পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ܓ ܠ ܮ রবীন্দ্র-রচনাবলী বারেক একত্রে বসে ফেলি। অশ্রািজল, দূর করি হীন গর্ব, শূন্য অভিমান তার পরে একসাথে এসে কাজ করি কেবলি বিলাপগান দূরে পরিহর । বিজনে আমারে ডেকো না। আজি, এ নহে সময়— একাকী রয়েছি হেথা গভীর বিজন, রুধিয়া রেখেছি। আমি অশান্ত হৃদয়, দুরন্ত হৃদয় মোর করিব শাসন । মানবের মাঝে গেলে এ যে ছাড়া পায়, সহস্রের কোলাহলে হয়, পথহারা, লুব্ধ মুষ্টি যাহা পায় আঁকড়িতে চায়, ভৎসনা করিব তারে বিজনে বিরলে, একটুকু ঘুমাক সে কঁাদিয়া কঁাদিয়া, শ্যামল বিপুল কোলে আকাশ-অঞ্চলে প্রকৃতি জননী তারে রাখুন বঁাধিয়া । শান্ত মেহকোলে বসে শিখুক সে স্নেহ, আমারে আজিকে তোরা ডাকিস নে কেহ । সিন্ধুতীরে হেথা নাই ক্ষুদ্র কথা, তুচ্ছ কানাকানি, ধবনিত হতেছে চিরদিবসের বাণী । চিরদিবসের রবি ওঠে, অস্ত যায়, চিরদিবসের কবি গাহিছে হেথায় । ধরণীর চারিদিকে সীমাশূন্য গানে সিন্ধু শত তটিনীরে করিছে আহ্বান— হেথায় দেখিলে চেয়ে আপনার পানে দুই চোখে জল আসে, কেঁদে ওঠে প্ৰাণ । শত যুগ হেথা বসে মুখপানে চায়, বিশাল আকাশে পাই হৃদয়ের সাড়া । তীব্র বক্র ক্ষুদ্র হাসি পায় যদি ছাড়া রবির কিরণে এসে মরে সে লজায় । সবারে আনিতে বুকে বুক বেড়ে যায়, সবারে করিতে ক্ষমা আপনারে ছাড়া ।