পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Գ8 রবীন্দ্র-রচনাবলী কোনোমতেই একত্রে উদয় হইতে পারে না। কল্পনারও শিক্ষা আবশ্যক করে। যাহাদের কল্পনা শিক্ষিত নহে, তাহারা অতিশয় অসম্ভব অলৌকিক কল্পনা করিতে ভালোবাসে; বক্র দর্পণে মুখ দেখিলে নাসিক পরিমাণাধিক বৃহৎ এবং কপাল ও চিবুক নিতান্ত হ্রস্ব দেখায়। অশিক্ষিতদের কুগঠিত কল্পনাদপণে স্বাভাবিক দ্রব্য যাহা কিছু পড়ে তাহার পরিমাণ ঠিক থাকে না; তাহার নাসা বৃহৎ ও তাহার কপাল খর্ব হইয়া পড়ে। তাহারা অসংগত পদার্থের জোড়াতাড়া দিয়া এক-একটা বিকৃতাকার পদার্থ গডিয়া তোলে। তাহারা শরীরী পদার্থের মধ্যে অশরীরী ভাব দেখিতে পায় না। তথাপি যদি বল বালকের কবি, তবে নিতান্ত বালকের মতো কথা বলা হয়। প্রাচীন কালে অনেক ভালো কবিতা রচিত হইয়া গিয়াছে বলিয়াই, বোধ হয়, এই মতের সৃষ্টি হইয়া থাকিবে যে, অশিক্ষিত ব্যক্তিরা বিশেষরূপে কবি। তুমি বলে দেখি, ওটাহিটি দ্বীপবাসী বা এস্কুইমোদের DuBB Be BBDB BB BD DS BBB BB uBuBuBueBuB BB SJ0D BhBS BuBuBC K uueuS S SASDB নাই ; যখন রামায়ণ মহাভারত রচিত হইয়াছিল তখন প্ৰাচীন কাল বটে, কিন্তু অশিক্ষিত কাল কি ? রামায়ণ মহাভারত পাঠ করিয়া কাহারও মনে কি সে সন্দেহ উপস্থিত হইতে পারে ? উনবিংশ শতাব্দীতে যে মহা মহা কবিরা ইংলন্ডে জন্মগ্রহণ করিয়াছেন, তাহদের কবিতায় কি উনবিংশ শতাব্দীর str rifts & 2 r * Copleston 3(2r : Never has there been a city of which its people might be more justly proud, whether they looked to its past or its future, than Athens in the days of AEschylus. অনেকে কল্পনা করেন যে, অশিক্ষিত অবস্থায় কবিত্বের বিশেষ স্মৃর্তি হয়; তাহার একটি কারণ এই যে, তাহদের মতে একটি বস্তুর যথার্থ স্বরূপ না জানিলে তাহাতে কল্পনার বিচরণের সহস্র পথ থাকে। সত্য একটি মাত্র, মিথ্যা অগণ্য ; অতএব মিথ্যায় কল্পনার যেরূপ উদরপূর্তি হয় সতো সেরূপ হয় না। পৃথিবীতে অখাদ্য যত আছে তাহা অপেক্ষা খাদা বস্তু অত্যন্ত পরিমিত। একটি খাদ্য যদি থাকে তো সহস্ৰ অখাদ্য আছে। অতএব এমন মত কি কোনো পণ্ডিতের মুখে শুনিয়াছ যে, অখাদা বস্তু আহার না। করিলে মনুষ্য-বংশ ধ্বংস হইবার কথা ? প্রকৃত কথা এই যে, সত্যে যত কবিতা আছে, মিথ্যায় তেমন নাই। শত সহস্র মিথ্যার দ্বারে দ্বারে কল্পনা বিচরণ করিতে পারে, কিন্তু এক মুষ্টি কবিতা সঞ্চয় করিতে পারে কি না সন্দেহ; কিন্তু একটি সত্যের কাছে যাও, তাহার দাশগুণ অধিক কবিতা পা ও কি না দেখো দেখি ; কেনই বা তাহার ব্যতিক্রম হইবে বলো ? আমরা তো প্ৰকৃতির কাছেই কবিতা শিক্ষা করিয়াছি, প্ৰকৃতি কখনো মিথ্যা কহেন না! আমরা কি কখনো কল্পনা করতে পারি যে, লোহিত্যুবৰ্ণ ঘাসে আমাদের চক্ষু জুডাইয়া যাইতেছে ? বলো দেখি, পৃথিবী নিশ্চল রহিয়াছে ও আকাশে অগণ্য তারকারাজি নিশ্চলভাবে খচিত রহিয়াছে ইহাতে অধিক কবিতু কি সমস্ত তারকা নিজের পরিবার লইয়া ভ্ৰমণ করিতেছে, তাহাতে অধিক কবিত্ব; এমনি তাহাদের তালে তালে পদক্ষেপ যে, একজন জ্যোতির্বিদ বলিয়া দিতে পারেন- কাল যে গ্ৰহ অমুক স্থানে ছিল আজ সে কোথায় আসিবে } প্রথম কথা এই যে, আমাদের কল্পনা প্ৰকৃতি অপেক্ষা কবিত্বপূর্ণ বস্তু সুজন করিতে অসমর্থ; দ্বিতীয় কথা এই যে, আমরা যে অবস্থার মধ্যে জন্মগ্রহণ করিয়াছি, তাহার অনেক মিথ্যা, কবিতায় আমাদের মিষ্ট লাগে। তাহার কারণ এই যে, যখন সেগুলি প্ৰথম লিখিত হয় তখন তাহা সত্য মনে করিয়া লিখিত হয়, ও সেই অবধি বরাবর সত্য বলিয়া চলিয়া আসিতেছে। আজ তাহা আমি মিথ্যা বলিয়া জানিয়াছি, অর্থাৎ জ্ঞান হইতে তাহাকে দূর করিয়া তাড়াইয়া দিয়াছি; কিন্তু হৃদয়ে সে এমনি শিকড় বসাইয়াছে যে, সেখান হইতে তাহাকে উৎপাটন করিবার জো নাই। কবি যে ভুত বিশ্বাস না করিয়াও ভূতের বর্ণনা করেন, তাহার তাৎপর্য কী? তাহার অর্থ এই যে, ভূত বস্তুত সত্য না হইলেও আমাদের হৃদয়ে সে সত্য। ভূত আছে বলিয়া কল্পনা করিলে যে আমাদের মনের কোনখানে আঘাত লাগে, কত কথা জাগিয়া উঠে, অন্ধকার, বিজনতা, শ্মশান, এক অলৌকিক পদার্থের নিঃশব্দ অনুসরণ, ছেলেবেলাকার কত কথা মনে উঠে- এ-সকল সত্য যদি কবি না দেখেন