পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SRabo রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী সুদৰ্শনা । না না, পরিচয় কাউকে করাতে হবে না- তবু কথাটা সকলেরই মুখে শুনতে ইচ্ছে its রোহিণী | সকলেই তো বলছে- ঐ দেখো-না, তার জয়ধ্বনি এখান থেকে শোনা যাচ্ছে। সুদৰ্শনা। তবে এক কাজ কর। পদ্মপাতায় করে এই ফুলগুলি তার হাতে দিয়ে আয় গে। রোহিণী । যদি জিজ্ঞাসা করেন, কে দিলে । সুদৰ্শনা। তার কোনাে উত্তর দিতে হবে না— তিনি ঠিক বুঝতে পারবেন। তার মনে ছিল, আমি চিনতেই পারব না- ধরা পড়েছেন সেটা না জানিয়ে ছাড়ছি নে। (ফুল লইয়া রোহিণীর প্রস্থান) আমার মন আজ এমনি চঞ্চল হয়েছে- এমন তো কোনোদিন হয় না। এই পূর্ণিমার আলো মদের ফেনার মতো চারিদিকে উপচিয়ে পড়ছে, আমাকে যেন মাতাল করে তুলেছে। ওগো বসন্ত, যে-সব ভীরু লাজুক ফুল পাতার আড়ালে গভীর রাত্রে ফোটে, যেমন করে তাদের গন্ধ উড়িয়ে নিয়ে চলেছ তেমনি তুমি আমার মনকে হঠাৎ কোথায় উদাস করে দিলে, তাকে মাটিতে পা ফেলতে দিলে না !— ওরে প্রতিহারী । প্ৰতিহারী । (প্ৰবেশ করিয়া) কী মহারানী । সুদৰ্শনা। ঐ-যে আম্রবনের বীথিকার ভিতর দিয়ে উৎসব-বালকেরা আজ গান গেয়ে যাচ্ছে- “ ডাক ডাক, ওদের ডেকে নিয়ে আয়- একটু গান শুনি । (প্রতিহারীর প্রস্থান)। ভগবান চন্দ্ৰমা, আজ আমার এই চঞ্চলতার উপরে তুমি যেন কেবলই কটাক্ষপাত করছি ! তোমার স্মিত কৌতুকে সমস্ত আকাশ যেন ভরে গেছে- কোথাও আমার আর লুকোবার জায়গা নেই- আমি কেমন আপনার দিকে চেয়ে আপনি লজ্জা পাচ্ছি!! ভয় লজ্জা সুখ দুঃখ সব মিলে আমার বুকের মধ্যে আজ নৃত্য করছে- শরীরের রক্ত নাচছে, চারি দিকের জগৎ নাচছে, সমস্ত ঝাপসা ঠেকছে। বালকগণের প্রবেশ এসো এসো, তোমরা সব মূর্তিমান কিশোর বসন্ত, ধরো, তোমাদের গান ধরে । আমার সমস্ত শরীর মন গান গাইছে, অথচ আমার কণ্ঠে সুর আসছে না । তোমরা আমার হয়ে গান গেয়ে যাও । दळनक १• বিরহ মধুর হল আজি মধুরাতে । গভীর রাগিণী উঠে বাজি বেদনাতে । ভরি দিয়া পূর্ণিমানিশা অধীর আদৰ্শনতৃষা কী করুণ মরীচিকা আনে আঁখিপাতে ! সুদূরের সুগন্ধধারা বায়ুভরে পর্যানে আমার পথহারা ঘুরে মরে । কার বাণী কোন সুরে তালে মৰ্মরে পল্লবজালে, বাজে মম মঞ্জীররাজি সাথে সাথে ৷