পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(श१ोश१ों 8ss “পরশু তিনি তো আসবেন, তার কাছে তোমার যাবার কথা উঠল না ?” “না, দাদার কোনো কথা হয় নি।” “তুমি নিজেই চাইলে না কেন, দিদি ?” “আমি ওঁর কাছে আর যা-কিছু চাই নে কেন, এটা পারব না।” “তোমার চাবার দরকার হবে না, তুমি অমনিই ওঁর কাছে চলে যেয়ো । বড়েঠাকুর কিছুই বলবেন " মোতির মা এখনো একটা কথা সম্পূর্ণ বুঝতে পারে নি যে মধুসূদনের অনুকূলতা কুমুর পক্ষে সংকট হয়ে উঠেছে ; এর বদলে মধুসূদন যা চায় তা ইচ্ছে করলেও কুমুদিতে পারে না। ওর হৃদয় হয়ে গেছে দেউলে । এইজন্যেই মধুসূদনের কাছে দান গ্ৰহণ করে ঋণ বাড়াতে এত সংকোচ। কুমুর এমনও মনে হয়েছে যে, দাদা যদি আর কিছুদিন দেরি করে আসে তো সেও ভালো। একটু অপেক্ষা করে থেকে মোতির মা বললে, “আজি মনে হল বড়ো ঠাকুরের মন যেন প্রসন্ন।” সংশয়ব্যাকুল চোখে কুমু মোতির মার মুখে তাকিয়ে বললে, “এ প্রসন্নতা কেন ঠিক বুঝতে পারি নে, তাই আমার ভয় হয় ; কী করতে হবে ভেবে পাই নে ৷” কুমুর চিবুক ধরে মোতির মা বললে, “কিছুই করতে হবে না ; এটুকু বুঝতে পারছি না, এতদিন উনি কেবল কারবার করে এসেছেন, তোমার মতো মেয়েকে কোনোদিন দেখেন নি। একটু একটু করে যতই চিনছেন ততই তোমার আদর বাড়ছে।” 臀 “বেশি দেখলে বেশি চিনবেন, এমন কিছুই আমার মধ্যে নেই ভাই। আমি নিজেই দেখতে পাচ্ছি। আমার ভিতরটা শূন্য। সেই ফাকটাই দিনে দিনে ধরা পড়বে। সেইজনেই হঠাৎ যখন দেখি উনি খুশি হয়েছেন, আমার মনে হয়। উনি বুঝি ঠেকেছেন । যেই সেটা ফাস হবে সে-ই আরো রেগে উঠবেন। সেই রাগটাই যে সত্য, তাই তাকে আমি তেমন ভয় করি নে।” “তোমার দাম তুমি কী জান দিদি ! যেদিন এদের বাড়িতে এসেছ, সেইদিনই তোমার পক্ষ থেকে যা দেওয়া হল, এরা সবাই মিলে তা শুধতে পারবে না । আমার কর্তাটি তো একেবারে মরিয়া, তোমার জন্যে সাগর লঙঘন না করতে পারলে স্থির থাকতে পারছেন না । আমি যদি তোমাকে ভালোবাসতুম। তবে এই নিয়ে ওঁর সঙ্গে আমার ঝগড়া হয়ে যেত ।” কুমু হাসলে, বললে, “কত ভাগ্যে এমন দেবর পেয়েছি।” “আর তােমার এই জাঁ-টি বুঝি ভাগ্যস্থানের রাহু না কেতু।” “তোমাদের একজনের নাম করলে আর-একজনের নাম করবার দরকার হয় না ।” মোতির মা ডান হাত দিয়ে কুমুর গলা জড়িয়ে ধরে বললে, “আমার একটা অনুরোধ আছে তোমার কাছে।” *

  • दी वाढला ।।” “আমার সঙ্গে তুমি মনের কথা” পাতাও ” “সে বেশ কথা, ভাই ! প্ৰথম থেকে মনে মনে পাতানো হয়েই গেছে।” “তা হলে আমার কাছে কিছু চেপে রেখো না। আজ তুমি অমন মুখটি করে কেন আছ কিছুই বুঝতে পারছি নে ৷” ।

খানিকক্ষণ মোতির মার মুখের দিকে চেয়ে থেকে কুমু বললে, “ঠিক কথা বলব ? নিজেকে আমার কেমন ভয় করছে।” । “সে কী কথা ! নিজেকে কিসের ভয় ?” “আমি এতদিন নিজেকে যা মনে করতুম আজ হঠাৎ দেখছি তা নই। মনের মধ্যে সমস্ত গুছিয়ে নিয়ে নিশ্চিন্ত হয়েই এসেছিলুম। দাদারা যখন দ্বিধা করেছেন, আমি জোর করেই নতুন পথে পা বাড়িয়েছি। কিন্তু যে মানুষটা ভরসা করে বেরোল তাকে আজ কোথাও দেখতে পাচ্ছি নে ৷” “তুমি ভালোবাসতে পারছি না। আচ্ছা, আমার কাছে লুকিয়ে না, সত্যি করে বলো, কাউকে কি ¢ዘSፄ