পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনুবাদ-চর্চা ○ケ。 আলগা করো— উহার বক্ষতল স্ফীত হইতেছে। আমার মনে হইল উহার চক্ষুদ্বয় আমার উপরে নিবদ্ধ হইয়াছিল, আবার উলটাইয়া গেল। কে স্পর্ধাপূর্বক আমার স্কন্ধ স্পর্শ করিল? এই ঘোড়া ? এ ঘোড়া নিশ্চয়ই মারসেলাসের ছিল। কোনো লোক যেন উহার উপরে না চড়ে। হা, হা, রোমীয়রাও বিলাসে ডুবিয়াছে, এই যুদ্ধাথের গায়ে সোনা দেখিতেছিা! গলীয় সৈনানায়ক। জঘন্য চোর! আমাদের রাজার স্বর্ণহার একটা পশুর দাতের তলায়! দেবতাদের প্ৰতিহিংসা অপবিত্ৰদিগকে আক্রমণ করিয়াছে। VO হানিবাল। যখন রোমে প্ৰবেশ করিব তখন প্ৰতিহিংসার কথা বলিব এবং ধর্মযাজকদের কাছে গিয়া পবিত্রতার কথা বলিব, যদি তাহারা আমাদের কথা শোনো! শলা বৈদের কাছে লোক পাঠাও। গভীরনিহিত হইলেও কুক্ষ্মী হইতে এই তীর বাহির করা যাইতে পরিবে। সাইরাকাস-বিজয়ী আমার সম্মুখে পতিত। কার্থেজে একটা জাহাজ পাঠাইয়া দাও। বোলো, হানিবাল রোমের দ্বারে: মারসেলাস, উচিত, কিন্তু পারিতেছি না। কী সম্রমজনক প্রশান্ত মুখশ্ৰী, কী মহিমান্বিত আকৃতি এবং প্ৰাংশুতা। গলীয় সৈন্যানায়ক । আমার দল উহাকে মারিয়াছে বস্তুত আমার বোধ হয়। আমিই উহাকে মবিয়ছি ; ঐ হারটি আমি দাবি করি, ইহা আমার রাজার-— গলএর গৌরবের জন্য ইহার প্রয়োজন! আর কেহ ইহা লইলে সে সহিবে না, বরঞ্চ সে তাহার শেষ মানুষটিকে পর্যন্ত খোয়াইবে- এই আমরা শপথ করিতেছি, আমরা শপথ করিতেছি। OS হানিবাল ! বন্ধু, মারসেলাস আপন গৌরবের জন্য ইহা নিজে পরিধান করার প্রয়োজন বোধ করেন নাই । তোমাদের বীরবাজার অস্ত্রগুলি যখন তিনি মন্দিরে টােঙাইয়াছিলেন তখন এই সীমানা গহনাটিকে তিনি নিজের এবং জুপিটারের অযোগ্য বলিয়া মনে কবিয়ছিলেন। যে ঢালটি তিনি ভাঙিয়াছেন, যে দেখাইয়াছেন। এইটি তাহার ঘোড়াকে পাবাইবার আগে তাহার স্ত্রী এবং তাহার শিশুসন্তানের দেখে V গলীয় নায়ক ! আমার কথা শোনো হানিবাল । হানিবাল। কী ! যখন মারসেলাস আমার সম্মুখে শয়ন, হয়তো যখন তাহার প্রাণ ফিরাইয়া আনা যাইতে পারে, হয়তো যখন আমি তাহাকে জয়গৌরবে কার্থেজে লইয়া যাইতে পারি, যখন ইটালি সিসিলি গ্ৰীস এসিয়া আমার শাসন মানিবার জন্য অপেক্ষা করিয়া! সন্তুষ্ট থাকো! আমার নিজের জিন লাগাম, তোমাকে দিব, তাহার দান ইহার দশটার সমান। VO SR গলীয় নায়ক। আমারই জনা ? হানিবাল। তোমারই জন্য। গলীয় নায়ক। এই চুনি, পান্না এবং ঐ রক্তবর্ণ হানিবাল। হা, হা। গলীয় নায়ক। হে মহামহিম হানিবাল। অপরাজেয় বীর! হে আমার সৌভাগ্যবান দেশ, এমনতরো সহায় এবং রক্ষক তুমি পাইয়াছ! আমি শপথ করিয়া অক্ষয় কৃতজ্ঞতা স্বীকার করিতেছি- হঁয়, এমন কৃতজ্ঞতা, প্রীতি, নিষ্ঠা, যাহা অসীমকালকেও অতিক্রম করে!