পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

अनूदान-55ा vobro সেইরূপ উপেক্ষাপূর্ণ অবিনীত ব্যবহার করিয়া থাকি; আমরা অনেক সময়, প্রকাশ্যভাবে তাহদের ধর্মকে পরিহাস করিয়া থাকি; তথাপি তাহদের বিশ্বাস ও অভ্যাসের প্রতি আমাদের অবজ্ঞার পরিবর্তে তাহাদের নিকট হইতে অনুরূপ আচরণ আমরা নিতান্তই কদাচিৎ পাই। 2 ܔ চীফ কমিশনার মাননীয় মিস্টার হেলি ইনফ্লয়েঞ্জা সংক্রামক সম্বন্ধে এক নিবন্ধে লিখিতেছেন যে, যদিচ এই সংক্ৰামক দিল্লীতে এখনো বহুসংখ্যক মৃত্যু ঘটাইতেছে, তথাপি এরূপ আশা করিবার কারণ আছে যে, ইহা এক্ষণে স্পষ্টতই হ্রাসের দিকে গিয়াছে। অক্টোবরের আরম্ভ হইতে মৃত্যুর হার কিছু প্ৰবল হইয়া উঠিয়াছিল! গত তিন বৎসরের গড় মৃত্যুসংখ্যা ২৪টির তুলনায় বর্তমান অক্টোবরের প্রথম বারো দিনের গড় মৃত্যুসংখ্যা ৪৮টি হইয়াছিল। ১৩ই এবং ১৪ই তারিখে হিসাবের তালিকায় প্রতিদিন ৭৭ সংখ্যা পাওয়া গিয়াছে। সংক্রামকের প্রবলতাবশত মুনিসিপাল স্বাস্থ্যবিভাগ, স্থানীয় হাসপাতাল এবং ঔষধালয়ের উপরে অত্যন্ত কঠিন চাপ পডিয়াছিল! ইন্দ্ৰপ্ৰস্থ-সেবকমণ্ডল, সেন্ট স্টীফেন কলেজ এবং আর্যসেবক-সভার স্বয়ংব্ৰতীদের নিকট হইতে স্বাস্থসচিব ম্যানিং স্ট্রট ঔষধালয়ে মূল্যবান আনুকলা লাভ করিয়াছেন ; হাজি মহম্মদ রফি একটি ঔষধালয়ের সমগ্র খরচ জোগাইয়াছেন এবং বহুসংখ্যক বেসরকারি ডাক্তার আপনি উদবুক্ত সময় তাহার কাজে আপণ করিয়াছেন। ডাক্তার আনসারি এবং অনেকগুলি হাকিম ও বৈদ্যা বহুসহস্র রোগীর ঘরে ঘরে ফিরিয়া আনুকল্যা করিয়াছেন। 8 দক্ষিণ মেসোপেটেমিয়া যখন তাহার সমৃদ্ধির মধ্যাহ্নকালে অবস্থিত, তখনকার সম্বন্ধে লিখিতে গিয়া হেরোডোটস বলিয়াছেন, “যত দেশ। আমি জানি, ইহাই তাহদের সকলের চেয়ে উত্তম ফসলের দেশ, ইহা এতই চমৎকার যে, সব চেয়ে ভালো বছরে গড়ে ইহার উৎপন্ন ফসল দুই-তিন-শ্য গুণ হইয়া থাকে ৷” প্ৰথম খলিফাদের রাজত্বের একটি তালিকায় দেখা যায় যে, প্ৰায় এক কোটি পচিশ লক্ষ একর জমি এমন প্ৰজাবহুল এবং ধনশালী ছিল যে, ইহার অধিকার লইয়া রোমের সহিত ইরানের শাসনকর্তৃগণের ঐ গ্রন্থকারই দেখাইয়া দিয়াছেন যে, নবম খৃষ্টশতাব্দীতে হারুন-অলরশীদকে ইজিপ্ট যত বেশি খাজনা দিত, উত্তর মেসোপেটেমিয়া তত বেশি খাজনাই দিত এবং সেখানকার তুলা পৃথিবীর সকল হাটে প্রাধানা লাভ করিয়াছিল। ইহা সুবিদিত যে আমাদের মসলিন শব্দ উত্তর মেসোপেটেমিয়ার মোসল নগরের নাম হইতে উদ্ভূত। QC এই ভূমি দশ শতাব্দী পূর্বে যেরূপ শস্য উৎপাদন করিয়াছে এখন সেরূপ না করিবে কেন ? মাটি এবং আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটে নাই। বৃষ্টিপাত এবং সেচনযোগ্য জল পুরাতন কালের মতোই প্রচুর আছে। তখন যে জনসমূহ দেশে বাস করিত এখনো তাহারাই বাস করে; ইহারাও তাহদের মতো শ্রমশীল এবং মিতবায়ী। প্রাচাদেশের সুন্দরতম শস্যভূমিতে গত চারি শতাব্দী কেন এমন সর্বনাশ আনয়ন করিল ? উত্তর হইতে দক্ষিণ, পর্ব হইতে পশ্চিম, সর্বত্রই এই দেশে চাষীর মহা সুযোগী; অথচ এই ভূমির অধিকাংশই অনাবাদী অবস্থায় পডিয়া রহিয়াছে। জলসংগ্রহের জনা জলাশয় এবং অনা যেসকল সেচনবাবস্থার উপকরণ এই মরুময় একরগুলিকে শসাপ্রস ক্ষেত্রে পরিণত করিতে পারিত তাহা নির্মিত হয় নাই। অত্যন্ত-আদিমকাল-প্রচলিত কৃষিপ্রণালী এখনো এখানে ব্যবহৃত হয়; বাইবেল-কথিত কালের সেই বলদ বাহিত লাঙল, সেই কাস্তে দিয়া বাডো বডো খেতের ফসল কাটা, সেই ফসল মাডাই