পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী গভীর নিশীথে কত বিজন কল্পনা, গোপনে চাদিনী রাতে দুটি অশ্রুকণা ! তারি মাঝে আমারে কি রাখিবে যতনে হৃদয়ের সুমধুর স্বপন-শয়নে ! কল্পনার সাথি যখন কুসুমবনে ফির একাকিনী, দক্ষিণবাতাসে আর তটিনীর গানে শোনা যাবে আপনার প্রাণের কাহিনী— যখন শিউলি ফুলে কোলখানি ভরি দুটি পা ছড়ায়ে দিয়ে আনতবয়ানে ফুলের মতন দুটি অঙ্গুলিতে ধরি মালা গাথ ভোরবেলা গুন গুন তানে— মধ্যাহে, একেলা যাবে বাতায়নে ব’সে নয়নে মিলাতে চায় সুদূর আকাশ, কখন আঁচলখনি পড়ে যায় খসে, কখন হাদয় হতে উঠে। দীর্ঘশ্বাস, কখন অশ্রশ্নটি কাপে নয়নের পাতে— তখন আমি কি, সখী, থাকি তব সাথে ! হাসি সুদূর প্রবাসে আজি কেন রে কী জানি কেবলি পড়িছে মনে তার হাসিখানি । কখন নামিয়া গেল সন্ধ্যার তপন, কখন থামিয়া গেল সাগরের বাণী । কোথায় ধরার ধারে বিরহবিজন একটি মাধবীলতা আপন ছায়াতে দুটি অধরের রাঙা কিশলয়-পাতে হাসিটি রেখেছে ঢেকে কুঁড়ির মতন ! সারা রাত নয়নের সলিল সিঞ্চিয়া রেখেছে কাহার তরে যতনে সঞ্চিয়া ! সে হাসিটি কে আসিয়া করিবে চয়ন, লুব্ধ এই জগতের সবারে বঞ্চিয়া ! তখন দুখানি হাসি মরিয়া বাচিয়া তুলিবে অমর করি একটি চুম্বন ।