পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\©ébr রবীন্দ্র-রচনাবলী “কাল!” বিস্মিত হয়ে কুমু খানিকক্ষণ চুপ করে বসে রইল। নিশ্বাস ফেলে বললে, “কী করে তার সঙ্গে দেখা হবে ।” মোতির মা জিজ্ঞাসা করলে, “তুমি বড়ো ঠাকুরকে কিছু বল নি ?” कूभू भाथों (नए छानाल (ग, ना । নবীন বললে, “একবার বলে দেখবে না ?” কুমুচুপ করে রইল। মধুসূদনের কাছে দাদার কথা বলা বড়ো কঠিন। দাদার প্রতি অপমান ওর । ঘরের মধ্যে উদ্যত ; তাকে একটুও নাড়া দিতে ওর অসহ্য সংকোচ । কুমুর মুখের ভাব দেখে নবীনের মন ব্যথিত হয়ে উঠল। বললে, “ভাবনা কোরো না বউদিদি, আমরা সব ঠিক করে দেব, তোমাকে কিছু বলতে কইতে হবে না।” দাদার কাছে নবীনের শিশুকাল থেকে অত্যন্ত একটা ভীরুতা আছে। বউদিদি এসে আজ সেই ভয়টা ওর মন থেকে ভাঙালে বুঝি ! কুমু চলে গেলে মেতির মা নবীনকে বললে, “কী উপায় করবে বলে দেখি ? সেদিন রাত্রে তোমার দাদা যখন আমাদের ডেকে নিয়ে এসে বউয়ের কাছে নিজেকে খাটাে করলেন তখনই বুঝেছিলুম সুবিধে হল না। তার পর থেকে তোমাকে দেখলেই তো মুখ ফিরিয়ে চলে যান ।” “দাদা বুঝেছেন যে, ঠকা হল ; ঝোকের মাথায় থলি উজাড় করে আগাম দাম দেওয়া হয়ে গেছে, এদিকে ওজনমত জিনিস মিলল না। আমরা ওঁর বোকামির সাক্ষী ছিলুম তাই আমাদের সইতে পারছেন না ।” মোতির মা বললে, “তা হােক, কিন্তু বিপ্ৰদাসবাবুর উপরে রাগটা ওঁকে যেন পাগলামির মতো পেয়ে বসেছে, দিনে দিনে বেড়েই চলল। এ কী অনাছিষ্টি বলে দিকি ?” নবীন বললে, “ও-মানুষের ভক্তির প্রকাশ ঐরকমই। এই জাতের লোকেরাই ভিতরে ভিতরে যাকে শ্রেষ্ঠ বলে জানে বাইরে তাকে মারে । কেউ কেউ বলে রামের প্রতি রাবণের অসাধারণ ভক্তি ছিল, তাই বিশ হাত দিয়ে নৈবেদ্য চালাত । আমি তোমাকে বলে দিচ্ছি। দাদার সঙ্গে বউরানীর দেখাসাক্ষাৎ সহজে হবে না ।” “তা বললে চলবে না, কিছু উপায় করতেই হবে।” “উপায় মাথায় এসেছে।” “কী বলে দেখি ।” “বলতে পারব না ।” “কেন বলে তো ?” “লজ্জা বোধ করছি।”

  • उाभांक9 ढछों ?”

“তোমাকেই লজা ।” “কারণটা শুনি ?” “দাদাকে ঠকাতে হবে। সে তোমার শুনে কাজ নেই।” “যাকে ভালোবাসি তার জন্যে ঠকাতে একটু সংকোচ করি নে ৷” “ঠকানো বিদ্যেয় আমার উপর দিয়েই হাত পাকিয়েছ বুঝি ?” “ও-বিদ্যে সহজে খাটাবার উপযুক্ত এমন মানুষ পাব কোথায় ?” “বলব ? বিধাতা তোমাদের হাতে ঠকাবার যে-সব উপায় দিয়েছেন তাতে মধু দিয়েছেন ঢেলে | সেই মধুময় ঠকানোকেই বলে মায়া।” “সেটা তো কাটানোই ভালো ।”