পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানসী RGłGł ক্ৰমে মিলাইয়া গেল সময়ের সীমা, অনন্তে মুহুর্তে কিছু ভেদ নাহি আর । ব্যাপ্তিহারা শূন্যসিন্ধু শুধু যেন এক বিন্দু গাঢ়তম অন্তিম কালিমাআমারে গ্রাসিল সেই বিন্দুপারাবার। অন্ধকারহীন হয়ে গেল অন্ধকার । “আমি” বলে কেহ নাই, তবু যেন আছে। অচৈতন্যতলে অন্ধ চৈতন্য হইল বন্ধ, রহিল প্ৰতীক্ষা করি করামৃত হয়ে প্ৰাণ যেন চিরকাল বঁাচে । নয়ন মেলিনু, সেই বহিছে জাহ্নবী— পশ্চিমে গৃহের মুখে চলেছে তরণী । তীরে কুটিরের তলে স্তিমিত প্ৰদীপ জ্বলে, শূন্যে চাঁদ সুধামুখচ্ছবি । সুপ্ত জীব কোলে লয়ে জাগ্ৰত ধারণী । ১৭। বৈশাখ ১৮৮৮ কুহুধ্বনি প্রখর মধ্যাহ্নতাপে প্ৰান্তর ব্যাপিয়া কঁপে বাষ্পপশিখা অনলশ্বসনাঅন্বেষিয়া দশ দিশা যেন ধরণীর তৃষা মেলিয়াছে লেলিহা রসনা । ছায়া মেলি সারি সারি স্তব্ধ আছে তিন-চারি সিসুগাছ পাণ্ডুকিশলয়, নিম্ববৃক্ষ ঘনশাখা গুচ্ছ গুচ্ছ পুষ্পে ঢাকা, আতসবন তাম্রফলময় । গোলক-চাপার ফুলে গন্ধের হিল্লোল তুলে, বন হতে আসে বাতায়নেঝাউগাছ ছায়াহীন নিশ্বসিছে উদাসীন শূন্যে চাহি আপনার মনে । দূরান্ত প্ৰান্তর শুধু তপনে করিছে ধু-ধু, বাকা পথ শুষ্ক তপ্তকায়াতারি প্রান্তে উপবন, মৃদুমন্দ সমীরণ, ফুলগন্ধ, শ্যামস্নিগ্ধ ছায়া । ছায়ায় কুটিরখানা দুধারে বিছায়ে ডানা