পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনুবাদ-চর্চা wobrÓ হয়। প্ৰকাশ পায় যে কে একজন দুষ্ট অভিপ্ৰায়ে একখানি ত্রিশ ফুট লম্বা রেল তুলিয়া লইয়া বাধা রাস্তার বাহিরে ফেলিয়া দিয়াছিল এবং তাহার ফলে সমস্ত এঞ্জিনটি সেই ফাকের উপর দিয়া চলিয়া গিয়াছিল এবং টেন্ডর গাড়িটি তাহার অব্যবহিত পশ্চাদবর্তী তিনটি থার্ড ক্লাস গাড়ি টানিয়া লইয়া লাইনের একেবারে বাহিরে গিয়া পড়িয়াছিল; তাহাদের মধ্যে দুইটি গাড়ি উল্টাইয়া গিয়াছিল এবং তৃতীয়টি অল্প পরিমাণে এক পাশে কাত হইয়াছিল। যাহা হউক ভাগ্যক্রমে রেলওয়ে-কর্মচারী অথবা যাত্রীদের মধ্যে কাহারও কোনো অনিষ্ট ঘটে নাই। ট্রাফিক ইনস্পেক্টরের জিম্মায় মাদুরা হইতে প্ৰায় বারোটা দশ মিনিটের সময় তৎক্ষণাৎ একটি রিলিফ ট্রেন চালানো হইয়াছিল এবং প্যাসেঞ্জারদিগকে অন্য গাড়িতে তুলিয়া আজ ভোর-সকালে মাদুরায় আনা হইয়াছে। আশা করা যাইতেছে, আজ সন্ধ্যা নাগাদ অবিচ্ছিন্ন যাতায়াত পুনঃস্থাপিত হইবে। > と প্ৰায় মধ্যাহে, আমরা শ্ৰীনগর ছাড়িলাম এবং নদীর প্রধান ধারাটি বাহিয়া অবাধে ভাসিতে ভাসিতে নগরীর মধ্য দিয়া চলিলাম ; অসংখ্যা বিপণি, চিত্ৰাপিতবৎ সেতুসকল এবং তীব্রবেগে চতুদিকে ধাবমান বহুসংখ্যক ক্ষুদ্র নীেক চারি দিক হইতে মনোযোগ আকর্ষণ করিতেছিল; সন্ধ্যায় নদীতীরের সাদিপুর-নামক একটি গ্রামে আমরা নীেকা বাধিলাম; পরদিন প্রাতে প্ৰায় ছয়টায় ছাড়িয়া সম্বলে এবং মানসবল সরোবরের প্রবেশমুখে প্ৰায় বেলা নয়টার সময় পৌছিলাম। মাঝিরা ঝড়ঝঞ্চার সময়ে এই সরোবরকে বড়ো ভয় করে এবং সাধারণত তাহারা তীরের কােছ ঘুরিয়া মন্দগতিতে যাওয়াই পছন্দ করে। সরোবরের দূরতর প্রান্তে একটি উৎসের নিকট আমরা নীেকা বাধিলাম এবং সকল সরোবরের মধ্যে সুন্দরতম এই সরোবরের সর্বোৎকৃষ্ট দৃশ্যটি দেখিতে পাইলাম। ইহার গভীরতাকে যে অতলস্পর্শ বলিয়া অনুমান করা হয় তৎসম্বন্ধে অনেক গল্প প্রচলিত আছে এবং শূনা যায়। একজন লোক ইহার তলদেশে পেছতে পারে এমন একগাছি দড়ি তৈয়ারি করিতেই সারাজীবন কাটাইয়াছে, কিন্তু কোনো Sc সেখানে আমরা এক সপ্তাহ কটাইলাম, একদিন ঘোড়ায় চড়িয়া সিন্দ উপত্যকার মুখে অবস্থিত গান্ধৰ্বল দেখিতে বাহির হইলাম। সরোবরের পাশ্ব বাহিয়া উচ্চ ভূমির উপরে ঘোড়া ছুটাইবার জন্য একটি অতি সুন্দর খোলা জায়গা দেখিতে পাইলাম— এমন সুযোগ ছাড়িবার নয়। উলার সরোবর আমাদের তৎপরবতী লক্ষ্য ছিল; এইটি সকল সরোবরের চেয়ে বড়ো, সভাদেশ হইতে সকলের চেয়ে দূরে অবস্থিত। এইসঙ্গে এখানে এই কথাটিও জুভিয়া দিই যে, ময়দা সঞ্চয় করিয়া রাখিয়ছিলাম বলিয়া এবং নিজেদের রুটি নিজেরা তৈয়ারি করিয়াছিলাম বলিয় দেখা গেল আমাদের অধিক সুবিধা হইয়াছে। দুগ্ধসম্বন্ধে আমরা গ্রামগুলির উপরে নির্ভর করিয়েছিলাম। Σ έστ প্ৰস্তাষে আমরা মানসিবল সরোবর ছাড়িলাম এবং সম্বল গ্রামে ঘোড়ায় চড়িয়া যাওয়াই পছন্দ করিয়া নৌকাগুলিকে আমাদের অনুসরণ করিতে বলিলাম। বৃহৎ সম্বল সেতুটির উপর দিয়া আমরা নদী পার হইলাম এবং ঘোড়ায় চড়িয়া তীর বাহিয়া আসামের দিকে চলিলাম ও সেইখানেই আমরা নীেকায় চড়িলাম। এখানে স্রোত প্রখর এবং আমরা অনায়াসেই ভাসিতে ভাসিতে সন্ধা নাগাইদ ধারে আসিলাম। উলার সরোবর পার হওয়া সে এক ব্যাপার; কারণ কাশ্মীরী মাল্লারা অনেক প্রকারের ভয়ে ও অন্ধসংস্কারে পূর্ণ। ঝড়ের ভয়ে তাহারা মধ্যাহ্নে ও অন্ধকারের ভয়ে সন্ধার সময়ে পার হইবে না; একমাত্র ভোরে নির্বাত সময়ে যাইতে সম্মত হয়। প্ৰায় আড়াই ঘণ্টায় পার হইয়া আমরা কুইনকুশে আসিলাম, ইহা হরিমঞ্জের ছায়াতলে সরোবরতীরবতী একটি ক্ষুদ্র গ্রাম, এই হরিমঞ্জ পর্বতটি NS (? || NR ?