পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কড়ি ও কোমল দেখো ওই দূর হতে আসিছে ঝটিকা, স্বপ্নরাজ্য ভেসে যাবে খর অশ্রমজলে । দহিবে আঁধার নিদ্রা বিমল অনলে । সুখদুঃখ লয়ে সবে গাথিছে আলয়— হাসি-কান্না ভাগ করি ধরি হাতে হাতে সংসারসংশয়ারাত্রি রহিব নিৰ্ভয় | সুখরৌদ্রমরীচিকা নহে বাসস্থান, ब्ल: য় বলি ভয়ে কাপে প্ৰাণ । গান-রচনা এ শুধু অলস মায়া, এ শুধু মেঘের খেলা, এ শুধু মনের সাধ বাতাসেতে বিসর্জন— এ শুধু আপন মনে মালা গেথে ছিড়ে ফেলা নিমেষের হাসিকান্না গান গেয়ে সমাপন । আপনার ছায়া লয়ে খেলা করে ফুলগুলি, এও সেই ছায়া-খেলা বসন্তের সমীরণে | কুহকের দেশে যেন সাধ করে পথ ভুলি হেথা হােথা ঘুরি ফিরি সারাদিন আনমনে । কারে যেন দেবী ব’লে কোথা যেন ফুল তুলি, সন্ধ্যায় মলিন ফুল উড়ে যায় বনে বনে । এ খেলা খেলিবে হায় খেলার সাথি কে আছে ? ভুলে ভুলে গান গাই— কে শোনে, কে নাই শোনে— যদি কিছু মনে পড়ে, যদি কেহ আসে কাছে ! সন্ধ্যার বিদায় সন্ধ্যা যায়, সন্ধ্যা ফিরে চায়, শিথিল কবরী পড়ে খুলে— যেতে যেতে কনক-আঁচল বেধে যায় বকুলকাননে, চরণের পরাশরাঙিমা রেখে যায় যমুনার কৃলে— নীরবে-বিদায়-চাওয়া চোখে, গ্ৰন্থি-বাধা রক্তিম দুকুলে । আঁধারের স্নানবন্ধু যায় বিষাদের বাসরশয়নে । সন্ধ্যাতারা পিছনে দাড়ায়ে চেয়ে থাকে আকুল নয়নে । যমুনা কঁদিতে চাহে বুঝি, কেন রে কঁদে না কণ্ঠ তুলে— বিস্ফারিত হৃদয় বহিয়া চলে যায় আপনার মনে । মাঝে মাঝে ঝাউবন হতে গভীর নিশ্বাস ফেলে ধরা । ÑO Ĝo