পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Seri SA বুজা যদি গা ঢাকা দিয়ে না বেড়ােত তা হলে কি এখানে তোমার ঠাই হত । তুমি তো নাস্তিক বললেই হয় | বিশ্ববসু। ওহে আস্তিক, অন্য রাজার দেশ হলে তোমার জিভ কেটে কুকুরকে দিয়ে খাওয়াত, তুমি বল কিনা আমাদের রাজাকে বিকট দেখতে ! বিরূপাক্ষ । দেখো বিশু, মুখ সামলে কথা কও ৷ বিশ্ববসু । মুখ যে কার সামলানো দরকার সে আর বলে কােজ নেই। প্ৰথম । চুপ চুপ, এ-সব ভালো হচ্ছে না। আমাকে সুদ্ধ বিপদে ফেলবে দেখছি। আমি এ-সব কথার মধ্যে নেই | ঠাকুরদাকে একদল লোকের টানাটানি করিয়া লইয়া প্রবেশ প্রথম । ঠাকুরদা, তোমাকে আজ এমন করে সাজালে কে । মালাটি কোন নিপুণ হাতের গাথা । ঠাকুরদা। ওরে বোকারা, সব কথাই কি খোলসা করে বলতে হবে নাকি । কিছু ঢাকা থাকবে না ? দ্বিতীয় । দরকার নেই দাদা, তোমার তো সব ফাঁস হয়েই আছে । আমাদের কবিকেশরী তোমার নামে যে গান বেঁধেছে শোন নি বুঝি ? সে যে ঘরে ঘরে রটে গেছে। ঠাকুরদা। একটা ঘরই যথেষ্ট, ঘরে ঘরে শুনে বেড়াবার কি সময় আছে। তৃতীয় । ওটা তোমার নেহাত ফাকা বড়াই। ঠাকরুনদিদি তোমাকে আঁচলে বেঁধে রাখে বটে। পাড়ার যেখানে যাই সেখানেই তুমি, ঘরে থােক কখন । ঠাকুরদা। ওরে, তোদের ঠাকরুনদিদির আঁচল লম্বা আছে। পাড়ার যেখানে যাই সে আঁচল ছাড়িয়ে যাবার জো নেই। তা, কবি কী বলছেন শুনি । তৃতীয় । তিনি বলছেন [সকলের প্রস্থান গান যেখানে রাপের প্রভা নয়নলোভা সেখানে তোমার মতন ভোলা কে- ঠাকুরদাদা ! যেখানে রসিক-সভা পরম শোভা সেখানে এমন রসের ঝোলা কে— ঠাকুরদাদা ! ঠাকুরদা। আরো চুপ চুপ ! এমন বসন্তের দিনে তোরা এ কী গান ধরলি রে ! / প্রথম । কেন ধরলুম জান না ?-- যেখানে গলাগলি কোলাকুলি তোমারি বেচাকেনা সেই হাটে, পড়ে না পদধূলি পথ ভুলি যেখানে ঝগড়া করে ঝগড়াটে । যেখানে ভোলাভুলি খোলাখুলি সেখানে তোমার মতন খোলা কে- ঠাকুরদাদা ! ঠাকুরদা। যদি তোরা তোদের সেই কবির কাছে বিধান নিতিস তা হলে শুনতে পেতিস, এই ফায়ুন মাসের দিনে ঠাকুরদা প্রভৃতি পুরোনো জিনিস মাত্রই একেবারে বর্জনীয়। আমার নামে গান বেঁধে আজ রাগ-রাগিণীর অপব্যয় করিস নে, তোরা সরস্বতীর বীণার তারে মরচে ধরিয়ে দিবি যে । মৃতীয়। ঠাকুরদা, তুমি তাে রাস্তাতেই সভা জমালে, উৎসবে যাবে কখন। চলে আমাদের ঠাকুরদা। ভাই, আমার ঐ দশা, আমি রাস্তা থেকেই চাখতে চাখতে চলি, তার পরে ভোজটা তো আছেই। আন্দাবস্তে চ মধ্যে চ ।