পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তো কে দেখিবে ? সত্য এক হইলেও যে দশ জন কবি সেই এক সত্যের মধ্যে দশ প্রকার বিভিন্ন কবিতা দেখিতে পাইবেন না। তাহা তো নহে। এক সূর্যকিরণে পৃথিবী কত বিভিন্ন বর্ণ ধারণ করিয়াছে দেখো দেখি! নদী যে বহিতেছে, এই সত্যটুকুই কবিতা নহে। কিন্তু এই বহমানা নদী দেখিয়া আমাদের হৃদয়ে যে ভাববিশেষের জন্ম হয়, সেই সত্যই যথার্থ কবিতা। এখন বলে দেখি, এক নদী দেখিয়া সময়ভেদে কত বিভিন্ন ভাবের উদ্রেক হয়! কখনো নদীর ক% হইতে বিষন্ন গীতি শুনিতে পাই ; কখনো বা তাহার উল্লাসের কলস্বর, তাহার শত তরঙ্গের নৃত্য আমাদের মনকে মাতাইয়া তোলে। জ্যোৎস্না কখনো সন্তা-সতাই ঘুমায় না, অর্থাৎ সে দুটি চক্ষু মুদিয়া পডিয়া থাকে না ও জোৎস্নার নাসিক্যধ্বনিও কেহ কখনো শুনে নাই। কিন্তু নিস্তব্ধ রাত্রে জোৎস্না দেখিলে মনে হয় যে জ্যোৎস্না দেখিলে মনে হয় যে জোৎস্না ঘুমাইতেছে, ইহা সত্য। জ্যোৎস্নার বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব তন্ন তন্ন রূপে আবিষ্কৃত হউক, এমনও প্রমাণ হউক যে জোৎস্না একটা পদার্থই নহে, তথাপি লোকে বলিবে জোৎস্না ঘুমাইতেছে। তাহাকে কোন বৈজ্ঞানিক-চুডামণি মিথ্যাকথা বলিতে সাহস করিবে ? সংগীত ও কবিতা SDDDDS S BDDS BuuuBB BDBBBS BBB DBBB BOBBS SJeB BBBB eBBuu BSBB uuBuBBBuD BBBS না— কথার সহিত ভাবের সম্বন্ধ বিচার করি। ভােবই মুখা লক্ষ্য। কথা ভাবের আশ্রয়স্বরূপ। আমরা সংগীতকেও সেইরূপ দেখিতে চাই। সংগীত সুরের রাগ রাগিণী নহে, সংগীত ভাবের রাগ রাগিণী । আমাদের কথা এই যে, কবিতা যেমন ভাবের ভাষা সংগীতও তেমনি ভাবের ভাষা। তবে, কবিতা ও সংগীতে প্ৰভেদ কী ? আলোচনা করিয়া দেখা যাক। আমবা সচরাচর যে ভাষায় কথা কহিয়া থাকি তাহা যুক্তির ভাষা। “হা” কি “না”, ইহা লইয়াই SeLeeSDBB BBBBBS S HuBOBB DBBD S0BuDuSBBD SLBBBBBL SDBBDSH HBBDB SBB BBBBDBDSuBBBD SL D আসে নাই”, “ইহা রুপা”, “উহা সোনা” ইত্যাদি । এ-সকল কথার উপর যুক্তি চলে। “আজি আমি মামুক জায়গায় গিয়াছিলাম” ইহা আমি নানা যুক্তির দ্বারা প্রমাণ করিতে পারি। দ্রবাবিশেষ রুপা কি সোনা ইহাও নানা যুক্তির সাহায্যে আমি অনাকে বিশ্বাস করাইয়া দিতে পারি। অতএব, সচরাচর আমরা যে-সকল বিষয়ে কথোপকথন করি, তাহা বিশ্বাস করা না-করা যুক্তির ন্যূনাধিক্যের উপর নির্ভর করে। এই সকল কথোপকথনের জন্য আমাদের প্রচলিত ভাষা, অর্থাৎ গদা নিযুক্ত রহিয়াছে। কিন্তু বিশ্বাস করাইয়া দেওয়া এক, আর উদ্রেক করাইয়া দেওয়া স্বতন্ত্র ; বিশ্বাসের শিকড় মাথায়, আর উদ্রেকের শিকড হৃদয়ে। এইজনা বিশ্বাস করাইবার জন্য যে ভাষা উদ্রেক করাইবার জন্য সে ভাষা নহে। যুক্তির ভাষা গদা আমাদের বিশ্বাস করায়, আর কবিতার ভাষা পদা আমাদের উদ্রেক করায়। যে-সকল কথায় যুক্তি খাটে তাহ অনাকে বুঝানো অতিশয় সহজ ; কিন্তু যাহাতে যুক্তি খাটে না, যাহা যুক্তির আইন-কানুনের মধ্যে ধরা দেয় না, তাহাকে বুঝানো সহজ ব্যাপার নহে। “কেন”-নামক একটা চশমা-চক্ষু দুৰ্দান্ত রাজাধিরাজ যেমনি কৈফিয়ত তলব করেন, আমনি সে আসিয়া হিসাবনিকাশ করিবার জন্য হাজির হয় না। যে-সকল সত্য মহারাজ “কেন”র প্রজা নহে, তাহাদের বাসস্থান কবিতায়। আমাদের হৃদয়-গত সত্য-সকল “কেন"-কে বড়ো একটা কেয়ার করে না। যুক্তির একটা ব্যাকরণ আছে, অভিধান আছে, কিন্তু আমাদের রুচির অর্থাৎ সৌন্দৰ্য্যজ্ঞানের আজ পর্যন্ত একটা ব্যাকরণ তৈয়ারি হইল না। তাহার প্রধান কারণ, সে আমাদের হৃদয়ের মধ্যে নিৰ্ভয়ে বাস করিয়া থাকে- এবং সে দেশে “কেন”-আদালতের ওয়ারেন্ট জারি হইতে পারে না। একবার যদি তাহাকে যুক্তির সামনে খাড়া করিতে পারা যাইত, তাহা হইলেই তাহার ব্যাকরণ বাহির হইত। অতএব, যুক্তি