পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Հ8Եr রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী মনে হয় আজ যদি পাইতাম কাছে, বলিতাম হৃদয়ের যত কথা আছে । বচনে পড়িত নীল জলদের ছায়, ধবনিতে ধবনিতে আদ্ৰ উতরোল বায় । নদীতীরে মেঘে বনে হত একাকার । এলোকেশ মুখে তার পড়িত নামিয়া, নয়নে সজল বাম্প রহিত থামিয়া | জীবনমরণময় সুগভীর কথা, অরণ্যমর্মরসম মর্মব্যাকুলতা, ইহপরকালব্যাপী সুমহান প্ৰাণ, উচ্ছসিত উচ্চ আশা, মহত্ত্বের গান— বৃহৎ বিষাদছায়া, বিরহ গভীর, প্ৰচ্ছন্ন হৃদয়রুদ্ধ আকাঙক্ষা অধীর, বর্ণন-অতীত যত অস্ফুট বচন— নির্জন ফেলিত ছেয়ে মেঘের মতন । যথা দিবা-অবসানে নিশীথনিলয়ে বিশ্ব দেখা দেয় তার গ্ৰহতারা লয়ে, দেখিত সে অন্তহীন জগতবিস্তার । নিম্নে শুধু কোলাহল খেলাধুলা হাস, উপরে নির্লিপ্ত শান্ত অন্তর-আকাশ । আলোকেতে দেখো শুধু ক্ষণিকের খেলা, অন্ধকারে আছি আমি অসীম একেলা । কতটুকু ক্ষুদ্র মোরে দেখে গেছে চলে, কত ক্ষুদ্র সে বিদায় তুচ্ছ কথা বলে ! কল্পনার সত্যরাজ্য দেখাই নি তারে, বসাই নি এ নির্জন আত্মার আঁধারে । এ নিভৃতে, এ নিস্তব্ধে, এ মহত্ত্ব-মাঝে দুটি চিত্ত চিরনিশি যদি রে বিরাজে— প্ৰেমপূৰ্ণ চারি চক্ষু জাগে চারি তারা !