ার গুরুস্বাসের শব্দ শুনিতে পাইল, সেই ঘোড়াটি ছোটাে ছোটাে ঘাস চিবাইয়া হেষাধবনি করিয়া উঠিল। নিজের জন্য স্বল্পমাত্র চেষ্টা করাও পেরির্শর পক্ষে অসাধ্য ছিল। ঘোড়াটা যেন তাহা বুঝিতে পারিল, কেননা সে হাঁটু গাডিয়া তাহার পাশে আসিয়া পড়িল এবং তাহার বক্ষের উর্ধের্ব মাথা রাখিয়া স্তব্ধ হইয়া রহিল। তাহার পরে সে উঠিল এবং সৈনিকের চারি দিকে ঘুরিয়া বেড়াইল। অবশেষে থামিল, আহত ব্যক্তির্কে আগাগোড়া ঘাণ করিল এবং তাহার পর সেই সৈনিকের চামড়ার কোমরবন্ধ দাতে করিয়া ধরিয়া সে তাহাকে মাটি হইতে তুলিল এবং ছুটিয়া চলিয়া গেল , , S চীনে ম্যাজিষ্ট্রেট কয়েকবার অভিযোগ-শুনানির পরেও হত্যাপরাধে অভিযুক্ত আসামীদলের মধ্যে প্রকৃত কোন ব্যক্তি স্বহস্তে সাংঘাতিক আঘাত করিয়াছে তাহা স্থির করিতে না পারিয়া, বন্দী দিগকে জানাইলেন যে, তিনি সত্যনির্ণয়ের জন্য অশরীর সত্তার সাহায্য লইতে যাইতেছেন। তদনুসারে তিনি অপরাধীর কৃষ্ণবেশ পরিহিত ঐ অভিযুক্ত ব্যক্তিদিগকে একটি গোলাবাড়িতে লইয়া গিয়া, দেওয়ালের তাহাদের মধ্যে আসিয়া অপরাধীর পৃষ্ঠদেশ চিহ্নিত করিয়া যাইবেন, এই কথা তাহাদিগকে বলিয়া তিনি বাহির হইয়া গেলেন এবং দরজা বন্ধ করাইয়া ঘর অন্ধকার কবিয়া দিলেন । অল্পক্ষিণ পরে যখন দবাজা খুলিয়া দিয়া ঐ লোকগুলিকে বাহিরে আসিতে আহবান করা হইল, তখন অবিলম্বেই দেখা গেল যে, তাহাদের মধ্যে একজনের পৃষ্ঠে একটি সাদা চিহ্ন রহিয়াছে। দেওয়ালে সম্প্রতি চুনকাম হইয়াছে, তাহা না জানিয়া ঐ ব্যক্তি সম্পূর্ণরূপে নিজেকে আপদ হইতে বাচাইবার ইচ্ছায় দেওয়ালের দিকে পিঠ ফিরাইয়া দাডাইয়াছিল। S 8 মূসার আইনে এবং প্রথম খৃস্টীয় যুগে সুন্দ লওয়ার বিরুদ্ধে অতি বদ্ধমূল আপত্তি ছিল। তখনকার দিনের শিল্প ও উৎপন্ন দ্রব্যাদি অতিশয় সাদাসিধা ধরনের ছিল বলিয়াই প্ৰতীয়মান হয় এবং তাহাদের নির্মাণ ব্যাপারে ধারে কারবারের প্রয়োজন ছিল না! যাহা কিছু ধারে নেওয়া তুইত, তাহা কেবল সদা ব্যবহার এবং দুঃখলাঘব করিবার জন্যই। এই কারণেই এই ধারণার উৎপত্তি হইয়াছিল যে, যে-কেহ অপরের দুঃখক্লেশে লাভবান হয় সে নিন্দনীয়। এমন-কি গ্ৰীক ও রোমীয় দার্শনিকগণও কোনো সংগত কারণ না দেখাইয়াই উচ্চকণ্ঠে সুদ গ্রহণ করার নিন্দা করিয়াছিলেন। কিন্তু গ্ৰীক ও রোমীয় আইনে সুদ-গ্রহণে সম্মতি দেওয়া হইয়াছিল, এবং মধ্যযুগ পর্যন্ত যতদিন না খৃস্টীয় সংঘ ইহার বিরুদ্ধে ধর্মযুদ্ধ ঘোষণা করেন তাবৎকােল ইহা সাধারণত গ্রাহ্যই ছিল। እb (፩ ধনুকোডি হইতে যে “ধু” প্যাসেঞ্জার ট্রেন মাদ্রাজের অভিমুখে গত কল্য রওনা হইয়াছিল। তাহা রাত্রে যথানিয়মে তিরুপুবনম পার হইয়াছিল, কিন্তু সেই ষ্টেশনের প্রায় দেড় মাইল দূরে তাহা রেলচ্যুত