পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Գo রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী ওড়না ওড়ায় বর্ষার মেঘে দিগঙ্গনার নৃত্য ; হঠাৎ-আলোর ঝালকানি লেগে ঝলমল করে চিত্ত । নাই আমাদের কনক-চাপার কুঞ্জ, বনবীথিকায় কীর্ণ বকুলপুঞ্জ । হঠাৎ কখন সন্ধেবেলায় নামহারা ফুল গন্ধ এলায়, অরুণ মেঘেরে তুচ্ছ উদ্ধত যত শাখার শিখরে KAVGAUNVENSB || নাই আমাদের : পিঞ্চত ধনরত্ন, নাই এর ঘরের লালন ললিত যত্ন । পথপাশে পাখি পুচ্ছ নাচায়, বন্ধন তারে করি না খাচায়, ডানা-মেলে-দেওয়া মুক্তিপ্ৰিয়ের কৃজনে দুজনে তৃপ্ত । কচিৎ-কিরণে দীপ্ত । এইখানে একবার পিছন ফেরা চাই। পশ্চাতের কথাটা সেরে নিতে পারলে গল্পটার সামনে এগোবার বাধা হবে না । V) পূর্ব ভূমিকা বাংলাদেশে ইংরেজি শিক্ষার প্রথম পর্যায়ে চণ্ডীমণ্ডপের হাওয়ার সঙ্গে স্কুল-কলেজের হাওয়ার তাপের বৈষম্য ঘটাতে সমাজবিদ্রোহের যে ঝড় উঠেছিল। সেই ঝড়ের চাঞ্চল্যে ধরা দিয়েছিলেন জ্ঞানদাশংকর । তিনি সেকালের লোক, কিন্তু তার তারিখটা হঠাৎ পিছলিয়ে সরে এসেছিল অনেকখানি একালে। তিনি আগাম জন্মেছিলেন । বুদ্ধিতে বাক্যে ব্যবহারে তিনি ছিলেন তার বয়সের লোকদের মাথােক। সমূহের চেষ্ট্ৰবিলাসী পাখির মেতা লোকম্পিার কাপ বৃক পেতে বিত্রই ঔর আনন্দ এমন-সকল পিতামহের নাতিরা যখন এইরকম তারিখের বিপর্যয় সংশোধন করতে চেষ্টা করে তখন তারা এক-দীেড়ে পৌছয় পঞ্জিকার একেবারে উলটাে দিকের টামিনসে । এ ক্ষেত্রেও তাই ঘটল । জ্ঞানদাশংকরের নাতি বরদাশংকর বাপের মৃত্যুর পর যুগ-হিসাবে বাপ-পিতামহের প্রায় আদিম পূর্বপুরুষ হয়ে উঠলেন। মনসাকেও হাতজোড় করেন, শীতলাকেও মা বলে ঠাণ্ডা করতে চান। মাদুলি ধুয়ে জল খাওয়া শুরু হল ; সহস্ৰ দুৰ্গানাম লিখতে লিখতে দিনের পূর্বাহু যায় কেটে ; তার এলেকায় যে বৈশ্যদল নিজেদের দ্বিজত্ব প্রমাণ করতে মাথা ঝাকা দিয়ে উঠেছিল। অন্তরে বাহিরে সকল দিক থেকেই তাদের বিচলিত করা হল, হিন্দুত্বরক্ষার উপায়গুলিকে বিজ্ঞানের স্পর্শদোষ থেকে বাচাবার