পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ԳՀՆ রবীন্দ্র-রচনাবলী কেবল খাদকভাবে । দ্বিতীয়ত, এই গোহত্যিাসম্বন্ধীয় দাঙ্গাহাঙ্গামার প্রতি গবর্মেন্টের তীব্র দৃষ্টি রহিয়াছে, এবং ংলো-ইন্ডিয়ানগণও বিশেষ ত্ৰস্ত হইয়া উঠিয়াছেন- এমন-কি, বিলাতের স্পেক্টেটর পত্রও এইরূপ উপদ্রবগুলিকে সতেজে দমন, সবলে দালন করিয়া ফেলিতে পরামর্শ দিয়াছেন। এরূপ স্থলে অন্যান্য সাধারণ মকদ্দমার অপেক্ষা এরূপ মকদ্দমা ইংরাজ বিচারক বিশেষ সতর্কভাবেই বিচার করিয়া থাকেন । এমন অবস্থাতেও যদি গবর্মেন্ট ফকস-সাহেবের বিচারে সন্তুষ্ট না হন তবে তো তাহার হাতে সামান্য শসা-চুরির মকদ্দমাও রাখা উচিত হয় না । এই-সকল লক্ষণ দেখিয়াই মনে হইতেছে, গবর্মেন্ট কিছু বেশি ভীত হইয়া পড়িয়াছেন । র্তাহারা ভয় পাইলেই আমাদের সর্বনাশ । কিন্তু ভয় করিতে আরম্ভ করিলে কোথাও নিশ্চিন্ত হইবার জো নাই । ভারতবর্ষকে শিক্ষা দিয়াও ভয় হয়, আবার মুখ করিয়া রাখিলেও ভয় আছে। ইংরাজি শিখিয়া আমরা আত্মদুঃখ নিবেদন করিতে শিখি, এবং সাধারণ অভাব-মোচনের উপলক্ষে সাধারণের মধ্যে ঐক্যবন্ধনের সূত্রপাত হয়। আবার যেখানে ইংরাজি শিক্ষা নাই সেখানে যে কোন অন্ধসংস্কারের কৃষ্ণবর্ণ বারুদে কোনখান হইতে কণামাত্র অগ্নিস্ফুলিঙ্গ লাগিয়া অকস্মাৎ একটা প্ৰলয় দিগদাহ উপস্থিত করে তাহা বলা যায় না । কিন্তু গবমেন্টের ভয়টা দেখিতে ভালো নহে। কড়া শাসন অর্থাৎ যখন বিচার-প্ৰণালীর মধ্যে ন্যায় অপেক্ষা বলের প্রয়োগ বেশি দেখা যায়, এবং যখন চতুর্দিক হইতে খোঁচাখুঁচি লাগাইয়া তাড়াতাড়ি দেশের লোককে ভয় পাওয়াইয়া দিবার চেষ্টা দেখিতে পাই, তখনই বুঝিতে পারি। গবর্মেন্টের হৃৎস্পন্দন কিছু অযথা বাড়িয়া উঠিয়াছে। সেরূপ উগ্রতায় গবর্মেন্টের বলিষ্ঠতা প্রকাশ পায় না, কেবল ভয় প্ৰকাশ হয় মাত্ৰ । অন্ধ-আক্রোশ-বশত ভ্ৰাতৃবিরোধের সূত্রপাত হউক, গবর্মেন্টের সর্বদা মনে রাখা উচিত, শক্তস্য ভূষণং ক্ষমা এবং অবিচলিত অপক্ষপাত এবং প্রশান্ত ন্যায়পরতা । কিন্তু গবর্মেন্ট বলিতে যে কাহাকে বুঝায় আমরা কিছুই বুঝিতে পারি না। এই হিন্দুমুসলমান বিপ্লবে বড়োকর্তা ল্যান্সডাউন, মেজোকর্তা ক্রসথেয়েট, এবং জেলার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছোটােকর্তাগুলি সকলেই এক পলিসি অবলম্বন করিয়া একভাবে কাজ করিতেছেন কি না জানি না। সার ওয়েডারবার্ন লিখিয়াছেন, এই সমস্ত উপদ্রবে। গবর্মেন্টের কিছু হাত আছে ; ল্যান্সডাউন বলেন, এমন কথা যে বলে সে অত্যন্ত দুষ্ট । আমরা ইহার একটা সামঞ্জস্য করিয়া লই । A আমরা বলি, গবর্মেন্টের পলিসি যেমনই থাক, ইংরাজ কর্মচারীগণ গবর্মেন্টের যন্ত্র নহে, তাহারা মানুষ । আপন অধিকারের মধ্যে তাঁহাদের বিরাগ অনুরাগ মতামত খাটাইবার যথেষ্ট অবসর আছে। কনগ্রেস এবং শিক্ষিত বাবুদের আচরণে তাঁহাদের যদি এমন ধারণা হয় যে, হিন্দুমুসলমানদিগকে পৃথক করিয়া রাখা আবশ্যক, তবে তাহারা ছােটােবড়ো এত উপায় অবলম্বন করিয়া বিদ্বেষবীজ বপন করিতে পারে যে, গবমেন্টের পরম উদার সাদভিসন্ধি তাহার নিকট হার মানে । গবর্মেন্টের আইন কাহাকেও ঘূণা করে না, ভয় করে না, পক্ষপাত করে না ; কিন্তু ইংরাজ করে। পায়ােনিয়র ইংলিশম্যান প্রভৃতি ইংরাজি কাগজগুলা যখন কনগ্রেসের প্রতি চক্ষু রক্তবর্ণ করে এবং বাবুদের প্রতি সরোষ অবজ্ঞা-বর্ষণের চেষ্টা করে তখন ইংরাজ জজ-ম্যাজিষ্ট্রেটগণ যে অবিচলিতচিত্তে । থাকে তাহা নহে। এই সমস্ত বিদ্বেষভাব সর্বসাধারণ ইংরাজের মধ্যে প্রতিদিন ব্যাপ্ত ও বদ্ধমূল হইয়া যাইতেছে, এবং যাহার হাতে কোনো ক্ষমতা আছে সে যে নানা উপায়ে কাৰ্যত সেই ভাবকে প্রকাশ কুৰুপেটা গােপন পলিসি অবলম্বন কৰিয়া ক্ৰগ্রেস প্রভৃতিকে ব্যর্থকরিবার চেষ্টা করে তাহাতে मgनाश् काश् ।