পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩১৭

Rsbr রবীন্দ্র-রচনাবলী রাজা । হতাশ হােয়ো না রানী । সুদৰ্শনা । তোমার কাছে মিথ্যা বলব না। রাজা- আমি আর-এক জনের মালা গলায় পরেছি। রাজা। ও মালাও যে আমার, নইলে সে পাবে কোথা থেকে। সে আমার ঘর থেকে চুরি করে qs豆1 সুদৰ্শন । কিন্তু এ যে তারই হাতের দেওয়া । তবু তো ত্যাগ করতে পারলুম না। যখন চার দিকে আগুন আমার কাছে এগিয়ে এল তখন একবার মনে করলুম, এই মালাটা আগুনে ফেলে দিই। কিন্তু পারলুম না। আমার পাপিষ্ঠ মন বললে, ঐ হার গলায় নিয়ে পুড়ে মরব। আমি তোমাকে বাইরে দেখব বলে পতঙ্গের মতো এ কোন আগুনে ঝাপ দিলুম। আমিও মারি নে, আগুনও নেবে না, এ কী জ্বালা ! রাজা । তোমার সাধ তো মিটেছে, আমাকে তো আজ দেখে নিলে । সুদৰ্শনা। আমি কি তোমাকে এমন সর্বনাশের মধ্যে দেখতে চেয়েছিলুম ! কী দেখলুম জানি নে, কিন্তু বুকের মধ্যে এখনো কঁপিছে। রাজা। কেমন দেখলে রানী। সুদৰ্শনা । ভয়ানক, সে ভয়ানক । সে আমার স্মরণ করতেও ভয় হয় । কালো, কালো, তুমি কালো। আমি কেবল মুহুর্তের জন্যে চেয়েছিলুম। তোমার মুখের উপর আগুনের আভা লেগেছিলআমার মনে হল, ধূমকেতু যে আকাশে উঠেছে সেই আকাশের মতো তুমি কালো। তখনই চোখ বুজে ফেললুম, আর চাইতে পারলুম না- ঝড়ের মেঘের মতো কালো, কুলশূন্য সমুদ্রের মতো কালোতারই তুফানের উপরে সন্ধ্যার রক্তিমা। : রাজা । আমি তো তোমাকে পূর্বেই বলেছি, যে লোক আগে থাকতে প্ৰস্তুত না হয়েছে সে যখন আমাকে হঠাৎ দেখে সইতে পারে না ; আমাকে বিপদ বলে মনে করে আমার কাছ থেকে উধৰ্বশ্বাসে পালাতে চায়। এমন কতবার দেখেছি। সেইজন্যে সেই দুঃখ থেকে বাচিয়ে ক্ৰমে ক্ৰমে তোমার কাছে পরিচয় দিতে চেয়েছিলুম। д সুদৰ্শনা। কিন্তু পাপ এসে সমস্ত ভেঙে দিলে- এখন আর যে তোমার সঙ্গে তেমন করে পরিচয় হতে পারবে তা মনে করতেও পারি। নে । রাজা। হবে রানী, হবে। যে কালো দেখে আজ তোমার বুক কেঁপে গেছে সেই কালোতেই একদিন তোমার হৃদয় স্নিগ্ধ হয়ে যাবে । নইলে আমার ভালোবাসা কিসের । গান আমি রূপে তোমায় ভোলাব না, ভালোবাসায় ভোলাব । আমি হাত দিয়ে দ্বার খুলব না গো, গান দিয়ে দ্বার খোলাব । ভরাব না ভূষণভারে, সাজাব না। ফুলের হারে, সোহাগ আমার মালা করে গলায় তোমার পরাব । জানবে না কেউ কোন তুফানে Vbserta ribGK seisi | চাদের মতো অলখাটানে জোয়ারে ঢেউ তোলাব ৷ সুদৰ্শনা। হবে না, হবে না ; শুধু তােমার ভালোবাসায় কী হবে। আমার ভালোবাসা যে মুখ ফিরিয়েছে। রূপের নেশা আমাকে লেগেছে- সে নেশা আমাকে ছাড়বে না, সে যেন আমার দুই